Raj Suri vs State : ধর্ষণ বনাম মধুচক্র নিয়ে জমজমাট আইনি লড়াই

দারুণ এক মামলা। একদিকে ধর্ষণের অভিযোগ, অন্যদিকে মধুচক্রের আসর বসিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ (Raj Suri vs State)। এর শেষ দেখতেই হবে, মনোভাব আদালতের। মামলার নাম বা…

honey trap

দারুণ এক মামলা। একদিকে ধর্ষণের অভিযোগ, অন্যদিকে মধুচক্রের আসর বসিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ (Raj Suri vs State)। এর শেষ দেখতেই হবে, মনোভাব আদালতের।

মামলার নাম বা ‘কেস টাইটেল’- রাজ সুরি বনাম রাজ্য। মামলা চলছে দিল্লি হাইকোর্টে। ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিনের জন্য আবেদন করেছেন আদালতে। বিস্ময়কর ব্যাপার জামিনের আবেদনকারীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার হলেও তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়নি কোনো এফআইআর। হাইকোর্টের অবস্থান স্পষ্ট৷ আপোষের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তদন্ত করে দেখতে হবে খোদ ডেপুটি পুলিশ কমিশনারকে, নির্দেশ বিচারপতির।

জাস্টিস সুব্রহ্মণম প্রসাদ টেনে এনেছেন অতীতের উদাহরণ। উত্তর প্রদেশের এক মামলা চলেছে রাজ্য সরকার এবং ললিতা কুমারির মধ্যে। সেখানেও ছিল অভিযোগ। কিন্তু ছিল না এফআইআর দায়ের হওয়ার নথি। এই পরিস্থিতিতে আপোষের পথে যায়নি সুপ্রিম কোর্ট। তদন্তের মাধ্যমে চলেছিল আইনি লড়াই। রাজ সুরি বনাম রাজ্যের এই মামলাতেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না বলে মত জাস্টিস প্রসাদের। আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ যেখানে তোলা হয়েছে সেখানে আপোস করার ভাবনা আনাও ভুল।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এবং ৩২৮-এর প্রেক্ষিতে জামিনের আবেদন উঠেছিল আদালতে। বিচারপতির এজলাসে চলছিল শুনানি। তখন জানা যায় ওই ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দু’টি পৃথক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন একজন ব্যক্তি। অভিযোগও ছিল ভিন্ন।

অভিযোগকারী এবং জামিনের আবেদনকারী ব্যক্তির মধ্যেকার সমস্যার নির্যাস- ফেসবুকের মাধ্যমে আলাপ হয়েছিল দু’জনের। এরপর দু’জনের আলাপ হয় বাস্তবে। বাড়িতে বসানো হয়েছিল মদের আসর। মহিলাকে নাকি জোর করে খাওয়ানো হয়েছিল মদ। দেওয়া হয়েছিল হুমকি। মদ্যপ মহিলার অসহায়তার সুযোগে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় পুরুষটি। অভিযোগকারী মহিলার দিক থেকে এই হল অভিযোগ। মহিলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়। কিন্তু অভিযোগকারী কোনো এফআইআর দায়ের করেননি বলে এখন সন্দেহ করা হচ্ছে।

শুনানির সময় জামিনের আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী বলেন, এই মামলাটি একটি ‘আদর্শ মধুচক্রের উদাহরণ’। এর আগে ওই একই মহিলা এবং তাঁর স্বামী একই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

জামিনের আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী আদালতে আরও জানিয়েছেন, অতীতে মণীশ তানওয়ার নামের এক ব্যক্তিকে একইভাবে আইনের মারপ্যাঁচে ফেলা হয়েছিল। যৌন নিগ্রহের মিথ্যা অভিযোগ এনে মোটা টাকা দাবি করা হয়েছিল তখন।

২০২০ সালে জুলাইয়ের ১০ তারিখে মণীশের বিরুদ্ধে কাপাশেরে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। মেডিক্যাল টেস্টের কথা বলা হলে পিছিয়ে এসেছিলেন অভিযোগকারী মহিলা। বলেছিলেন তিনি রাগের মাথায় অভিযোগ দায়ের করে ফেলেছিলেন। এবং অভিযোগ প্রত্যাহারও করে নিতে চান।

সবকিছু শোনার পর কোর্টের পর্যবেক্ষণ-

– ১০.০৭.২০২০ তারিখে কাপাশেরা পুলিশ স্টেশনে যখন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল এবং পরে গুরুরতর অপরাধ বলে গণ্য করা হয়েছিল তখন এফআইআর দায়ের করা হয়নি এবং কেন আপোষের ভিত্তিতে বিষয়টি স্থির করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল?

– যখন রাত ১২টা ২০ মিনিটে এফআইআর দায়ের করা হয়, তখন কেন এমএলসিকে এফআইআর-এর ডিডি নম্বরের ভিত্তিতে নথিভুক্ত করা হয়েছিল এবং এবং থানায় জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টিই-বা ঠিক কী ছিল?

আদালত দিল্লি পুলিশের ভিজিল্যান্সের ডেপুটি পুলিশ কমিশনারকে দু’মাসের মধ্যে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।