Lata Mangeshkar: আরে ভাই সাউন্ড বন্ধ কিঁউ, হম ভি তো শুন রহে… পাকিস্তানি ট্রেঞ্চ থেকে বলল কেউ

যুদ্ধ চলছিল ভারত-পাকিস্তানের, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধ। রাজস্থান ও কচ্ছের রন এলাকায় দুপক্ষের ট্যাংক বাহিনীর গোলার আওয়াজে ধরিত্রী কাঁপছিল। নিকট দূরত্বে দু তরফের সেনা পরস্পরের দিকে…

যুদ্ধ চলছিল ভারত-পাকিস্তানের, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধ। রাজস্থান ও কচ্ছের রন এলাকায় দুপক্ষের ট্যাংক বাহিনীর গোলার আওয়াজে ধরিত্রী কাঁপছিল। নিকট দূরত্বে দু তরফের সেনা পরস্পরের দিকে বন্দুকের নল স্থির করে ট্রেঞ্চে বসে আছে। সেরকমই কোনও এক দিনের কথা, হয়ত কিছুক্ষণের জন্য গোলাগুলি বন্ধ। কেউ একজন ছোট রেডিও ট্রানজিস্টরে অনেকক্ষণ নব ঘুরিয়ে বিবিধ ভারতী ধরতে পারলেন। (Lata Mangeshkar)

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের মাঝে অনেক অদ্ভুত ঘটনার একটি ছড়িয়েছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে।

হাত কয়েক দূরে দুপক্ষের মুখোমুখি ট্রেঞ্চে ভারতের দিক থেকে রেডিওতে ভেসে আসছে ‘ইয়ে বিবিধ ভারতী হ্যায়, অাব আপলোগ…’ ঘোষণার পর বাজল সেই কোকিলকণ্ঠ। লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে পরপর হিন্দি গান। তিনি গাইছেন “আজিব দাস্তান হ্যায় ইয়ে, কাঁহা শুরু কাঁহা খতম…”।

গান চলছে। যুযুধান দুপক্ষ তন্ময় হয়ে শুনছে। আচমকা বেতার তরঙ্গ কেটে গেল। ঘড়ঘড়ানিতে বিরক্ত জওয়ান বন্ধ করলেন রেডিও। তখনই উল্টোদিকের পাকিস্তানি ট্রেঞ্চ থেকে শোনা গেল, আরে ভাই আরে ভাই সাউন্ড বন্ধ কিঁউ, হম ভি তো শুন রহে থে…!

এ ঘটনা ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় বহুল প্রচারিত। যুদ্ধের মাঝে ভারতীয় হিন্দি-উর্দু মিশ্রিত গান এমনই চমক তৈরি করেছিল। যুদ্ধ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এমন ঘটনার মুখোমুখি হন। তাঁদের অভিজ্ঞতা এমন, যারা পরস্পরের দিকে গুলি চালাচ্ছে তারা গান শুনে তন্ময় হয়ে যেত।

গীতিকার শৈলেন্দ্রর গানটি ‘দিল আপনা প্রীত পরায়ে’ ছবির। ১৯৬০ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে অভিনয় করেন মীনাকুমারী ও রাজকুমার ও নাদিরা। তিন অভিনেতা অভিনেত্রী পাকিস্তানেও প্রবল জনপ্রিয়। আর লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে আজীব দাস্তান গানটি দশকের পর দশক ধরে জনপ্রিয় হয়ে এসেছে।

পড়ুন: আলো আঁধারি ‘মহল’ জুড়ে দমকা হাওয়া, রহস্যময়ীর কণ্ঠে আয়েগা কোই…

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে দুপক্ষের বহু হতাহত হয়। সীমান্তের এদিক ওদিক দুপক্ষের দখলে আসে প্রতিপক্ষের কিছু এলাকা। তাৎপর্যপূর্ণ, পঁয়ষট্টির যুদ্ধেই ভারতীয় সেনার হামলায় পাকিস্তানি সেনা তাদের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে সরে গিয়েছিল। লাহোরের উপকণ্ঠে এসে থেমে যায় ভারতীয় সেনা। পঁয়ষট্টির যুদ্ধে পাকিস্তান পিছু হটে। পরে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় দুই দেশের মধ্যে সন্ধি হয় ততকালীন সোভিয়েতের তাশখন্দে।