আগামী ২২ শে জুলাই থেকে শুরু হতে চলেছে সংসদের বাদল অধিবেশন (Budget 2024)। আর সেই অধিবেশনেই আগামী ২৩শে জুলাই ২০২৪ সালের পূর্ণাঙ্গ বাজেট (Budget 2024) পেশ করা হবে। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি প্রায় শেষ বলেই শোনা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে উপস্থাপিত হতে চলেছে ৬টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিল। যার মধ্যে রয়েছে ২০২৪ অর্থবিল (Budget 2024)।
এই বছরের সংসদের আবহ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই আলাদা। গত দশ বছর ধরে কার্যত বিরোধী দলনেতা শূন্য ছিল সংসদ। বিরোধীরা অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। ফলে বিভিন্ন বিল পাশ নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হতেই পারে।
তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিল সেটি হল ‘অর্থ বিল ২০২৪’ (Budget 2024)। অর্থ বিলের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সংশোধনের উল্লেখ করা হবে এমনটাই শোনা যাচ্ছে। করছাড়ের ক্ষেত্র ছাড়াও, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জিএসটি কাউন্সিলকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদানের বিষয়। এই বিশেষ ক্ষমতা পেলে, জিএসটি কাউন্সিল কোনও সংস্থাকে পাঠানো পূর্ববর্তী নোটিশ প্রত্যাহারের সুযোগ পাবে।
কম্পিউটার খুললেই নীল-স্ক্রিন! বিশ্বজুড়ে পণ্ড কাজ, প্রভাব ভারতেও, কী হল?
আর এখানেই লুকিয়ে আছে একটা ট্যুইস্ট। ভারতের বাণিজ্য মহল মনে করছে বিভিন্ন অনলাইন গেমিং কোম্পানিগুলোর কাছে এবারের বাজেট এবং অর্থ বিলের এই ক্ষেত্রটি অত্যন্ত রকমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। ইতিমধ্যেই মোবাইল গেমিং এর বাজার ভারতবর্ষে ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ২০২২শে যারা পরিমাণ ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ১৮১ বিলিয়ন টাকা, সেটাই ২০২৪ সালের শেষে গিয়ে বেড়ে ২৬৯ বিলিয়ন টাকাতে দাঁড়াবে বলে মনে কর সে বিশেষজ্ঞ মহল।
সমীক্ষা আরও বলছে, ২০২৪ সাল নাগাদ, গেমিং অ্যাাপ ব্যবহারকারী সংখ্যা ৯১৬ মিলিয়ন হতে পারে। এদের মধ্যে ২৪০ মিলিয়ন ব্যাবহারকারীই যুক্ত থাকবেন রিয়েল-মানি গেমিংয়ে । গেমিং ইকোসিস্টেমের মূল্য তখন 6 বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে, যার মধ্যে রিয়েল-মানি গেমিং এর অবদান প্রায় 79% হতে চলেছে। এই সমীক্ষা আরও ৬০ শতাংশ স্মার্টফোন গেমাররা প্রতিদিন অনলাইনে গেম খেলেন এবং ৯০ শতাংশ রিয়েল-মানি গেমাররা সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও গেমিং সাইটে খেলতে অভ্যস্ত।
এমনকী ভারতীয় চলচ্চিত্র জগত থেকে যে রাজস্ব আদায় হয়, তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে এই অনলাইন মোবাইল গেমিং এর রাজস্বের পরিমাণ। বিনোদন ক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের ৮০ থেকে ৮৪ শতাংশই এই মুহূর্তে আসে এই বিভিন্ন অনলাইন গেমিং কোম্পানীগুলোর থেকে। এর আগে ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল অব্দি অনেক অনলাইন মানি গেমিং কোম্পানিগুলি ঠিকঠাক মতো তাদের কর জমা করতে না পারার জন্য নোটিশ পেয়েছেন। সংসদে পেশ হতে চলা নতুন অর্থ বিলে তাদের ক্ষেত্রে বেশকিছু আর্থিক ছাড় বা ত্রানের সুবিধা দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নোটিশ প্রত্যাহার করা হতে পারে এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের।
সে ক্ষেত্রে কি অনলাইন গেমিং সেক্টরকে আরও উৎসাহিত করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার? এই প্রশ্ন উঠছে। আর্থিক উপদেষ্টাদের মতে এর ফলে অনলাইন গেমিং সেক্টরে অনেক বেশি স্বচ্ছতা আসবে। গোটা বিষয়টির উপরে সরকারি নজরদারি বাড়বে। গোটা বিষয়টিতে সরকার মনিটরিং থাকার ফলে আর্থিক তছরূপ বা আর্থিক নয় ছয় এর ক্ষেত্র টাও অনেক বেশি কন্ট্রোলে আনা যাবে। তবে বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, নোটিশ ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটলে সেক্ষেত্রে, অনলাইন গেমিং সেক্টরে গ্রোথও প্রবাহিত হবে। আগের থেকে আরও বেশি পরিমাণে রাজস্ব বৃদ্ধির একটা সম্ভাবনাও তাঁরা দেখছেন এক্ষেত্রে।
‘ফ্যাশন প্যারেড চলছে?’ নেকব্যান্ড ছাড়া আদালত কক্ষে ঢোকায় আইনজীবীকে ভর্ৎসনা প্রধান বিচারপতির!
সমীক্ষা বলছে ভারতবর্ষে প্রতি ১০ জন মোবাইল ব্যবহারকারীর মধ্যে অন্তত ৬ থেকে ৭ জন কোনও না কোনও মোবাইল গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে থাকেন। তবে গেমিং অ্যাপের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব খোয়ানোর নজিরও ভুরি ভুরি রয়েছে। ২৪-এর অর্থবিলে এই সংক্রান্ত বিষয়ে সরাসরি প্রভাব পড়ার সঙ্গে গোটা বিষয়ে নজরদারিতেও কোন পরিবর্তন হবে কি? সেই বিষয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাই সরকারের ভরসায় না থেকে, বুঝেশুনে এই সমস্ত অ্যাপ ব্যবহার করার পরামর্শই দিচ্ছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। কারণ বাংলায় একটা পরিচিত প্রবাদ আছে, ‘অতি লোভে কিন্তু তাঁতি নষ্ট’।