Rampurhat: মার্চেই রামপুরহাটে বিরোধীরা খুঁজে পেল নন্দীগ্রাম

সোমবার বিকেলের দিকে একবার উপপ্রধানকে লক্ষ্য করে হামলা। তারপর রাতের দিকে সেই একই ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়ে খুন। তারপরে এলাকায় একাধিক বাড়িত অগ্নি সংযোগ…

সোমবার বিকেলের দিকে একবার উপপ্রধানকে লক্ষ্য করে হামলা। তারপর রাতের দিকে সেই একই ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়ে খুন। তারপরে এলাকায় একাধিক বাড়িত অগ্নি সংযোগ এবং মঙ্গলবার সকালে ১২ জনের মৃত্যু (সরকারি হিসেবে ১০ জন)। বীরভূম জেলার রামপুরহাটের এই ঘটনা ঘিরে তোলপাড় সমগ্র দেশ। পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি উঠতে শুরু হয়েছে। আর এই ঘটনার সঙ্গেই সাদৃশ্য পাওয়া যাচ্ছে নন্দীগ্রাম কাণ্ডের এমনই বিতর্ক।

২০০৭ সালের ১৪ মার্চ বামফ্রন্টের আমলে পূর্ব মেদিনীপুরের  নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু ঘটে বহু গ্রামবাসীর। যদিও তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন যে পুলিশের পোশাকে শাসক সিপিআিইএম কর্মীরা হামলা চালিয়েছিল নন্দীগ্রামে। যা নিয়ে অনেক আন্দোলন হয়েছিল। দেশ জুড়ে শুরু হয়েছিল আলোচনা। কাঠগড়ায় তোলা হয় মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। সেই ঘটনার কারণেই ২০১১ সালে সুদীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম সরকারের পতন ঘটেছিল বলে দাবি করে তৃণমূল।

তাৎপর্যপূর্ণ ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে বলেন, বাপ-ব্যাটার নির্দেশে গুলি চলেছিল। তাঁর ইঙ্গিত ছিল তৃণমূল ত্যাগী শিশির ও শুভেন্দু অধিকারী। 

রামপুরহাটের ঘটনার সঙ্গেও কোথাও যেন সাদৃশ্য রয়েছে নন্দীগ্রামের। বিষয়টা যেন কিছুটা অদৃশ্য। বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে হলে আরও একটু পিছিয়ে যেতে হবে। ২০০৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন হয় পশ্চিমবঙ্গে। বাম বিরোধী প্রবল হাওয়া উঠেছিল ভোটের আগে। তৃণমূল যেন ক্ষমতায় এসেই গিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে ঘটে ভিন্ন। ২৩৪টি আসন পায় বামেরা। বঙ্গে বিরোধী খুঁজতে দূরবীনের প্রয়োজন হতো। এরপরে ২০০৭ সালের মার্চে ঘটে নন্দীগ্রামের ঘটনা। তারপর থেকেই ঘুরে যায় সব খেলা।

ঠিক একই রকম ঘটনা যেন ঘটল ২০২২ সালের রামপুরহাটে। ২০২১ সালে ভোটের আগে প্রবল বিজেপি হাওয়া দেখা গিয়েছিল রাজ্য জুড়ে। কিন্তু ২০০টির বেশি আসন নিয়ে বিধানসভা দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। এর পরের বছরেই মার্চ মাসে ঘটে গেল রামপুরহাটের ঘটনা। মৃত্যুর সংখ্যাটাও দুই ক্ষেত্রে কাছাকাছি। যা দেড় দশক পরে ফের একবার ফিরিয়ে আনছে নন্দীগ্রামের স্মৃতি।

গাণিতিক পরিসংখ্যান মিল যারা খোঁজেন তারা ‘নন্দীগ্রাম গণহত্যা’ ও ‘রামপুরহাট গণহত্যা’র মধ্যে আরও সাদৃশ্য খুঁজছেন। সেই সঙ্গে চলছে শাসক ও বিরোধী তুমুল তরজা।