উত্তরবঙ্গ: রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামোকে আরও বিস্তৃত ও সমৃদ্ধ করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার উত্তরবঙ্গে তিনটি নতুন আইটি পার্ক (IT Park) গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে মোট ২২টি আইটি পার্ক রয়েছে, যার মধ্যে অধিকাংশের দখলদারিত্ব ৮০ থেকে ১০০ শতাংশের মধ্যে।
এই প্রসঙ্গে শুক্রবার রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “আমরা এখন উত্তরবঙ্গে আইটি পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। শিলিগুড়িতে বর্তমানে তিনটি আইটি পার্ক রয়েছে এবং প্রত্যেকটি ১০০ শতাংশ দখলদারিত্বে সম্পূর্ণ কার্যকরী। এই সাফল্যই আমাদের আরও তিনটি নতুন আইটি পার্ক তৈরি করতে উৎসাহ দিয়েছে।”
মন্ত্রী আরও জানান, উত্তরবঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে চাহিদা তৈরি হয়েছে, তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। শিলিগুড়ির তিনটি আইটি পার্কেই স্থান সংকুলান সমস্যা তৈরি হয়েছে। বহু নতুন সংস্থা জায়গার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। এই চাহিদাকে মাথায় রেখেই নতুন পার্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন তিনটি আইটি পার্ক কোথায় তৈরি হবে, তা এখনও চূড়ান্ত না হলেও রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে। মালদা, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় নতুন পার্ক স্থাপন হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এই পার্কগুলি তৈরি হলে স্থানীয় যুব সম্প্রদায়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে এবং একইসঙ্গে উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।
মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “আমরা শুধু নতুন পরিকাঠামো তৈরি করছি না, বরং আইটি শিল্পে বিনিয়োগ আনতেও সচেষ্ট। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। ভবিষ্যতে উত্তরবঙ্গও কলকাতার মতো তথ্যপ্রযুক্তির অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হবে।”
উল্লেখ্য, রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ২০১১ সালের পর থেকে ব্যাপক হারে আইটি পার্ক নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছে। কলকাতার বাইরেও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে জেলা ভিত্তিক পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। বর্তমানে কলকাতার সল্টলেক সেক্টর ফাইভ, নিউ টাউন ছাড়াও দুর্গাপুর, বর্ধমান, হাওড়া, শিলিগুড়ি, খড়গপুরের মতো শহরে আইটি পার্ক গড়ে উঠেছে।
সরকারি সূত্রে আরও জানা গেছে, নতুন তিনটি আইটি পার্কের নির্মাণ প্রক্রিয়া ২০২5 সালের মধ্যেই শুরু করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলিতে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো, স্টার্টআপ ইনকিউবেশন সেন্টার, স্কিল ট্রেনিং সেন্টার, এবং গ্রিন বিল্ডিং নীতির প্রয়োগ থাকবে।
উত্তরবঙ্গের জন্য এই ঘোষণাকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই এই অঞ্চলে শিল্পোন্নয়নের দাবি উঠছিল। এবার আইটি শিল্পকে ঘিরে সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই পদক্ষেপ উত্তরবঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলেই আশা করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।