হামাস নেতার মৃত্যুতে ইজরায়েলের কঠোর হুঁশিয়ারি

হামাসের প্রাক্তন প্রধান ইসমাইল হানিয়েহর মৃত্যুর পাঁচ মাস পর, অবশেষে সেই গুপ্তহত্যার দায় স্বীকার করল ইজরায়েল(Israel)। মঙ্গলবার ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ এক বিবৃতিতে এই ঘটনার…

Israel Confirms Killing Hamas Leader Haniyeh, Vows to Behead Their Leaders

হামাসের প্রাক্তন প্রধান ইসমাইল হানিয়েহর মৃত্যুর পাঁচ মাস পর, অবশেষে সেই গুপ্তহত্যার দায় স্বীকার করল ইজরায়েল(Israel)। মঙ্গলবার ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ এক বিবৃতিতে এই ঘটনার কথা স্বীকার করে জানান, ইজরায়েলের(Israel) বিরুদ্ধে যাঁরা মাথা তুলবেন, তাঁদের নির্মম পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। একই সঙ্গে ইয়েমেনের মাটিতে হাউথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

গত ৭ অক্টোবরের হামাস-ইজরায়েল (Israel)  সংঘাতের প্রেক্ষিতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় লাগাতার রক্তগঙ্গা বইয়ে দিচ্ছে ইজরায়েল (Israel)। যুদ্ধের শুরু থেকে হামাসের শীর্ষনেতারা ইজরায়েলের মূল টার্গেটে ছিলেন। গত জুলাই মাসে ইরানের রাজধানী তেহরানে এক গুপ্তহত্যার মাধ্যমে প্রাণ হারান হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ।

   

ইরানের প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত জুলাই মাসে তেহরানে গিয়েছিলেন ইসমাইল হানিয়েহ। ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মসাদের দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাঁর অবস্থান চিহ্নিত করা হয়। তিনি যে ভবনে অবস্থান করছিলেন, সেখানে এক বিশাল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। হামলায় হানিয়েহ এবং তাঁর এক দেহরক্ষী নিহত হন।

এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সন্দেহের তির ছিল ইজরায়েলের দিকে। তবে এতদিন এ বিষয়ে ইজরায়েল কোনও মন্তব্য করেনি। অবশেষে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই হত্যার দায় স্বীকার করেন। তিনি জানান, ‘‘আমরা যেভাবে তেহরানে হানিয়েহ, গাজায় ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং লেবাননে হাসান নাসরল্লাহকে হত্যা করেছি, তেমনই ইয়েমেনের হোদেদা ও সানাতে হাউথি বিদ্রোহীদের নেতৃত্বকে খতম করব। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করবে, তারা কেউই আমাদের হাত থেকে রেহাই পাবে না।’’

ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট জানান, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যে কোনও অশুভ শক্তিকে নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘ইজরায়েলের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে এমন যে কোনও শক্তির মাথা আমরা কেটে দেব। ইজরায়েলি সেনার নজর এড়ানো অসম্ভব। শত্রুরা তাদের কৃতকর্মের জন্য কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।’’

 

ইজরায়েল কাটজ আরও জানান, ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী ইয়েমেনে হাউথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালাবে। হাউথি বিদ্রোহীরা সম্প্রতি ইজরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখাচ্ছে এবং ইরানের সমর্থনে কাজ করছে। এই বিদ্রোহীদের নেতৃত্বকে নির্মূল করার হুঁশিয়ারি দেন কাটজ।

ইরানের মাটিতে হামাস নেতার হত্যা ইজরায়েল এবং ইরানের মধ্যে সম্পর্ক আরও তিক্ত করেছে। ইরান বরাবরই হামাস এবং হাউথি বিদ্রোহীদের সমর্থন করে আসছে। অন্যদিকে, ইজরায়েল প্রতিটি পদক্ষেপে ইরানকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছে।

ইজরায়েলের এই স্বীকারোক্তি এবং হুঁশিয়ারির পর আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া তীব্র হয়েছে। বিশেষত, ইরান ও ইয়েমেনের পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।

ইজরায়েলের এই হুঁশিয়ারি শুধু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিকেই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বকে বার্তা দিচ্ছে যে, নিজের নিরাপত্তা এবং অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ইজরায়েল যেকোনও কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।