নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচন ২০২৪-পরবর্তী পর্বে এবার সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাসের দিকে এগোচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বিশেষ করে দলের পরবর্তী জাতীয় সভাপতির নিয়োগ নিয়ে এখন দলীয় অন্দরে চলছে জোর আলোচনাপর্ব। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও ঘোষণা হয়নি এখনও, তবে সূত্রের খবর, জুনের মাঝামাঝি থেকেই শুরু হতে পারে সভাপতি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া।
দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, জাতীয় সভাপতির নির্বাচন সম্পন্ন করতে হলে রাজ্যস্তরে সাংগঠনিক নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া আবশ্যক। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি ইতিমধ্যেই বেশিরভাগ রাজ্যে সংগঠনের নির্বাচন সেরে ফেলেছে। উত্তরপ্রদেশে সদ্য ৭০টি জেলা সভাপতির নাম ঘোষণার পর এই আলোচনা আরও গতি পেয়েছে।
সাংগঠনিক ভারসাম্য: প্রথমে রাজ্য, পরে কেন্দ্রীয় সভাপতি
দলীয় সূত্রের খবর, জাতীয় স্তরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রথমে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে রাজ্য সভাপতি পদে রদবদল করতে পারে বিজেপি। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড।
উত্তরপ্রদেশে, আগে ব্রাহ্মণ মুখ ভাবা হলেও, এখন দলে ওবিসি (OBC) নেতার চাহিদা বাড়ছে। নির্বাচন-পরবর্তী ডেটা বিশ্লেষণ বলছে, এই শ্রেণির ভোটব্যাঙ্ক আরও শক্তিশালী করতে চাইছে বিজেপি।
মধ্যপ্রদেশে, বর্তমানে এক ওবিসি মুখ্যমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণ রাজ্য সভাপতি রয়েছেন। সূত্র অনুযায়ী, এবার সেখানে একজন আদিবাসী নেতাকে রাজ্য সভাপতি হিসেবে তুলে ধরার ভাবনা রয়েছে, যা সাংগঠনিক অন্তর্ভুক্তির বার্তা দিতে পারে।
উত্তরাখণ্ডে, এক ব্রাহ্মণ নেতাকে রাজ্য সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে রাখা হয়েছে বলে খবর।
জাতীয় সভাপতির দৌড়ে শীর্ষ ৩ নাম BJP National President Election
যদিও রাজ্যস্তরে পুনর্গঠন চলছে, কেন্দ্রীয় সভাপতির পদ নিয়ে ইতিমধ্যেই ঘুরছে একাধিক নাম:
ধর্মেন্দ্র প্রধান – ওড়িশা থেকে আসা এই ওবিসি নেতা বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সংগঠনে দক্ষতা ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ বলেই তাঁর নাম গুরুত্ব পাচ্ছে।
শিবরাজ সিং চৌহান – প্রাক্তন মধ্যপ্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ভরসাযোগ্য মুখ, মাটির মানুষের নেতা হিসাবে পরিচিত।
মনোহর লাল খট্টর – সদ্য হরিয়ানা মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছেন। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও স্থিতিশীল নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবেই তিনি আলোচনায়।
সূত্র জানাচ্ছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা, আঞ্চলিক প্রতিনিধি ভারসাম্য এবং জাতিগত সমীকরণ বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখা হবে।
নাড্ডার মেয়াদ শেষে সামনে নতুন পর্ব
বর্তমান বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে দায়িত্বে রয়েছেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সেই দায়িত্ব সফলভাবে শেষ করার পরই নেতৃত্ব পরিবর্তন নিয়ে জোরালো আলোচনা শুরু হয়েছে।
দলীয় সূত্র বলছে, শীঘ্রই গঠিত হবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি, যারা দেখবে মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই এবং প্রয়োজন হলে ভোটাভুটির প্রক্রিয়া।
এই মুহূর্তে এটা স্পষ্ট নয় যে, নাড্ডা দ্বিতীয় মেয়াদে সভাপতি পদে ফিরতে চাইবেন কিনা৷ নাকি দলের রণকৌশল অনুযায়ী নতুন মুখের সন্ধানে এগোবে নেতৃত্ব।
রাজনৈতিক নজরদারি: বিরোধীদের কৌতূহল প্রবল
বিজেপির এই অভ্যন্তরীণ রদবদলের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেস হোক বা আম আদমি পার্টি, সব পক্ষই জানে, ২০২৬ সালের একগুচ্ছ রাজ্য নির্বাচন এবং ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় সভাপতি যে কোনও দলের কৌশল নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা নেবে।
বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলের এই সন্ধিক্ষণ একধরনের ‘লিডারশিপ রিসেট’। মুখ বদল মানেই শুধু ব্যক্তি পরিবর্তন নয়, বরং রাজনীতির দিকদর্শন ও সামাজিক সমীকরণের নতুন বিন্যাস। এই রূপান্তর কতটা গভীর, আর তাতে বিজেপি কতটা নিজেদের নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে পারে তা-ই এখন দেখার।
Bharat: BJP gears up for a major organizational reshuffle post-Lok Sabha Election 2024, with the national president election process likely starting mid-June. State-level elections are almost complete. Discussions focus on new state chiefs for UP, MP, Uttarakhand, and top contenders like Dharmendra Pradhan, Shivraj Chouhan, & Manohar Lal Khattar for the party’s top post.