‘অপারেশন বেঙ্গল’ শুনেই মোদীকে চ্যালেঞ্জ মমতার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে তাঁকে একটি জোরালো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি অপারেশন সিঁদুর…

mamata challenges modi

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে তাঁকে একটি জোরালো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি অপারেশন সিঁদুর নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না, কিন্তু যদি আপনারা এটাকে ‘অপারেশন বেঙ্গল’ নাম দেন, তাহলে আমি প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করছি।”

মমতা অভিযোগ করেন (mamata)

মমতা (mamata) অভিযোগ করেন যে, বিজেপি মুর্শিদাবাদ এবং মালদায় সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনাগুলোর পিছনে ষড়যন্ত্র করেছে এবং দাঙ্গা লাগাতে তারা ‘ওস্তাদ’। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলাকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করে বিভাজন নীতির রাজনীতি করছেন, যা রাজ্যের জনগণের জন্য অপমানজনক।

   

মমতা (mamata) তাঁর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী অসম, কোচবিহার থেকে লোক এনে জনসভা করছেন। কেন এই অবস্থা, আলিপুরদুয়ারের মত জায়গায় কেন বাইরে থেকে লোক এনে জনসভা করতে হয়”। অপারেশন সিঁদুরের নামে বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো ভিডিও ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

“অপারেশন বেঙ্গল”

তিনি (mamata) বলেন, “ভারতীয় সেনাকে অপারেশন সিঁদুরের জন্য সাধুবাদ জানাই। কিন্তু বিজেপি মিডিয়া সেল এই অপারেশনের নামে ভুয়ো ভিডিও ছড়াচ্ছে, যা নিন্দনীয়।” এই প্রসঙ্গে মমতা স্পষ্ট করেন যে, তিনি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন, তবে ‘অপারেশন বেঙ্গল’ নামকরণের মাধ্যমে বাংলার প্রতি অপমানজনক ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “অপারেশন বেঙ্গল মানে কি প্রধানমন্ত্রী বাংলাকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করছেন? এটা বাংলার মানুষের জন্য অপমান।”

বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি

মমতা (mamata) আরও অভিযোগ করেন যে, বিজেপি রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “মুর্শিদাবাদ এবং মালদার ঘটনাগুলো বিজেপির ষড়যন্ত্র। তারা দাঙ্গা লাগাতে ওস্তাদ। এই ধরনের ঘটনার মাধ্যমে তারা রাজ্যের শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়।” তিনি দাবি করেন যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে দুর্নীতি আরও বেশি, কিন্তু তারা বাংলাকে টার্গেট করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা

তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে বলেন, “যখন অভিষেক বিদেশের মাটিতে অপারেশন সিঁদুর এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। এটা লজ্জার বিষয়।” মমতা উল্লেখ করেন যে, অভিষেককে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব তিনি নিজেই দিয়েছিলেন, যাতে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা যায়।

Advertisements

অপারেশন সিঁদুর রাজনৈতিক ফায়দা

মমতা (mamata) আরও বলেন, “আমরা দেশের স্বার্থে কেন্দ্রের সঙ্গে কাজ করছি। অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যে আমরা গর্বিত। কিন্তু বিজেপি এটাকে রাজনৈতিক ফায়দার জন্য ব্যবহার করছে।” তিনি অভিযোগ করেন যে, ভারতীয় রেলের টিকিটে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে বিজেপি সেনার কৃতিত্ব নিজেদের নামে চালানোর চেষ্টা করছে। তিনি এই ধরনের প্রচারকে ‘দেশভক্তির নামে ব্যবসা’ বলে সমালোচনা করেন। তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন প্রধানমন্ত্রীর শুধু পাবলিসিটি চাই।

বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছে বিশেষ চমক

বাংলা বিজেপির হাতে যাবে না

মমতা রাজ্যবাসীকে শান্ত থাকার এবং বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আতঙ্কিত হবেন না। দায়িত্বশীলরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন।” তিনি সীমান্তবর্তী এলাকায় পুলিশ পেট্রোলিং বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং অনুপ্রবেশের বিষয়ে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের সীমান্ত অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমাদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।” সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি স্পষ্ট জানান বাংলা বিজেপির হাতে যাবে না।

মমতার (mamata) এই সংবাদ সম্মেলন রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তৃণমূল নেতারা দাবি করেছেন যে, মমতার এই চ্যালেঞ্জ বিজেপির বিভাজনমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা। অন্যদিকে, বিজেপি নেতারা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন যে, মমতা রাজনৈতিক ফায়দার জন্য জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়কে বিতর্কে টেনে আনছেন।

এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) পশ্চিমবঙ্গের জনগণের মধ্যে তাঁর দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা বাংলার সম্মান রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিজেপির ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও আমরা রাজ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখব।” তাঁর এই বক্তব্য আগামী দিনে রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।