ব্রাজিলে লুলা-ভেনেজুয়েলায় মাদুরো, দুই শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে বাম সরকার

প্রায় পুরো দক্ষিণ আমেরিকাতেই (South America) ফের লাল সুনামি  (Red Wave) চলছে। সেই ধাক্কায় ফের ব্রাজিলের (Brazil) ক্ষমতায় লুলা (Lula da Silva) এলেন। ব্রাজিলের রাজপথ…

প্রায় পুরো দক্ষিণ আমেরিকাতেই (South America) ফের লাল সুনামি  (Red Wave) চলছে। সেই ধাক্কায় ফের ব্রাজিলের (Brazil) ক্ষমতায় লুলা (Lula da Silva) এলেন। ব্রাজিলের রাজপথ জুড়ে লাল পতাকার মিছিল। পরাজিত ‘স্বৈরাচারী’ তকমা পাওয়া প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। প্রত্যাশিতভাবেই চূড়ান্ত ভোটে জয়ী লুলা। তিনি আগেও প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

লুলার জয়ের পাশাপাশি উঠে আসছে ব্রাজিলের প্রতিবেশি তথা বিশ্বের অন্যতম জ্বালানি তেল উৎপাদক ও রফতানিকারক দেশ ভেনেজুয়েলার প্রসঙ্গ। এ দেশেও ক্ষমতায় বামপন্থী সরকার। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো রীতিমতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেন চক্ষুশূল।

দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ দেশ ব্রাজিলের অর্থনীতি চাঙ্গা। ব্রাজিল ও ভেনেজুয়েলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় তাবড় তাবড় অনেক দেশের কাছেই ইর্ষার কারণ। কফি ও খনিজ তেলের পাশাপাশি বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারী দেশ দুটি। বিশেষত আমাজন নদী কেন্দ্রীক বনজ সম্পদে বনীয়ান ব্রাজিল। বারবার অভিযোগ উঠেছে, জইর বলসোনারো প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আমাজন পুড়িয়ে বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে অরণ্যাঞ্চলের জমি দিয়েছেন। বারবার আমাজনে দাবানল ধরার পিছনে এই সংস্থাগুলির ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ।

বিবিসি সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার খবর, ব্রাজিল ও ভেনেজুয়েলার সরকারে বামপন্থীরা পুনরায় আসার পর থেকে দক্ষিণ আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি ধনতান্ত্রিক দেশগুলির সংঘাত আরও বাড়বে। তবে আর্জেন্টিনা সহ কয়েকটি দেশে দক্ষিণপন্থীরা ক্ষমতায়।

অতি দক্ষিণপন্থী থেকে ফের বাম শাসনের মুখে ব্রাজিল। দেশটির জাতীয় নির্বাচনে পূর্বতন প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা (Lula da Silva) আবারও মসনদে। প্রথম দফার ভোটে লুলার নেতৃত্বে ওয়ার্কার্স পার্টি ৪৮.৪% ভোট পায়। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্ব্বি জইর বলসোনারো (Jair Bolsonaro) পান ৪৩.২% ভোট। যেহেতু কোনও পক্ষ ৫০ শতাংশ পায়নি তাই ফের ভোট হয়। এবার জয়ী হন লুলা।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বিরুদ্ধে বিশ্ববিখ্যাত আমাজন অরণ্য ধংস করিয়ে বহুজাতিক সংস্থার হাতে সেই জমি তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

করোনা সংকটে বলসোনারো বারবার বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার সতর্কতা উপেক্ষা করে বিতর্ক তৈরি করেন

বিবিসি জানাচ্ছে, ২০০৩ – ২০১০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বামপন্থী লুলা।  প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন লুলার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে। ক্ষমতা চলে যাওয়ার পর ২০১৮ সালে তাঁর জেল হয়। আইনি জটিলতা কাটিয়ে তিনি মুক্ত হন।

করোনা সংক্রমণে ব্রাজিলে ছিল ভয়াবহ পরিস্থিতি। সেই সময় বারবার প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্খ্য সংস্থার সংঘাত ও বিতর্কিত বয়ান তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বলসোনারো। ট্রাম্প বরাবর বলসোনারোকে সমর্থন করেন। ট্রাম্পের পরাজয়ের পর বাইডেনের আমলে কোণঠাসা বলসোনারো অবশেষে বিদায় নিলেন।