আউশগ্রামের ভেদিয়ায় সদ্য নির্মিত উড়ালপুল নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই গত তিন দিন ধরে সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করছে। স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন, কেন সরকারিভাবে উদ্বোধনের আগেই সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়েছে। লরি, ডাম্পারসহ একের পর এক ভারী গাড়ি সেতুর উপর উঠছে, অথচ এখনও পর্যন্ত সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। এই নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে, যেগুলি প্রশাসনের কাছে পরিষ্কার করার দাবি জানানো হয়েছে।
Read Hindi: उड़ाल पुल पर उद्घाटन से पहले वाहनों की आवाजाही, विवाद!
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন যে, সেতুর কাজ কখন শেষ হয়েছে, তা তারা জানতেও পারেননি। এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা তো জানতেই পারলাম না, সেতুর কাজ কবে শেষ হয়েছে। উদ্বোধনের আগেই ভারী গাড়ির চলাচল শুরু হয়ে গেল! প্রশাসন কোনও কিছু জানায়নি।” তারা সেতুর নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং উদ্বোধন হওয়ার পর গাড়ি চলাচলের বিষয়টি নিয়মিত হতে হবে, তা নিয়ে সন্দেহের ঝড় উঠেছে।
এনএইচ-সি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দীপঙ্কর জানা এ বিষয়ে বলেন, “সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে এবং এর পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয়ে গেছে। তবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এখনও হয়নি। কিছু বিষয় এখনও ঠিক করা হয়নি, যেমন একফুকোর নীচে জল জমে যাওয়ার কারণে প্রবেশপথ খুলে দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
এই উড়ালপুলটি দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করতে বড় ভূমিকা রাখবে। প্রায় ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই উড়ালপুলের কাজ ২০২১ সালের প্রথম দিকে শুরু হয়েছিল এবং এটি ২.২ কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি রেলের বর্ধমান-রামপুরহাট লুপ লাইনের উপরে ১৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর নির্মিত। সেতুটিতে মোট ৭০টি পিলার এবং ১৩৪টি পথবাতি রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা যদিও সেতুর নির্মাণের কারণে খুশি, কিন্তু উদ্বোধনের আগেই যান চলাচল শুরু হওয়ায় তাদের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি রয়েছে। রঞ্জন বৈদ্য এবং অনুপ হাটি নামের দুই স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “সেতু তৈরি হওয়ায় আমরা খুশি, কিন্তু উদ্বোধনের আগেই এইভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হওয়াটা সঠিক নয়।” তাদের দাবি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং নিয়মমাফিক যান চলাচল চালু করা উচিত।
এনএইচ-সি বিভাগের আধিকারিক দীপঙ্কর জানা আরও বলেন, “আমরা জানি এই সেতুর কারণে ভেদিয়ার নিচু আন্ডারপাসে বৃষ্টির সময় জল জমে যেত, যা অনেকদিনের সমস্যা ছিল। এই সেতুটি সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান।” তবে এখন যেহেতু সেতুর উদ্বোধন হয়নি, স্থানীয়রা অপেক্ষা করছেন সরকারি ঘোষণা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য।
তাদের দাবি, সেতুর চালু হওয়ার পর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং যান চলাচল শুরু করা জরুরি। প্রশাসনের তরফে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিন তারিখ ঘোষণা করা হয়নি, তাই এই বিষয়ে সবাই অপেক্ষায় রয়েছে।