হেডিংলিতে অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফির প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের পারফরম্যান্স যেন হারিয়ে ফেলেছিল আগ্রাসন ও চরিত্র (Ravi-Shastri)। মাঠে বল হাতে যাঁরা লড়ছিলেন, তাঁদের স্পেল ছিল যতটা ধারালো, ততটাই নিস্তরঙ্গ চারপাশের আবহ।
সেটাই যেন চোখে লেগেছে ভারতের প্রাক্তন কোচ (Former India Head Coach) রবি শাস্ত্রীর (Ravi-Shastri)। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে যদি কেউ মাঠে থাকতেন, যিনি একাই তিনজনের কাজ করতে পারতেন। তিনি হলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)।
ভারতীয় দলে বিরাট কোহলির অবদান শুধু একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে নয়, বরং তাঁর নেতৃত্বগুণ, আগ্রাসন এবং মাঠে অন্যদের উজ্জীবিত করার ক্ষমতা ছিল অমূল্য। কোহলি সেই খেলোয়াড়, যিনি বল হাতে না থাকলেও বোলারদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ তৈরি করতেন। কখনো কথার মাধ্যমে, আবার কখনো চোখের চাহনিতে। সেই ‘ফাইটার স্পিরিট’ই যেন আজকের ভারত দল থেকে নিখোঁজ।
শাস্ত্রী (Ravi-Shastri) স্পষ্টভাবেই বললেন, “ভারতের দরকার এমন একজন, যে কোহলির মতো মাঠে গিয়ে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। বিরাট একাই তিনজনের কাজ করত—উজ্জীবন, আগ্রাসন এবং মানসিক চাপ তৈরি।”
ইংল্যান্ডকে ৩৭১ রানের টার্গেট দেওয়ার পর মনে হচ্ছিল ভারত হয়তো সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু শেষ দিনে, দুই ইংরেজ ওপেনার অবিচ্ছিন্ন উদ্বোধনী জুটি গড়ে ফেললেন, তখন ভারতীয় দলের শরীরী ভাষা ছিল ক্লান্ত ও নিষ্প্রভ। শুরুতে বুমরাহ ও সিরাজের স্পেল যথেষ্ট তীক্ষ্ণ হলেও, প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের একাগ্রতা ও আত্মবিশ্বাসের মুখে সেটি তেমন ফলপ্রসূ হয়নি।
মাইকেল আথারটনের মতে, সিরাজ এমন একজন খেলোয়াড়, যিনি মাঝে মাঝে কোহলির মতো আচরণ করতে পারেন। তবে এই দিন তিনিও ছিলেন নিঃশব্দ ও মন্থর। মাঠে যেন কোনও নেতৃত্ব বা উৎসাহদানের শক্তি দেখা যায়নি।
রবি শাস্ত্রী (Ravi-Shastri) বিরাটকে তুলনা করেছেন জাভেদ মিয়াঁদাদের সঙ্গে। পাকিস্তানের সেই কিংবদন্তি যিনি ব্যাট হাতে যেমন দুর্দান্ত, তেমনই প্রতিপক্ষের স্নায়ুর উপর খেলা করতেও পারতেন। বিরাট কোহলিও তেমনই একজন, যিনি মাঝে মাঝে ব্যাটিং ছাড়াও নিজের শরীরী ভাষা এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব দিয়ে প্রতিপক্ষের উপর প্রভাব ফেলতেন।
ধুবড়ি পরিদর্শনে জেলা প্রশাসনের হয়ে ভুল স্বীকার হিমন্তর
এই আক্রমণাত্মক মনোভাব হয়তো সব সময় কূটনৈতিক নয়, কিন্তু তা দলের মধ্যে একটা জাগরণ তো আনেই। এবং সেটাই ভারত হারিয়েছে এই টেস্টে।
বর্তমানে কোহলি টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন, তাই তাঁর ফাঁকা জায়গা পূরণ করাটা হবে বিশাল চ্যালেঞ্জ। প্রশ্ন উঠছে—কে নেবে এই ‘ফায়ারব্র্যান্ড’ চরিত্রের দায়িত্ব? বর্তমানে ভারতীয় দলে দরকার একজন নতুন ‘স্পার্ক’, যিনি মাঠে শুধু দক্ষতায় নয়, আচরণেও হবে আগ্রাসী।