দক্ষিণ মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি শহরের অহল্যাদেবী হোলকার রোডের কোনও একটি দুপুর। সপ্তাহের শেষে দুপুরের এই সময়টা সাধারণ লোক চলাচল কম থাকে। কিন্তু এই শনিবার ছবিটা অন্যরম। নিশ্চিত সংকেত পান তাপ্রি (ছোট দোকান)-কে কেন্দ্র করে ছোটোখাটো জমায়েত। ১৪-ইঞ্চি টিভি স্ক্রিনের চারপাশে ভিড়। নিয়মিত গ্রাহকদের তুলনায়, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং কয়েকজন মিডিয়া কর্মীর আনাগোনা। টিভিতে তখন দেখাচ্ছে, পাড়ার ছেলেতে সঙ্কেত, মানে যার পানের দোকান, সে কমনওয়েলথ গেমসে (Commonwealth games) ভারতের হয়ে প্রথম পদক জয় করেছে। একটি রৌপ্য পদক জিতেছে সে।
পুরুষদের ৫৫ কেজি ইভেন্টে রুপোর পদক জিতেছে সঙ্কেত সারগার। চোট বাধ না সাধলে হয়তো সোনার আরও কাছে চলে যেতে পারতো সে। যাইহোক, পাড়ার ছেলে বার্মিংহ্যামে রুপো জিতেছে, এটাই-বা কি কম কথা? তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এক ক্রীড়া সংবাদ মাধ্যমে সঙ্কেত বলেছিলেন, “২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল সকাল ৬টা- খুব ভোরের দিকে। সেই সময় গুরুরাজা ভাই (পূজারি গুরুরাজা) কমনওয়েলথ গেমসে ৫৬ কেজি বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। আমার মনে আছে একজন গ্রাহক একটি মশলা পান চেয়েছিলেন সে’দিন। কথা মতো আমি সেটাই তৈরি করে দিয়েছিলাম। সেই সঙ্গে দোকানে টিভিতে ভারোত্তোলনের প্রতিযোগিতা দেখছিলাম। ঠিক তখনই, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, পরেরবার ওই জায়গায় আমি থাকবো। আমি নিশ্চয়ই থাকবো ওখানে- বাস মেহনাত কর্ণ হ্যায়।”
যেমন ভাবা তেমন কাজ। সঙ্কেত শুরু করেছিলেন কঠোর পরিশ্রম। পাড়ার ছোটো পান দোকানির চোখে শুধু কমনওয়েলথে ভারতের হয়ে পদক জেতা। জিততে হবে সোনার পদক। “আমি সব সময়ই খেলোয়াড় হতে চেয়েছি। কিন্তু আমি কখনোই সেই সুযোগটা পাইনি। আমি একটি গ্রামের ছেলে। বাড়ির জন্য চাল, ডাল কেনাই ছিল আমার প্রধান কাজ। তার মাঝে খেলাধুলার কথা এক সময়েও ভাবতেও পারতাম না,” অতীতের কথা মনে করে বলেছেন সঙ্কেত।