পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধরাশায়ী বিজেপি

এযেন বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের হুবহু প্রতিচ্ছবি। ওড়িশার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের ভোটে বিজু জনতা দলের কাছে ধরাশায়ী হল বিজেপি। ওড়িশায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে একমাত্র জেলা…

এযেন বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের হুবহু প্রতিচ্ছবি। ওড়িশার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের ভোটে বিজু জনতা দলের কাছে ধরাশায়ী হল বিজেপি। ওড়িশায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে একমাত্র জেলা পরিষদে দলের প্রতীকে ভোট হয়। এবার জেলা পরিষদের ৮৫১ টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছে। শুরু হয়েছে গণনা। এখনও পর্যন্ত ৩১৫টি আসনের ফলাফল জানা গিয়েছে। যার মধ্যে বিজু জনতা দল পেয়েছে ২৮০ টি আসন।

বাকি আসনগুলির ৮০ শতাংশেই এগিয়ে আছে রাজ্যের শাসক দল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেশিরভাগ আসনেই বিজেপিকে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব দলের এই শোচনীয় ফলাফলের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দায়ী করেছে। তাদের অভিযোগ, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা সকলেই উত্তর প্রদেশ নিয়ে ব্যস্ত। ওড়িশায় তাঁরা সে ভাবে প্রচার করতে পারেননি। এমনকী, ওড়িশায় দলের জনপ্রিয় নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। তিনিও একদিনের জন্যও রাজ্যে প্রচার করতে পারেননি। নির্বাচনে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।

   

বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব আরও অভিযোগ করেছে, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেভাবে তাদের আর্থিক সাহায্য করেনি। ফলে প্রচারে তেমন কোনও উন্মাদনা ছিল না। যদিও রাজ্যের শাসক দল বিজেডি কটাক্ষ করে বলেছে, বিজেপিকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। গেরুয়া দলকে কোনওভাবেই ক্ষমতায় দেখতে চাইছে না সাধারণ মানুষ। সে কারণেই বিজেপির এই শোচনীয় ফলাফল। কৃষক থেকে মেহনতী মানুষ, শ্রমিক, দিনমজুর সকলে বুঝে গিয়েছেন যে, বিজেপি পুঁজিপতিদের দল। তারা কখনওই সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। সে কারণে বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে ভোট নষ্ট করা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি কিন্তু যথেষ্ট ভাল ফল করেছিল। জেলাপরিষদের ৮৪৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি দখল করেছিল ২৯৭টি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির এই সাফল্যে মুখ্য ভূমিকা ছিল ধর্মেন্দ্র প্রধানের। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ওড়িশায় পর্যুদস্ত হতে হয়। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সেই ছবিটা বদলালো না। বিজেপিকে প্রায় তিন নম্বরে পাঠিয়ে দিল ওড়িশার সাধারণ মানুষ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিজেপির সাংগঠনিক ব্যর্থতা যেমন রয়েছে তেমনি মানুষ নবীন পট্টনায়ক সরকারের কাজেও যথেষ্ট খুশি। সে কারণেই বিজেডিকে মানুষ দুহাত তুলে ভোট দিয়েছে।