সর্বোচ্চ আদালতের কাছে নিজেদের অপারগতার কথা স্বীকার করে নিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। শনিবার একটি জনস্বার্থ মামলায় কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলির বিনামূল্যে প্রতিশ্রুতি বন্ধ করার মত ক্ষমতা তাদের নেই।
শুনানিতে কমিশনের আইনজীবী শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছেন, প্রচারের সময় আজকাল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিনামূল্যে বিভিন্ন জিনিস দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি বন্ধ করার মত ক্ষমতা কমিশনের হাতে নেই। এ ধরনের প্রতিশ্রুতি বিতরণ বন্ধ করতে গেলে উপযুক্ত আইন থাকা দরকার। কিন্তু কমিশনের সে ধরনের কোনও আইন নেই। আইন না থাকলে এই কাজ কমিশন কিছুতেই বন্ধ করতে পারে না। তবে এক্ষেত্রে শীর্ষ আদালত মনে করলে কিছু নির্দেশিকা জানাতে পারে। কমিশন সেই নির্দেশ মেনে চলবে।
ভারতীয় রাজনীতিতে সাম্প্রতিক একটি প্রবণতা এসেছে। সেটা হল বিনামূল্যে বিভিন্ন জিনিস উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। দেখা গিয়েছে, নির্বাচনী প্রচারে সব রাজনৈতিক দলই ভোটারদের মন জয় করতে কমবেশি প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেয়। অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি হল বিনামূল্যে বিভিন্ন লোভনীয় জিনিস উপহার দেওয়া আর। বিনামূল্যে উপহার পাওয়ার লক্ষ্যে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষেরা সহজেই প্রলোভিত হয়। সেই প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস রেখে কিছু পাওয়ার আশায় সংশ্লিষ্ট দলকে মানুষ উজাড় করে ভোট দেয়। দেখা যায়, যে দল যত বেশি দামি জিনিস দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেই দলই সবথেকে বেশি ভোট পায়। প্রতিশ্রুতি যে শুধু মঞ্চে শেষ হয়ে যায় তা নয়। রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী ইস্তাহারেও সেই প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ থাকে। নির্বাচন মিটে যাওয়ার পর ক্ষমতাসীন দল সেই সমস্ত প্রতিশ্রুতি কার্যকর করতেও শুরু করে।
রাজনৈতিক দলগুলির এ ধরনের বিনামূল্যে উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি যাতে বন্ধ হয় তার জন্য শীর্ষ আদালতে দায়ের হয় একটি জনস্বার্থ মামলা। ওই আবেদনে বলা হয়, যারা প্রচার এই ধরনের প্রতিশ্রুতি দেবে তাদের নির্বাচনী প্রতীক যেন কেড়ে নেওয়া হয়। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রকে নোটিস পাঠায়। কমিশন তার জবাব দিতে গিয়েই জানিয়েছে, এ ধরনের বিনামূল্যে উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বন্ধ করার মত কোনও ক্ষমতা তাদের হাতে নেই।