কালীগঞ্জ: কালীগঞ্জে ১০ বছরের বালিকা তমন্না খাতুন হত্যা মামলায় মূল অভিযুক্ত গাওয়াল শেখ এবং তাঁর পুত্র বিমল শেখকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে বর্ধমানের কাটোয়া থেকে এই দুই জনকে আটক করা হয়। এর ফলে ওই ঘটনায় মোট গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়াল ৯।

সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা

গত ১৯ জুন কালীগঞ্জে বিধানসভা উপনির্বাচন হয়৷ ২৩ জুন ভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার আগে তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলার অভিযোগ উঠেছিল। ওই হামলায় প্রাণ হারান তমন্না খাতুন, যাঁর পরিবার সিপিএম সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

তমন্নার মা সাবিনা বিবি অভিযোগ করেন, “বোমা হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন গাওয়াল শেখ। তিনিই মূল মদদদাতা। কিন্তু ওর ওপরে আরও কেউ আছেন, পুলিশ যেন তদন্ত করে জানে।”

গাওয়াল শেখকে গ্রেফতার Tammanna Khatun Murder Case

কালীগঞ্জের তৃণমূলের বুথ সভাপতির দায়িত্বে থাকা গাওয়াল শেখকে গ্রেফতারের বিষয়ে কৃষ্ণনগর পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, “গাওয়াল শেখ এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা নিরবচ্ছিন্ন তল্লাশি চালাচ্ছি এবং দ্রুত বাকি অভিযুক্তদেরও আটক করা হবে।”

রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, “দুষ্কৃতীদের দলের পরিচয় নেই। ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি আমাদের। আমরা চাই পুলিশ দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিক।”

অর্জুন বিশ্বাসের অভিযোগ

অন্যদিকে, বিজেপির কৃষ্ণনগর নদিয়া উত্তরের সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস অভিযোগ করেছেন, “মূল বড় মাথাদের আড়ালে রাখতে সাধারণদেরকে বলি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ এখনও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার সামর্থ্য রাখে না।”

সিপিএম নেতা এসএম সাদি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “পুলিশ আগেই সব জানত এবং তাদের ‘সেফ প্যাসেজ’ দিয়েছিল। এখন জনমতের চাপ পড়ায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি নাটক ছাড়া আর কিছু নয়।”

কালীগঞ্জে এই ঘৃণ্য ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এবং ন্যায়সংগত বিচার চেয়ে সরব রয়েছেন।