পোস্ট অফিস সঞ্চয়ে টাকা তোলায় সুবিধা দেবে ECS পরিষেবা

ভারতীয় ডাক বা ইন্ডিয়া পোস্টের (Post Office) সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা রাখেন এমন মানুষদের জন্য এল স্বস্তির খবর। দীর্ঘদিন ধরেই পোস্ট অফিসে টাকা রাখার পর ম্যাচিওরড…

Post Office Deposit Without Nominee

ভারতীয় ডাক বা ইন্ডিয়া পোস্টের (Post Office) সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা রাখেন এমন মানুষদের জন্য এল স্বস্তির খবর। দীর্ঘদিন ধরেই পোস্ট অফিসে টাকা রাখার পর ম্যাচিওরড অঙ্ক তুলতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে নানা ধরনের জটিলতা ও ঝক্কি পোহাতে হত। কখনও কাগজপত্র জমা দেওয়ার সমস্যা, কখনও বা পোস্ট অফিসে দীর্ঘ লাইন সব মিলিয়ে বহু মানুষ এই সমস্যায় প্রায়শই বিরক্ত হয়ে পড়তেন।

এই সমস্যার সমাধানেই এবার ইলেকট্রনিক ক্লিয়ারেন্স সার্ভিস (ECS) চালু করল ভারতীয় ডাক। এই নতুন ব্যবস্থার ফলে, পোস্ট অফিসে টাকা ম্যাচিওর হলে সরাসরি গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পৌঁছে যাবে। আর এর ফলে পোস্ট অফিসে লাইন দেওয়া বা বিলম্বিত লেনদেনের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে গ্রাহকদের।

   

বর্তমানে কৃষক, পেনশনভোগী, গৃহবধূ থেকে শুরু করে বহু মধ্যবিত্ত নাগরিক পোস্ট অফিসের সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা রাখেন, যেমন —

ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট (NSC)

কিষাণ বিকাশ পত্র (KVP)

সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা (SSY)

পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (PPF)

টাইম ডিপোজিট ও রেকারিং ডিপোজিট স্কিম (TD/RD)

এইসব প্রকল্পে অনেক সময় বছর দশেক বা তারও বেশি সময় ধরে টাকা রাখার পর যখন তা ম্যাচিওর হয়, তখন অনেকেই টাকার জন্য বারবার পোস্ট অফিসে যেতে বাধ্য হন। এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় সরকার ও ভারতীয় ডাক দপ্তর ECS চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পোস্ট অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিষেবা চালু করার ফলে গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য আগে থেকেই পোস্ট অফিসে জমা দিতে হবে, যেমন —

Advertisements

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর

IFSC কোড

আধার নম্বর (যদি না থাকে, তখন প্যান বা অন্য KYC ডকুমেন্ট)

এই তথ্য যাচাই হয়ে গেলে, নির্ধারিত ম্যাচিউরিটি ডেটে সেভিংস প্রকল্পের টাকা সরাসরি গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হবে।

ভারতীয় ডাকের আধিকারিকদের মতে, “এর ফলে দেশের লক্ষ লক্ষ পোস্ট অফিস সেভিংস অ্যাকাউন্ট হোল্ডাররা উপকৃত হবেন। বিশেষত যাঁরা প্রবীণ নাগরিক বা যাঁরা গ্রামাঞ্চলে বসবাস করেন, তাঁদের আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলতে হবে না।”

এই উদ্যোগের মাধ্যমে পোস্ট অফিসের আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়াতেও গতি এসেছে। যদিও এখনও অনেক পোস্ট অফিসের অবকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে, তবে শহর ও বড় বাজার এলাকাগুলিতে অনেক অফিসেই ইতিমধ্যেই ডিজিটাল পরিষেবা শুরু হয়েছে।

একজন প্রবীণ সঞ্চয়কারী বলেন, “আগে ম্যাচিওরড টাকার জন্য ৩-৪ বার পোস্ট অফিসে যেতে হতো, এখন যদি সরাসরি অ্যাকাউন্টে আসে, তাহলে অনেক স্বস্তি পাব।”

এই ECS পরিষেবার মাধ্যমে ভারতীয় ডাক তার “ডিজিটাল ইন্ডিয়া” মিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্পন্ন করল বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহল।