ঘুড়ি ওড়ানোয় সতর্কতা, পুলিশের কড়া নজরে চাইনিজ মাঞ্জা

সারা দেশ জুড়ে ঘুড়ি ওড়ানোর উন্মাদনা আবাল বৃদ্ধ বণিতার (Chinese-Manja)। এবার এই ঘুড়ি ওড়ানোতে হয়েছে সতর্কতা জারি। নিয়ম না মানলে হতে পারে জেল ও। দিল্লির…

chinese-manja banned in India

সারা দেশ জুড়ে ঘুড়ি ওড়ানোর উন্মাদনা আবাল বৃদ্ধ বণিতার (Chinese-Manja)। এবার এই ঘুড়ি ওড়ানোতে হয়েছে সতর্কতা জারি। নিয়ম না মানলে হতে পারে জেল ও। দিল্লির কমলা মার্কেটে নিষিদ্ধ চিনা মাঞ্জার বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।

ডিসিপি (ক্রাইম ব্রাঞ্চ) বিক্রম সিং জানিয়েছেন, “আমরা ১৭০০ টি রোল চিনা মাঞ্জা বাজেয়াপ্ত করেছি এবং দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দিল্লিতে চিনা মাঞ্জা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও চলবে।”

   

এই অভিযান (Chinese-Manja) দুটি পৃথক অপারেশনে পরিচালিত হয়েছে, যথাক্রমে ২৬ জুন কমলা মার্কেটে এবং ২৭ জুন উত্তম নগরের জীবন পার্কে। এই ঘটনায় দুটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং অভিযান এখনও চলছে। এই প্রতিবেদনে আমরা এই অভিযানের বিশদ বিবরণ, পটভূমি, সমাজে এর প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করব।

অভিযানের পটভূমি (Chinese-Manja)

চিনা মাঞ্জা, (Chinese-Manja) যা কাচ-লেপা নাইলন বা সিন্থেটিক সুতো দিয়ে তৈরি, দিল্লিতে ২০১৭ সাল থেকে নিষিদ্ধ। জাতীয় সবুজ ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) এই মাঞ্জার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, কারণ এটি মানুষ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে।

এই সুতোর ধারালো প্রকৃতি গলা কাটা, গুরুতর আঘাত এবং এমনকি মৃত্যুর কারণ হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, গত বছর পশ্চিম দিল্লির পশ্চিম বিহারে একটি সাত বছরের মেয়ের গলা চিনা মাঞ্জায় কেটে যাওয়ায় তার মৃত্যু হয়। এই ধরনের ঘটনার পর থেকে দিল্লি পুলিশ এই নিষিদ্ধ সুতোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে।

স্বাধীনতা দিবস (Chinese-Manja) এবং রাখি উৎসবের আগে ঘুড়ি ওড়ানোর মরশুমে চিনা মাঞ্জার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে অবৈধ বিক্রেতারা বাজারে এই সুতোর সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। ক্রাইম ব্রাঞ্চের তথ্য অনুযায়ী, কমলা মার্কেট এবং উত্তম নগরের জীবন পার্কে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে ইন্সপেক্টর গুরমিত সিং (ইআর-১) এবং ইন্সপেক্টর সুনীল কুমার কালখান্ডে (সিআর) এর নেতৃত্বে দুটি দল কাজ করেছে।

অভিযানের বিবরণ

প্রথম অভিযানটি ২৬ জুন কমলা মার্কেটে পরিচালিত হয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ একটি গুদামে অভিযান চালায় (Chinese-Manja) এবং সেখান থেকে চিনা মাঞ্জার একটি বড় চালান বাজেয়াপ্ত করে। দ্বিতীয় অভিযানটি ২৭ জুন উত্তম নগরের জীবন পার্কে হয়, যেখানে গুদামের মালিক রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Advertisements

এই অভিযানে মোট ১১৭০টি রোল চিনা মাঞ্জা (Chinese-Manja) জব্দ করা হয়েছে। দুটি পৃথক এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ এখনও এই মাঞ্জার উৎস খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত চালাচ্ছে।

ডিসিপি বিক্রম সিং জানিয়েছেন, “চিনা মাঞ্জা বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এই অবৈধ ব্যবসার মূল উৎস খুঁজে বের করতে কাজ করছি।” তিনি আরও বলেন, দিল্লিতে শুধুমাত্র তুলোর সুতো দিয়ে ঘুড়ি ওড়ানোর অনুমতি রয়েছে।

মিতা পালের অলরাউন্ড ম্যাজিক, দ্বিতীয়বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন কলকাতা টাইগার্স

সমাজে প্রভাব

চিনা মাঞ্জার (Chinese-Manja) বিরুদ্ধে এই অভিযান দিল্লির জনগণের মধ্যে নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতা বাড়িয়েছে। এই মাঞ্জা শুধুমাত্র মানুষের জন্যই নয়, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীদের জন্যও মারাত্মক। গত কয়েক বছরে এই সুতোর কারণে বেশ কয়েকটি মৃত্যু এবং গুরুতর আঘাতের ঘটনা ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালে পশ্চিম দিল্লিতে একটি শিশু এবং ২০২২ সালে উত্তর-পশ্চিম দিল্লিতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি চিনা মাঞ্জার কারণে প্রাণ হারিয়েছেন।

এই অভিযান সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়েছে। অনেকে পুলিশের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে শুধুমাত্র বিক্রেতাদের গ্রেপ্তার করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। এই মাঞ্জার উৎপাদন এবং আমদানির উৎস বন্ধ করা প্রয়োজন। এছাড়া, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পুলিশ স্থানীয় সম্প্রদায় এবং বাজার সমিতির সঙ্গে কাজ করছে।

দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের(Chinese-Manja) এই অভিযান চিনা মাঞ্জার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের একটি উদাহরণ। ১৭০০টি রোল বাজেয়াপ্ত এবং দুই অভিযুক্তের গ্রেপ্তার এই অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে পুলিশের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে। তবে, এই সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধানের জন্য উৎপাদন ও সরবরাহের উৎস বন্ধ করা এবং জনসচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। শহীদ দিবসে পশ্চিমবঙ্গে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের প্রতিবাদের মতো, এই ঘটনাও জনগণের নিরাপত্তা ও অধিকারের প্রশ্ন তুলে ধরে।