সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে উভয় দিকেই ডিম ঢুকিয়ে দিচ্ছে বিজেপি: বিস্ফোরক মহ:সেলিম

অমরনাথ তীর্থে হামলার ছক করা লস্কর ই তৈবা জঙ্গি তালিব হুসেনের সঙ্গে বিজেপির সংযোগের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই নেট দুনিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়। এমনকি জঙ্গি তালিবের…

Cpim top lrader Md salim special reaction on recent militant activity

অমরনাথ তীর্থে হামলার ছক করা লস্কর ই তৈবা জঙ্গি তালিব হুসেনের সঙ্গে বিজেপির সংযোগের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই নেট দুনিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়। এমনকি জঙ্গি তালিবের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল।  বিজেপি এবিষয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেও সরাসরি তোপ দাগলেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md Salim)৷ কলকাতা ২৪x৭ কে মহম্মদ সেলিম দিয়েছেন প্রতিক্রিয়া। তিনি কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে।

সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বলছি৷ যারা দেশ বিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত, যারা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত, যারা দেশের মানুষকে ভাগ করে, সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়। যারা সরকারী এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে নির্বাচনের প্রাক মুহুর্তে এমন কিছু ঘটনা ঘটায়, যা মানুষের আবেগকে ভোটবাক্স পুরণ করে৷ এদের সবার তার এক জায়গায় বাঁধা। সে কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদীদের কথা বলুক, উত্তর-পূর্বের উগ্রপন্থের নামে কথা বলুক, পশ্চিমবঙ্গের বিচ্ছিন্নবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকুক অথবা হিন্দু মুসলিমের বিভেদ তৈরি করে সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করুক। জাত, পাত, ধর্ম, বর্ণ, ভাষার নামে যারা লড়াচ্ছে, লড়ানোর শক্তি এক। তারা আলাদা মুখোশ পরে, আলাদা ধর্মীয় পোশাক পড়ে, আলাদা চেহারা নিয়ে তারা কাজ করে”৷

   

amit shah

প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে সেলিম বলেন, “দেশের দুর্ভাগ্য, প্রধানমন্ত্রী বলেন, পোশাক দেখলে চেনা যায়, টুপি দেখে চেনা যায়, দাড়ি দেখে চেনা যায়, লুঙ্গি দেখে চেনা যায়৷ এভাবে কারোর খাদ্য, কারোর ভাষা, কারোর পোশাক, এটার ওপর ভিত্তি করেই গোটা বিশ্বে তালিবানি শাসন চলছে। আমাদের এখানে আরএসএসের নামে হোক, বাংলাদেশের জামাতের নামে হোক, পাকিস্তানের তালিবানি মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হোক, এদের সবার রাজনৈতিক দর্শন এক”।

তিনি আরও বলেন, “যখন মধ্যপ্রদেশে আইসিস ধরা পড়ে তখন তার পরিচয় মেলে বিজেপি। উদয়পুরে যারা দর্জিকে হত্যা করে, দেখা যায় তারা বিজেপির নেতা। সম্প্রতি জম্মুর কাশ্মীরে যারা ধরা পড়েছে তাদেরকে কোনও পুলিশ অথবা মিলিটারি অথবা পুলিশ ধরেনি, ধরেছে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ। জনগণ প্রথম সারীতে থাকে যারা দেশকে নিরাপত্তা দেয়। তাঁদেরকে কাশ্মীরি নাম দিয়ে, হিন্দু-মুসলমান নাম দিয়ে সাম্প্রদায়িক বাতাবরণ তৈরি করে শত্রু করার চেষ্টা করা হচ্ছে”।

বাম জমানার প্রসঙ্গ টেনে সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্যের দাবি, “আমরা পুরুলিয়ার অস্ত্রকাণ্ডে দেখেছিলাম, যখন বাম সরকারকে উৎখাত করার জন্য বিদেশ থেকে প্লেনে করে অস্ত্র নিয়ে এসে নামানো হচ্ছিল। তখন অর্ধভুক্ত, গ্রামবাসী, ক্ষেতমজুর তারাই প্রথম চিহ্নিত করে। কীভাবে আনন্দমার্গীরা বা তাদের প্রভুরা পাঠাচ্ছে। পরে আডবানীর সরকার তাদের ছেড়ে দিয়েছিল। এভাবে খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে যারা এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের প্রভুরা কখনও আমেরিকায়, কখনও লন্ডনে, কখনও ইসলামাবাদ, কখনও দিল্লি আবার কখনও মুম্বইয়ে বসে এই কাজ করছে”।

আক্রমণের নিশানায় বাদ পড়েনি অমিত শাহ। সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্য, এগুলোর তদন্ত হবে না। এগুলোর তদন্ত যদি হত, তাহলে পুলওয়ামাতে আরডিএক্স কেন পুলিশ অফিসার নিয়ে এসেছিল? তা অমিত শাহ জানতে পারছেন না কেন? সমঝোতা এক্সপ্রেসে যখন বোমাকান্ড হল তখন আরএসএস নেতাদের নাম জড়িয়েছিল। কেন সেটার তদন্ত হল না? আসলে যখনই কোনও ঘটনা ঘটে, সরাসরি সেটাকে হিন্দু মুসলমান, সিয়া, সুন্নি, বাঙালি,রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি বলে দেগে দেওয়া হয়। মূল প্রশ্ন, কোথা থেকে অস্ত্র এল? কোথা থেকে আরডিএক্স এল? কোথা থেকে বোমা এল? কীভাবে তা দেশের সীমানা পার করে তা প্রবেশ করল? তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

সেলিম বলেছেন, আমরা দাবি করব, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হোক। নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক। তাহলেই দেখা যাবে আরএসএস এবং বিজেপি কাদের সংগঠিত করেছে। কীভাবে হিন্দু মুসলমানকে মুখোমুখি করে, কাশ্মীরের জনগণ এবং দেশের জনগণকে মুখোমুখি করে দাঁড় করানো হচ্ছে। উভয় দিকে মুরগীর ডিম ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে বাচ্ছাটা যেটা হবে, সেটা বিজেপির হয়।