বেঙ্গালুরু: রাষ্ট্রীয় সয়ংসেবক সংঘের (RSS) সঙ্গে কর্ণাটক সরকারের চাপানউতোর অব্যাহত। এই আবহে ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য করে বিতর্কের আগুনে ঘৃতাহুতি দিলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah)। শনিবার সংঘ পরিবার এবং সনাতনীদের থেকে সাবধান থাকার বার্তা দেন তিনি।
ঐতিহাসিক উদাহরণ তুলে সিদ্দারামাইয়া বলেন, সংঘ বরাবর বি আর আম্বেদকরের আদর্শ এবং সংবিধানের বিরোধিতা করে মানুষকে ‘ভুলপথে চালনা’ করেছে! কোনো প্ররোচনা, বা ‘মগজ ধোলাই’য়ের শিকার না হয়ে মানুষকে সমাজের প্রগতিশীল এবং যুক্তিবাদী শক্তির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, সিদ্দারামাইয়া বলেন, “নিজেদের সঙ্গ ঠিক রাখুন। যারা সামাজিক পরিবর্তনের বিরোধিতা করে বা ‘সনাতনীদের’ সাথে নয়, বরং যারা সমাজের পক্ষে দাঁড়ায় তাদের সঙ্গে মেলামেশা করুন”।
প্রধান বিচারপতির দিকে ‘জুতো ছোঁড়া’ কান্ডের উল্লেখ
সম্প্রতি, সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের দিকে লক্ষ্য করে এক আইনজীবীর ‘জুতো ছোঁড়ার’ ঘটনা উল্লেখ করেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনা ‘সনাতনী’-দের বদ্ধমূল ‘গোঁড়ামি’-র প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah) বলেন, “এক ‘সনাতনীর’ প্রধান বিচারপতির দিকে জুতা ছুঁড়ে মারার ঘটনাই প্রমাণ করে যে এখনও কিছু গোঁড়া উপাদান সমাজে বিদ্যমান। কেবল দলিত নয়, বরং সকলের এই ঘটনার নিন্দা কড়া উচিৎ। তবে আমরা বলতে পারব যে সমাজ পরিবর্তনের পথে এগিয়ে চলছে”।
আম্বেদকরের সংবিধানের বিরোধিতা করেছিল সংঘ
সিদ্দারামাইয়া বলেন, “দশকের পর দশক ধরে সংঘ পরিবার (RSS) মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে আসছে যে নির্বাচনে আম্বেদকরকে হারিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু আসল ঘটনা হল, বি আর আম্বেদকর নিজে লিখেছিলেন যে সাভারকার এবং দাঙ্গাই তাঁকে হারিয়ে দিয়েছে”।
পাশাপাশি, রাজ্যে আম্বেদকরের আদর্শ প্রচারে কর্ণাটক সরকার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন সিদ্দারামাইয়া। তিনি বলেন, “আমি আম্বেদকর স্কুল অফ ইকোনমিক্স প্রতিষ্ঠা করেছি। যাতে আম্বেদকরের উপর যারা গবেষণা করেন তাঁদের সুবিধা হয়। বি আর আম্বেদকরের কোনও তুলনা হয়না। আর কোনও আম্বেদকর কখনও জন্মগ্রহণ করবেন না। তবে প্রত্যেকেরই তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা উচিত।”