আফগানিস্তানে তালিবানি পতাকা কেনার হিড়িক, জঙ্গি বিরোধী পঞ্জশির বলছে ‘না’

#Afghanistan নিউজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে একটি ছবি। এতে দেখা যাচ্ছে, কাবুলের রাজপথে এক কিশোরকে সদ্য অধিগ্রহন করা তালিবান পতাকা হাতে যেতে। আফগানিস্তানের…

Afghanistan Taliban National flag,

#Afghanistan
নিউজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে একটি ছবি। এতে দেখা যাচ্ছে, কাবুলের রাজপথে এক কিশোরকে সদ্য অধিগ্রহন করা তালিবান পতাকা হাতে যেতে। আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকা এখন এটি। গত ১৫ আগস্ট তালিবান (Taliban) যখন কাবুল দ্বিতীয়বার দখল করে, কিছু পরেই আফগান জাতীয় পতাকা নামিয়ে দেয়।
তালিবান জঙ্গি অধিকৃত আফগানিস্তানের নতুন নামরণ করা হয়েছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র আফগানিস্তান নাম আর নেই। এর বদলে তালিবান দিয়েছে ইসলামিক আমিরশাহী আফগানিস্তান নাম। প্রচলিত অর্থে দেশটিতে পুরনো আমিরতন্ত্র ফিরিয়েছে তালিবান জঙ্গি সংগঠন।

১৫ আগস্ট তালিবান দখলে কাবুল চলে যাওয়ার পরেই আফগানিস্তানের পূর্বতন জাতীয় পতাকা নিয়ে কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভ হয়েছিল। বিক্ষোভরত আফগানিদের দাবি কোনওভাবেই জাতীয় পতাকা পরিবর্তন করা যাবে না। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তালিবান রক্ষীদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে কয়েকজনের মৃত্যু হয়। তবে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নতুন তালিবানি পতাকা নিতে দেখা গিয়েছে অনেক আফগানিকেই। অতীত স্মৃতি হচ্ছে সদ্য অপসারিত নির্বাচিত সরকারের আমলের পতাকা।

   

বিভিন্ন সময়ে কাবুলের তখতে যারা ক্ষমতা এসেছে তখনই বদলেছে আফগান জাতীয় পতাকা। গত একশ বছরে এই পরিবর্তন হয়েছে অন্তত ১৯ বার। আফগান জাতীয় পতাকার এই পরিবর্তন দেশটির প্রতিটি জমানার একেকটি ইঙ্গিতবাহী দিক মনে করেন গবেষকরা।

কাবুলের সংবাদমাধ্যমেও নতুন তালিবান পতাকা দিয়ে খবর সম্প্রচার শুরু হয় ১৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকেই। সেইদিনই সকাল পর্যন্ত যতক্ষণ কাবুলে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ছিলেন ততক্ষণ আফগান জাতীয় পতাকা উড়েছিল কাবুল প্যালেস ও আইনসভার উপর। তিনি পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন। তালিবান জঙ্গিরা দখল করে নেয় কাবুল। আফগান রাজধানীতে নিজেদের সংগঠনের পতাকা হাতে জঙ্গি তালিবান টহল শুরু হয়। সেই পতাকা এখন সব সরকারি ভবন, আইনসভা ও প্রেসিডেন্ট ভবনে উড়ছে।

কাবুলের সংবাদ মাধ্যমের খবর, ৩১ সেপ্টেম্বরে মার্কিন সেনা পুরোপুরি আফগানভূমি ত্যাগ করার পরই হুড়মুড়িয়ে বেড়েছে তালিবানের কায়দার পোশাক, বোরখা কেনার পালা। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। পাল্লা দিয়ে বিকোচ্ছে নতুন তালিবানি পতাকা। সাধারণ আফগানির মনে রয়েছে সদ্য পুরনো হওয়া পতাকাটি। তবে তারা নিজেদের নিরাপদে রাখতে নতুন পতাকায় মুড়ে নিচ্ছেন।

ব্যতিক্রম আছে। আফগানিস্তানের একমাত্র তালিবান বিরোধী এলাকা পঞ্জশির। সেখানে কোনও তালিবানি শাসন নেই। পঞ্জশিরের শাসক আহমেদ মাসুদ জানিয়েছেন, পিতার মতো তিনিও আফগানিস্তানের কৌলীন্য বজায় রাখতে তালিবান বিরোধী যুদ্ধ চালাবেন। পঞ্জশিরের সিংহ বলে সুপরিচিত আহমেদ শাহ মাসুদ গত তালিবান সরকারের আমলে প্রবল যুদ্ধ করে নিজের এলাকা তালিবান মুক্ত রেখেছিলেন। পরে নাশকতায় তাঁর মৃত্যু হয়।

পিতার মতোই পঞ্জশিরকে তালিবান মুক্ত রাখতে নিজস্ব সেনাবাহিনির প্রস্তুতি শুরু করেছেন জুনিয়র মাসুদ। এখানেই রয়েছেন অপসারিত আফগান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট সামারুল্লাহ। তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট বলে ঘোষণা করেছেন। একমাত্র পঞ্জশিরেই এখনও উড়ছে তালিবানি আমলে সদ্য উপড়ে ফেলা আফগান জাতীয় পতাকা।