কলকাতা: পূর্ব ভারতের সরকারি স্বাস্থ্য পরিসেবায় ইতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল। প্রথমবারের জন্য রোবটিক সার্জারির মতো অত্যাধুনিক পরিষেবা চালু হতে চলেছে রাজ্যের এই প্রিমিয়ার মেডিক্যাল ইনস্টিটিউশনে (SSKM Hospital Robotic Surgery)। সাত কোটি টাকা মূল্যের রোবট ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী মাস থেকেই শুরু হবে রোবটিক অস্ত্রোপচার।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এসএসকেএম-এর নতুন ওপিডি বিল্ডিংয়ের বিশেষ অপারেশন থিয়েটারে রোবটিক আর্ম ও কনসোল প্যানেল বসানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জেনারেল সার্জারি, ইউরোলজি এবং স্ত্রীরোগ বিভাগে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। পরে তালিকায় যুক্ত হবে অর্থোপেডিক্স, নিউরোসার্জারি, শিশু সার্জারি, সিভিসি এবং প্লাস্টিক সার্জারি।
চিকিৎসক ও নার্সদের একটি প্রশিক্ষিত টিম ইতিমধ্যেই তৈরি। দিল্লির এইমস-এ গিয়ে তাঁরা রোবটিক সার্জারির প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং সম্পন্ন করেছেন। স্বাস্থ্যভবনের সূত্র বলছে, করোনা পর্বেই এই প্রকল্পের অনুমোদন দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই থেকে শুরু হয় প্রস্তুতি।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রোবটিক প্রযুক্তিতে অপারেশন অনেক বেশি সূক্ষ্ম, নিরাপদ এবং দ্রুত হয়। রোবটিক আর্ম ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরতে পারে, ফলে চিকিৎসকের পক্ষে দুর্লভ স্থানে অপারেশন করাও সহজ হয়। বয়সজনিত কারণে অপারেশন থেকে বিরত থাকা প্রবীণ চিকিৎসকেরাও এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আবার সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারেন।
সরকারি স্তরে এই প্রযুক্তি চালু হওয়ায় সবচেয়ে বড় লাভবান হবেন সাধারণ ও গরিব রোগীরা। ব্যয়বহুল এই সার্জারি এতদিন শুধুই বেসরকারি হাসপাতালের আওতায় ছিল। এখন এসএসকেএম-এ তা নিখরচায় পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, নতুন চিকিৎসকরাও প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায়।
স্বাস্থ্যকর্তারা আশাবাদী, আগামী পাঁচ বছরে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে অন্তত ২০০–৩০০ জন রোবটিক সার্জেন তৈরি হয়ে উঠবেন। রোগীর সুস্থতা হবে দ্রুত, হাসপাতাল ছাড়ার সময় কমবে—ফলে বেশি সংখ্যক অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হবে অল্প সময়ে। রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় এটি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।