সোনাজয়ী বঙ্গ-সন্তানের মেরেকেটে আয় ৫০০ টাকা, চলে গিয়েছেন ভ‍্যানচালক বাবা

সংসার চলত কোনওরকমে। বাবার মৃত্যু হয়েছে। ভ্যান টানতেন তিনি। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সঙ্গে জরির কাজ করতো দুই ছেলে। মেরে কেটে আয় হতো ৫০০ টাকা।…

cwg 2022 gold medalist achintya shiuli life story

সংসার চলত কোনওরকমে। বাবার মৃত্যু হয়েছে। ভ্যান টানতেন তিনি। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সঙ্গে জরির কাজ করতো দুই ছেলে। মেরে কেটে আয় হতো ৫০০ টাকা। তাই দিয়েই চলতো সংসার। তখন কে জানতেন শিউলি (Achintya Shiuli) পরিবারের কথা? ঘিঞ্জি হাওড়ায় এরকম কতো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার আছে। তাদের খবর কেউ রাখে না।

আরও পড়ুন: কমনওয়েলথে পদক জয়ী সংকেত পান বিক্রি করতেন রাস্তার ধারে 

৭ আগস্ট, সোমবারের আগে অচিন্ত্য শিউলির নাম ক’জন শুনেছিলেন? এখন তিনি দেশ নায়ক। হাওড়ার নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেটা জিতেছে সোনার পদক। ভারোত্তোলনে অন্যান্য দেশের প্রতিদ্বন্দ্বীদের পিছনে ফেলে পয়লা নম্বরে অচিন্ত্য। তাঁকে শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়েছেন আপামর ভারতবাসী। অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী থেকে থেকে শুরু করে বহু গুণীজন।

achintyar_house
অচিন্ত্যের বাড়ি

আরও পড়ুন: দাবাপ্রেমীদের জন্য বিশেষ টুর্নামেন্টের আয়োজন শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের

কাউকে কিছু প্রমাণ করতে চায়নি অচিন্ত্য। ছুটে গিয়েছিল শুধু নিজের ভালবাসাকে লক্ষ্য করে। তাই পদক জয়ের পর অচিন্ত্য বলল, “এই লড়াইটা ছিল আমার নিজের সঙ্গে। সোনা জিততে আমি আসিনি। এসেছিলাম নিজের রেকর্ডটা টপকে যেতে। চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সেটা আর করতে পারলাম না। তাই খানিকটা খারাপই লাগছে।”

আরও পড়ুন: East Bengal : রেকর্ড অর্থে ফুটবলার সই করানোর পথে ইস্টবেঙ্গল

ওয়েটলিফটিং-এর প্রতি কীভাবে ভালবাসা জিন্মেছিল দুই ভাইয়ের? স্থানীয় এক জিমে গা ঘামাতে যেত অচিন্ত্যর দাদা। তাকে দেখে অচিন্ত্য ভিতরে ভিতরে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। সেও শুরু করেছিল জিমে যাওয়া, গা ঘামানো। দু’জনেই ওয়েটলিফটিং-এ দক্ষ হতে শুরু করেছিল। শেষে ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আত্মত্যাগ করেছিল দাদা। হাওড়ার সোনার ছেলের কথায়, “বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে দাদাই আমার জন্য সবকিছু করেছে। আর তাই এই পুরস্কার আমি আমার দাদা এবং কোচকে উৎসর্গ করতে চাই। দাদা নিজে ওয়েট লিফটিং করত। কিন্তু আমার দিকে তাকিয়ে ও ছেড়ে দিয়েছে।”