নয়াদিল্লি: এবারের জঙ্গি নিশানায় অমরনাথ যাত্রা৷ লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন TRF-এর (দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট) নামে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে স্পষ্ট সতর্কবার্তা। পহেলগাঁও হামলার পর ফের এই সংগঠন নতুন হামলার ছক কষছে বলে জানা গিয়েছে। দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এই তথ্য সামনে আসতেই। আর তাই পবিত্র গুহামন্দির পর্যন্ত যাত্রাপথে মোতায়েন করা হচ্ছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা। পাল্টে গিয়েছে হেলিকপ্টার পরিষেবার নিয়ম, ঘোষণা হয়েছে ‘নো-ফ্লাই জোন’-এরও। ধর্মীয় আবেগের পাশাপাশি এবার কার্যত যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নিয়েই শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের অমরনাথ যাত্রা।
এখনও অধরা TRF-এর সন্ত্রাসবাদীরা
সূত্রের দাবি, TRF-এর সন্ত্রাসবাদীরা এখনো ধরা পড়েনি এবং পির পাঞ্জাল পাহাড়ি জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে পারে। আর সেখান থেকেই তারা ফের হামলার ছক কষছে। পহেলগাঁও এবং বলতাল-দুই গুরুত্বপূর্ণ রুটেই রয়েছে বিপদের সম্ভাবনা। প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার তীর্থযাত্রী এই দুই রুট ব্যবহার করে পৌঁছন পবিত্র গুহায়।
এই পরিস্থিতিতে, একদিকে সিকিউরিটি জোন তৈরি করা হয়েছে– পুরো রুটটিকে ভাগ করে দিচ্ছে ছোট ছোট সেক্টরে, যাতে প্রতিটি ‘জোনে’ মোতায়েন থাকে ভিন্ন ভিন্ন বাহিনী–CRPF, ITBP, স্থানীয় পুলিশ ও সেনা, আর তাদের জন্য অতিরিক্ত কুকুর টিম, বোমা সনাক্তকরণ দল, এমনকি ‘ফেস রিকগনিশন’ ও ‘RFID’ প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ধরার দৃষ্টান্ত বের করা হচ্ছে চূড়ান্ত খুঁটিনাটি পর্যন্ত। নদীপথ রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে মাছির মতো প্রতিটি ফুটপাথে নজর দিচ্ছে বিশেষ ক্যামেরা, যেন গন্তব্যের রেহাই না পায় কোনো সন্দেহজনক পদধ্বনি।
হেলিকপ্টার পরিষেবা বন্ধ Amarnath Yatra Security
এদিকে হেলিকপ্টার পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন, কারণ দ্রুত পৌঁছানোর আর কোন বিকল্প নেই। রাস্তায় উঠতে হচ্ছে, যাত্রাপথ দীর্ঘ হচ্ছে এবং বেপরোয়া সময় লাগে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, নিরাপত্তা না নিলে কি দামের তোয়াক্কা করতে পারবেন? শেষ পর্যন্ত যাত্রীরা শান্তিতে পৌঁছান কি না-সেই আশাকেও চ্যালেঞ্জ করছে বর্তমান পরিস্থিতি।
তবে এসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও অনেকেই উদ্বিগ্ন
TRF-এর সদস্যেরা কি আদৌ ধরা পড়বে? অথবা তারা আবার কোন জায়গা থেকে ঝাঁকিয়ে পড়বে? বর্তমানে গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, যেসব সদস্য পহেলগাঁও হামলার জন্য দায়ী ছিল, তার বেশিরভাগ এখনও বন্দি হয়নি, পির পাঞ্জাল জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছে৷ একটি অদৃশ্য জাল বোনার কাজ চলছে।
কলকাতা থেকে আমরনাথ যাত্রীদের উদ্দেশে বার্তা জারি প্রশাসনের
রেজিস্ট্রেশন ফর্ম, হেলিকপ্টার না থাকা, রেস্টিং পয়েন্ট থেকে শুরু করে RFID ট্যাগ বাধ্যতামূলক, এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে খবর দিতে হবে, যাতে এক মুহূর্তেও গোয়েন্দারা প্রস্তুতে আসতে পারে।