Qatar WC: ইরান-আমেরিকার হাইভোল্টেজ কূটনৈতিক ম্যাচে ফের সাদা গোলাপ ফুটবে? কাঁপছে বিশ্ব

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: দু দশক আগে তীব্র এক সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ফ্রান্সের মাটিতে। সেই সংঘাতে আচমকা ফুটেছিল সাদা গোলাপ! তবে সেই গোলাপ সুবাসেও কুলকুল করে…

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: দু দশক আগে তীব্র এক সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ফ্রান্সের মাটিতে। সেই সংঘাতে আচমকা ফুটেছিল সাদা গোলাপ! তবে সেই গোলাপ সুবাসেও কুলকুল করে ঘেমেছিল কূটনৈতিক মহল। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (Iran vs USA) মুখোমুখি হওয়ার আগে দুটি দেশের মধ্যে যে রাজনৈতিক যুযুধান পরিস্থিতি ছিল, দু দশক পরেও একই ছবি। এবার (Qatar WC) কাতার বিশ্বকাপের আসরে ফের মুখোমুখি দুপক্ষ।

ইরান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচ বিশ্বকাপের আসরে হাইভোল্টেজ তকমাধারী। এই দুই দেশের ম্যাচকে বলা হয় ফুটবলের মাঠে রাজনৈতিক বল দখলের লড়াই। এখানে গোল বড় কথা নয়, কূটনৈতিক ফাইলের লড়াই গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে ইরান সরকার নির্দেশ জরি করে মাঠে কোনও ইরানি ফুটবলার সরাসরি আমেরিকান ফুটবলারের সাথে হাত মেলাবে না। চরম বিপাকে পড়ে যায় ফিফা। তবে শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি কিছুটা নরম হয়েছিল। মাঠে দুই দল পরস্পর করমর্দন করে। চমকে দিয়ে ইরানি ফুটবলাররা সাদা গোলাপ উপহার দেন। সাদা গোলাপের ফুটবল বলে পরিচিত হয়ে আছে ম্যাচটি। আবার রাজনৈতিক ফুটবল বলেও পরিচিত। খেলায় জয়ী হয়েছিল ইরান।

চব্বিশ বছর পর এবার কাতারের মাঠে ইরান বনাম আমেরিকার ম্যাচের আগেও তীব্র কূটনৈতিক উত্তেজনা। এবারও কি মাঠে সাদা গোলাপের সৌরভ ছড়়াবে? বিশ্বজুড়ে আলোড়ন বিশ্বকাপের সবথেকে হাইভোল্টেজ কূটনৈতিক ফুটবল ম্যাচ নিয়ে।

হিজাব বিদ্রোহ, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বিতর্ক, সব শেষে বিকৃত পতাকা সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়ানোর অভিযোগ- এসব নিয়ে প্রবল কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের আবহে মাঠে নামছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। বিশ্বকাপের  আসরে ফুটবলের নিরিখে এই ম্যাচ যত না আলোচিত তার চেয়ে ঢের ঢের বেশি কূটনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ফলে ম্যাচটি ঘিরে কাতার সরকার বিশেষ সতর্ক। ১৯৯৮ সালে একই রকম সতর্ক ছিল ফ্রান্সের সরকার। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি রু়খতে নামানো হয়েছিল ফরাসি পুলিশের বিশেষ কমান্ডোদের।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের কূটনৈতিক সংঘাত বরাবরই চরমে।  ইরানের অভ্যন্তরে হিজাব বিদ্রোহকে সমর্থন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রক্তাক্ত দমন নীতির বিরুদ্ধে সরব বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। শতাধিক ইরানি বিক্ষোভকারী মৃত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে উস্কানির অভিযোগে রুষ্ঠ তেহরান।

এই কূটনৈতিক আবহে খেলার শুরুর আগে চরম বিতর্কে জড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের অভিযোগ, তাদের জাতীয় পতাকা বিকৃত করে  টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় ফুটবল দলের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে। ইরান বলেছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের জাতীয় ও ধর্মীয় পরিচিতির ওপর আঘাত করা হয়েছে।ফিফার গঠনতন্ত্রের ১৩ নম্বর নিয়মকে সামনে এনেছে ইরান। এতে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি  কোনও ফিফা সদস্য দেশের জাতীয় ও ধর্মীয় পরিচিতি ও প্রতীকের অবমাননা করে তাহলে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পরবর্তী অন্তত ১০টি ম্যাচ থেকে বাদ পড়বে। ম্যাচ শুরুর আগে ক্ষমা চেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোচ।