ময়দানে বিষাদ, কিংবদন্তি ফুটবলার অলিম্পিয়ান বদ্রু ব্যানার্জির প্রয়াণ

ভারতীয় ফুটবলে আরও একটি নক্ষত্র পতন। প্রয়াত হলেন প্রখ্যাত প্রাক্তন ফুটবলার সমর ব্যানার্জি, যিনি বদ্রু ব্যানার্জি নামেই পরিচিত। শুক্রবার রাত ২.১০ মিনিটে এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ…

badru

ভারতীয় ফুটবলে আরও একটি নক্ষত্র পতন। প্রয়াত হলেন প্রখ্যাত প্রাক্তন ফুটবলার সমর ব্যানার্জি, যিনি বদ্রু ব্যানার্জি নামেই পরিচিত। শুক্রবার রাত ২.১০ মিনিটে এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি ফুটবলার। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। রেখে গেলেন নাতনি এবং পুত্রবধূকে।

২৭ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তরিত করা হয় এসএসকেএমে। গত কয়েকদিন ধরেই সঙ্কটজনক অবস্থায় ছিলেন। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। প্রায় ২৪ দিনের লড়াইয়ের পর শুক্রবার মধ্যরাতে প্রয়াত হলেন বদ্রু ব্যানার্জি। পিকে ব্যানার্জি, চুনী গোস্বামী, সুভাষ ভৌমিক, সুরজিৎ সেনগুপ্তর পর বাংলার ফুটবল হারাল আরও এক কিংবদন্তিকে।

১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিকে ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন বদ্রু ব্যানার্জি। চার নম্বরে শেষ করেছিল ভারত। তাঁর নেতৃত্বেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের সেরা পারফরম্যান্স। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ পর্যন্ত মোহনবাগানে খেলেন। ১৯৫৮ সালে অধিনায়কও ছিলেন। সবুজ মেরুন জার্সিতে ১০টি ট্রফি জিতেছেন। ১৯৫৩ এবং ১৯৫৫ সালে প্রথমবার ডুরান্ড কাপ এবং রোভার্স কাপ জেতে মোহনবাগান। সেই বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন বদ্রু। মোহনবাগান দলের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুরে বিদেশ সফরেও গিয়েছিলেন বদ্রু ব্যানার্জি। সেই সফরে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ছিলেন তিনি।

ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে চারটে গোল রয়েছে কিংবদন্তি ফুটবলারের। সবুজ মেরুন জার্সিতে মহমেডানের বিরুদ্ধে করেছেন পাঁচ গোল। ফুটবলার এবং কোচ হিসেবে সন্তোষ ট্রফি জেতার নজির রয়েছে তাঁর। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত বাংলার সন্তোষ ট্রফি দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন। ১৯৫৩ এবং ১৯৫৫ সালে ফুটবলার হিসেবে সন্তোষ জেতেন। ১৯৫৯-এ সালে খেলা ছাড়েন বদ্রু।

ফুটবল ছাড়ার পরে বরিষা এসসি ক্লাবকে কোচিং করিয়েছেন। কোচ হিসেবে বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি এনে দেওয়ার কৃতিত্বও তার ঝুলিতে। পরে নির্বাচক হিসেবেও কাজ করেন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতীয় ডাকবিভাগ বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মানে বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশ করে। রাজ্য সরকারের তরফে পেয়েছেন জীবনকৃতি সম্মান। ২০০৯-এ মোহনবাগান রত্ন সম্মানে ভূষিত হন। অর্জুন বা পদ্মশ্রী পুরস্কার পাননি।

১৯৬১ সালে বাংলার কোচ হিসেবে জেতেন সন্তোষ ট্রফি। ভারতীয় ফুটবল দলের নির্বাচকও ছিলেন। মানস ভট্টাচার্য এবং বিদেশ বসুর মতো ফুটবলারের উত্থানের পেছনে বদ্রু ব্যানার্জির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ কলকাতা ময়দানে।