টাকা গেল কোথায়? মিড ডে মিল নিয়ে কেন্দ্রীয় রিপোর্টে কাঠগড়ায় বাংলা

কলকাতা: বাংলার স্কুলে পড়ুয়াদের মধ্যে কি মিড ডে মিলের প্রতি আগ্রহ কমছে? কেন্দ্রের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে সেই প্রশ্নই উঠে এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মিড…

West Bengal Mid-Day Meal

কলকাতা: বাংলার স্কুলে পড়ুয়াদের মধ্যে কি মিড ডে মিলের প্রতি আগ্রহ কমছে? কেন্দ্রের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে সেই প্রশ্নই উঠে এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিলের জন্য নাম নথিভুক্ত হয়েছিল ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৪৪ হাজার পড়ুয়া। অথচ প্রকৃতপক্ষে মিড ডে মিল পেয়েছে মাত্র ৭৭ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৪৬ জন। অর্থাৎ প্রায় ৩১ শতাংশ পড়ুয়া মিড ডে মিল পায়নি।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের কাছে কৈফিয়ত চাইল কেন্দ্র। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রাজ্যের তরফে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, এই রিপোর্ট ঘিরে নতুন করে শাসক তৃণমূল ও বিরোধী বিজেপির মধ্যে চাপানউতোর চরমে উঠেছে।

   

নথিভুক্ত পড়ুয়া কমেছে, কোথায় গেল মিড ডে মিলের টাকা- প্রশ্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে মিড ডে মিল প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা আরও কমেছে বলে জানানো হয়েছে। বর্তমানে সেই সংখ্যা মাত্র ৮০ লক্ষের কিছু বেশি। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার কড়া ভাষায় বলেন, “৫০ শতাংশ বাচ্চা মিড ডে মিল খাচ্ছে না। অথচ কেন্দ্র ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, যা রাজ্য খরচই করেনি। সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে?”

‘চাল চুরি’র অভিযোগ শুভেন্দুর, পালটা আক্রমণে তৃণমূল ও শিক্ষামন্ত্রী West Bengal Mid-Day Meal

বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, “তৃণমূলের নেতারা মিড ডে মিলের চাল চুরি করছে। ১০০ শতাংশ দেখিয়ে চাল তুলছে, কিন্তু রান্না হচ্ছে মাত্র ৫০ শতাংশ।” তিনি আরও জানান, এই বিষয়টি নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে নথি-সহ রিপোর্ট পাঠিয়েছেন।

শুভেন্দুর অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গ মিড ডে মিল প্রকল্পে দেশের মধ্যে সেরা পারফর্ম করেছে বলে কেন্দ্র স্বীকার করেছে। এখন বিজেপির পেট জ্বলছে। এই বাংলায় সাপ্তাহিক মাংস ও মরশুমি ফলও দেওয়া হয় মিড ডে মিলে।”

‘বাংলা সেরা, বিজেপি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে’

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “আমার কাছে যে রিপোর্ট আছে তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২৪-২৫ সালে গড় কভারেজ ছিল ৬৯ শতাংশ। প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ৭৮%, প্রাথমিক স্তরে ৭৪% এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে ৫৮%। কেন্দ্রীয় অ্যাপ্রুভাল বোর্ড অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের কভারেজ ছিল ৯১%।”

Advertisements

তিনি তুলনামূলক তথ্যও তুলে ধরে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে কভারেজ যেখানে ৬৯%, বিহারে তা ৪২%, গুজরাটে ৬৪%, রাজস্থানে ৫২% এবং উত্তরপ্রদেশে ৬৪%। তাহলে বাংলার মিড ডে মিল নিয়ে বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

কোথায় কম? জেলার পরিসংখ্যানে উদ্বেগ

কেন্দ্রীয় রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান ও উত্তর ২৪ পরগনায় মিড ডে মিল পাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা গড়ের তুলনায় অনেক কম — কিছু ক্ষেত্রে প্রায় অর্ধেক মাত্র। এর ফলে এই জেলাগুলিতে প্রকল্প রূপায়নে গাফিলতির প্রশ্ন উঠছে।

রাজ্য বনাম কেন্দ্রের সংঘাতে মিড ডে মিল প্রকল্প আবার আলোচনার কেন্দ্রে। তবে প্রকল্পে বাস্তব অংশগ্রহণ এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে দুই পক্ষের অবস্থান স্পষ্টভাবে ভিন্ন। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রাজ্য কী রিপোর্ট দেয় এবং তাতে কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া কী হয়, সেদিকেই এখন নজর সব পক্ষের।

West Bengal: A central report reveals a significant gap in West Bengal’s Mid-Day Meal scheme: 31% fewer students received meals than enrolled. The Centre demands an explanation by June 30, igniting a political clash between TMC & BJP over alleged fund misuse and “rice theft.” Get full details and ministerial responses.