নয়াদিল্লি: কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ জঙ্গি হামলার বদলা নিতে গত মে মাসে অপারেশন সিঁদুর চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী৷ পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) ঢুকে জঙ্গি শিবির এবং লঞ্চপ্যাড গুঁঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বিমান বাহিনী। তবে গোপন সূত্রে উঠে এসেছে, যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং সরকারি পর্যায় থেকে সন্ত্রাসবাদের এই অবকাঠামো পুনর্গঠনে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দু হল সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া এবং ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি এড়ানো।
পুনর্গঠনের কৌশল: ছোট ও হাই-টেক শিবির
আইএসআইয়ের নতুন কৌশল অনুযায়ী, বড় বড় শিবিরগুলোকে ছোট ছোট মিনি ক্যাম্পে ভাগ করা হচ্ছে। প্রতিটি শিবির নিজস্ব প্রহরী ও উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহন করবে। থার্মাল সেন্সর, কম ফ্রিকোয়েন্সির রাডার এবং অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি এড়ানো এবং আকাশ থেকে হামলার ঝুঁকি কমানো হচ্ছে। এলওসি ঘন জঙ্গলে নির্মিত এই শিবিরগুলো এতটাই গোপনীয় যে প্রচলিত স্যাটেলাইট ও নজরদারি পদ্ধতিও কার্যকরভাবে সনাক্ত করতে পারছে না।
গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও লক্ষ্য Pakistan Terror Camp Rebuilding
পুনর্গঠনের প্রকল্পের আওতায় থাকা এলাকা যেমন লুনি, পুটওয়াল, টাইপু পোস্ট, জামিলা পোস্ট, উমরানওয়ালি, চাপরার এবং ফরোয়ার্ড কাহুতা—সবই ভারত-সম্পর্কিত উচ্চ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের হটস্পট। পাশাপাশি, পিওকে-র কেল, শারদি, লিপা ভ্যালি, জুরা, তান্দপানি এবং আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে নতুন লঞ্চপ্যাড তৈরি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সীমান্তেও চারটি রেঞ্জার পোস্ট পুনরায় সশক্ত করা হয়েছে, যা নতুন মিশনে ব্যবহৃত হবে।
গোপন বৈঠক ও অর্থায়ন
ভারতীয় গোয়েন্দারা একাধিকবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ইঙ্গিত পেয়েছেন, যেখানে জেইএম, এলইটি, হিজবুল মুজাহিদিন এবং দ্য রেজিস্টেন্স ফ্রন্টের (টিআরএফ) শীর্ষ কমান্ডাররা আইএসআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেছেন। গত এপ্রিলের পাহালগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পেছনে থাকা টিআরএফ-এর এই বৈঠকে আইএসআই পুনর্গঠনের জন্য ব্যাপক অর্থায়ন ও মানবসম্পদ বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে।
ভারতের সাড়া ও ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সচেতন যে, পাকিস্তানের এই নতুন কৌশল কঠোর নজরদারি ও আকাশ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযানকে আরও কঠিন করে তুলবে। অপারেশন সিন্ধুর মতো অভিযানগুলো ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাওয়া হবে, কিন্তু এখন অবশ্যই আরও উন্নত গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী অবকাঠামোর পুনর্গঠন একটি গুরুতর নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ। ছোট আকারের উচ্চ প্রযুক্তিযুক্ত ক্যাম্পগুলোর মাধ্যমে আইএসআই চেষ্টা করছে নজরদারি এড়িয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার। এই পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য শুধুমাত্র প্রতিহতকরণ নয়, গোয়েন্দা তথ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সীমান্তে কঠোর নজরদারি এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে চাপ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।