Qatar WC: ইরানের খেলায় আমিনির ছবি রুখতে মরিয়া কাতার, কূটনৈতিক চাপ আমেরিকার

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: খেলার আগে বিতর্ক আর বিতর্ক। এ যেন আসলেই ‘political football’! এই খেলায় ইরান বলছে খেলা হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে খেলা হবে।…

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: খেলার আগে বিতর্ক আর বিতর্ক। এ যেন আসলেই ‘political football’! এই খেলায় ইরান বলছে খেলা হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে খেলা হবে। দুপক্ষের কূটনৈতিক ফুটবল ম্যাচ ঘিরে বিশ্বকাপের (Qatar WC) আয়োজক কাতার কোন ছার, পুরো বিশ্ব রাজনীতি গরম।

দোহা শহর জুড়ে অবশ্য ইরানি ও মার্কিনি সমর্থকরা একসাথেই যাওয়া আসা করছেন। অনেকের দাবি, ফুটবলের আসরে ফের ফুটুক সাদা গোলাপ। যেমনটা ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপের মাঠে ইরানি ফুটবলাররা তাদের প্রতিপক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলারদের সাদা গোলাপের উপহার দিয়েছিলেন। সেবার ইরান সরকারের নিষেধাজ্ঞা ছিল প্রতিপক্ষ মার্কিনি ফুটবলারদের সাথে হাত না মেলানোর। তবে খেলার আগে সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়েছিল।

https://video.incrementxserv.com/vast?vzId=IXV533296VEH1EC0&cb=100&pageurl=https://kolkata24x7.in&width=300&height=400

উপরের সেই ছবি। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ ম্যাচে ইরানের তরফে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাদা গোলাপ উপহার দেওয়ার মুহূর্ত।

দু’ দশক পর ফের বিশ্বকাপে মুখোমুখি ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। খেলার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ফুটবল সংস্থা ইউএস সকার ফেডারেশন ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনকারী নারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে সরাসরি। ইরানের পতাকা তাদের সোশাল মিডিয়ায় ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জেরে ইরান ক্ষুব্ধ। ইউএস সকার ফেডারেশন বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানে মৌলিক অধিকার চেয়ে লড়াই করা নারীদের সমর্থন করা হয়েছে।

ইরানের হিজাব বিদ্রোহকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের পরই কাতার সরকারও কড়া হলো আরও। স্টেডিয়ামে নিহত মাহসা আমিনির ছবি নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ।স্টেডিয়ামে ইরানের হিজাব বিদ্রোহের প্রেক্ষিতে ‘নারী-জীবন-স্বাধীনতা’ লেখা কোনও টি শার্ট পরার অনুমতি দিচ্ছে না। এই ধরণের কোনও ছবি বা পোস্টার যাতে কেউ আনতে না পারেন তার জন্য চলছে বিশেষ তল্লাশি।

হিজাব না পরার অভিযোগে পুলিশের হেফাজতে থাকা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে ইরানে চলছে  হিজাব বিদ্রোহ। আন্দোলন দমাতে ইরানের পুলিশের গুলিতে শতাধিক নিহত। বিদ্রোহের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার আগে জাতীয় সঙ্গীত গাননি ইরানি ফুটবলাররা। এরপর তেহরান থেকে তীব্র হুঁশিয়ারির পর সুর নরম হয় ইরানি ফুটবলারদের।

তেল বাণিজ্য,পরমাণু কর্মসূচি সহ একাধিক ইস্যুতে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গত পাঁচ দশকের বেশি চলছে কূটনৈতিক সংঘাত। এমনই সংঘাতের আবহে  ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের পর ফের ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি। দু দশক আগের সেই চরম উত্তেজক ম্যাচে ২-১ গোলে জয়ী হয়েছিল ইরান। এবার তাদের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু এ সব মাঠের খেলার হিসেব নিকেশ। আর  মাঠের বাইরে চলছে তেহরান-ওয়াশিংটন কূটনৈতিক সংঘাত।