তালিবানি ফতোয়া, পোশাক বদলে ‘হিজাব’ পরলেন সাংবাদিক ক্লারিসা

নিউজ ডেস্ক: গোটা আফগানিস্তান জুড়ে ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে তালিবানদের আক্রমণ এবং তার সঙ্গে আতঙ্ক। আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে তাদের আগ্রাসন দেশজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী। আমেরিকার সামরিক কার্যালয় পেন্টাগনের…

নিউজ ডেস্ক: গোটা আফগানিস্তান জুড়ে ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে তালিবানদের আক্রমণ এবং তার সঙ্গে আতঙ্ক। আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে তাদের আগ্রাসন দেশজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী। আমেরিকার সামরিক কার্যালয় পেন্টাগনের তরফ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছিল, তিনমাসের মধ্যেই কাবুল দখল করে ফেলবে তালিবানরা। কিন্তু কাল দুপুর থেকেই কাবুলে ঢুকে রাজধানী শহর দখল করতে শুরু করে তালিবানরা।

আরও পড়ুন তালিবানরাজে সুরক্ষিত নন মহিলারা, উদ্বেগ প্রকাশ করলেন অভিনেত্রী Rhea Chakraborty

তালিবানদের কাবুল দখল নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক তারকাই এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিশেষ করে আফগানিস্তানে মহিলাদের অবস্থা নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন অনেকে। কারণ দেশ দখলের পর থেকে মহিলাদের ছবি দেওয়া পোস্টার ঢেকে দিতে শুরু করেছে তালিবানরা। ফলে দেশে মহিলাদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন অনেকেই।

ক্লারিসা ওয়ার্ড। তালিবানদের ক্ষমতা দখলের আগে এবং পরে।

এবার সেই ছবিই যেন উঠে এল টিভির পর্দায়। কাবুলের রাস্তায় রিপোর্টিং করছিলেন সিএনএন নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক ক্লারিসা ওয়ার্ড। তালিবানরা কাবুল দখল নেওয়ার আগেই তিনি একই শহর থেকে রিপোর্টিং করেছিলেন, সেদিন তাঁর পরনে ছিল সালোয়ার। কিন্তু তালিবানরা শহর দখল নেওয়ার পরই পোশাক পাল্টেছে তাঁর, এদিন দেখা গেল হিজাব পরে রিপোর্টিং করছেন তিনি। সিএনএন রিপোর্টার ক্লারিসা কাবুল থেকে রিপোর্ট করেছেন যে তাকে একজন মহিলা হওয়ার কারণে পাশে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল তালিবানদের পক্ষ থেকে। এই ছোট্ট আদেশই যেন নিশ্চিত করেছে যে দেশের মহিলাদের জীবন আমূল বদলে গেছে। ক্লারিসা বলছিলেন, “ওরা (তালিবান) শুধু ‘আমেরিকা মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিচ্ছে, যদিও ওদের দেখে বন্ধুত্বপূর্ণ বলেই মনে হচ্ছে।” এই দৃশ্যই অবাক করেছে ক্লারিসাকে।

আরও পড়ুন দেশ দখল করেছে তালিবানরা, আইপিএল খেলা নিয়ে সংশয়ে রশিদ-নবিরা

ক্লারিসা একজন আন্তর্জাতিক পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক। তাঁর ছবি দেখে আফগানিস্তানের অবস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। প্রত্যেকেরই প্রশ্ন, একজন আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়া জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলের সাংবাদিককে যদি তালিবানদের ফতোয়া মেনে নিয়ে ‘সাধারণ পোশাকের’ বদলে হিজাব পরে সাংবাদিকতা করতে হয় এবং শুধুমাত্র মহিলা হওয়ার কারণে তাকে পাশে সরে দাঁড়াতে বলা হয়, তাহলে দেশের সাধারণ মহিলাদের অবস্থা খুব সহজেই অনুমেয়। ক্লারিসাও জানিয়েছেন, তালিবানরা কাবুল দখল করার পর রাস্তায় মহিলাদের চলাচল প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে।

কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি ছবি। ১৯৪০ এর দশকে কাবুলের রাস্তায় হাঁটছেন কিছু তরুণী, প্রত্যেকেরই পরনে আধুনিক পোশাক, স্কার্ট। কিন্তু শতকের শেষে তালিবানরা আসার পরেই ছবিটা বদলে যায়। ক্রমশ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া হয় আফগানিস্তানের মেয়েদের। সেই চিত্রই যেন ধরা পড়ল ক্লারিসা ওয়ার্ডের ভাইরাল ছবিতে।

ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের রাশ নিজের হাতে নিয়েছে তালিবানরা। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। দেশ ছাড়তে শুরু করেছেন অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও। তালিবানদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আফগানিস্তানের আকাশে কোনও অসামরিক বিমানও চলাচল করতে পারবে না।