মহারাষ্ট্র রাজ্য ভারতের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ খরচকারী রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, (Indian-State) এবং মহারাষ্ট্র স্টেট ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (MSEDCL) এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই তথ্য প্রকাশ করেছেন মহাবিতরণের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিএমডি) লোকেশ চন্দ্র, হিনা গম্ভীরের সঙ্গে এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে।
তিনি জানান, মহাবিতরণ (Indian-State) আগামী পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ ক্রয়ে ৬৬,০০০ কোটি টাকার সাশ্রয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ শুল্ক হ্রাস করেছে, যা গ্রাহকদের জন্য উল্লেখযোগ্য সুবিধা নিয়ে আসবে। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে নবায়নযোগ্য শক্তির উপর জোর দেওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি।
মহারাষ্ট্রের বিদ্যুৎ খরচের পরিসংখ্যান
মহারাষ্ট্রে ২০২৩ সালে ইউটিলিটিগুলির বিদ্যুৎ খরচ ছিল ১৫৫,৫১৮ গিগাওয়াট-আওয়ার (GWh), যা ২০২২ সালের ১৪২,০৮৮ GWh থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মহারাষ্ট্র দেশের শীর্ষ বিদ্যুৎ খরচকারী রাজ্য। শিল্প খাত (ক্যাপটিভ সহ) ৪১.৮% এবং গার্হস্থ্য খাত ২৪.৩% বিদ্যুৎ খরচ করে, যা রাজ্যের অর্থনৈতিক ও গৃহস্থালি চাহিদার কাজে লাগে।
মহাবিতরণ ২.৭ কোটির বেশি গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, (Indian-State) যার মধ্যে ৭২.৪% গার্হস্থ্য, ১৬% কৃষি, ৭% বাণিজ্যিক এবং ১.৮% শিল্প গ্রাহক। এই বিশাল গ্রাহক ভিত্তির কারণে মহাবিতরণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম (চীনের স্টেট গ্রিড কর্পোরেশনের পরে) বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা।
বিদ্যুৎ শুল্ক হ্রাসের কারণ
লোকেশ চন্দ্র জানান, মহাবিতরণ (Indian-State) আগামী পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ ক্রয়ে ৬৬,০০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করবে, যা গ্রাহকদের জন্য শুল্ক হ্রাসে সহায়ক হবে। এই সাশ্রয়ের পেছনে প্রধান কারণ হলো নবায়নযোগ্য শক্তির উপর জোর দেওয়া। মহাবিতরণ সৌর, বায়ু, পাম্প স্টোরেজ এবং ব্যাটারি স্টোরেজের মতো সস্তা ও টেকসই শক্তির উৎসের উপর নির্ভর করছে।
তিনি বলেন, (Indian-State) “সৌরশক্তির শুল্ক আগামী ২৫ বছর এবং পাম্প স্টোরেজের শুল্ক ৪০ বছর পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকবে।” এই স্থিতিশীল মূল্যের ফলে বিদ্যুৎ শুল্ক আগামী পাঁচ বছরে বাড়বে না, বরং আরও কমবে। মহারাষ্ট্র বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (এমইআরসি) স্মার্ট মিটার ব্যবহারকারী গার্হস্থ্য গ্রাহকদের জন্য সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতি ইউনিটে ৮০ পয়সা ছাড়ের নির্দেশ দিয়েছে, যা অব্যাহত থাকবে।
শিল্পের জন্য শুল্ক প্রতিযোগিতামূলক
লোকেশ চন্দ্র মহারাষ্ট্রে (Indian-State) শিল্পের জন্য বিদ্যুৎ শুল্ক অন্য রাজ্যের তুলনায় বেশি বলে অভিযোগের জবাবে বলেন, “শিল্পের জন্য দেওয়া ছাড় বিবেচনা করলে মহারাষ্ট্রের শুল্ক ইতিমধ্যে প্রতিযোগিতামূলক। আগামী পাঁচ বছরে এই শুল্ক গুজরাট এবং তামিলনাড়ুর তুলনায় আরও কম হবে।” তিনি জানান, মহাবিতরণ ২০৩৪-৩৫ অর্থবছর পর্যন্ত রাজ্যের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে ৪৫,০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই পরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য শক্তির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মহাবিতরণের পরিকাঠামো (Indian-State)
মহাবিতরণ মহারাষ্ট্রের (Indian-State) ৩.০৮ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৪১,৯২৮টি গ্রাম এবং ৪৫৭টি শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। সংস্থাটির পরিকাঠামোর মধ্যে রয়েছে ৪,০০০-এর বেশি ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন, ২৫,০০০ উচ্চ ভোল্টেজ ফিডার, ৮ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার, ৩.৩০ লক্ষ কিলোমিটার ১১ কেভি লাইন এবং ৫০,০০০ কিলোমিটার ৩৩ কেভি লাইন।
এই বিশাল নেটওয়ার্ক ৭০,০০০-এর বেশি কর্মচারী দ্বারা পরিচালিত হয়। মহাবিতরণ মুম্বাইয়ের কিছু অংশ বাদে পুরো রাজ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, যেখানে বৃহন্মুম্বাই ইলেকট্রিক সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট, টাটা পাওয়ার এবং আদানি ইলেকট্রিসিটি মুম্বাই লিমিটেড কাজ করে।
হঠাৎ ঢ্যাঁড়শের দাম বাড়ায় রীতিমতো চাঞ্চল্য বাজারে, খোঁজ নিলেন বিশেষজ্ঞরা
নবায়নযোগ্য শক্তির উপর জোর
লোকেশ চন্দ্র জানান, মহাবিতরণ নবায়নযোগ্য শক্তি উৎস যেমন সৌর, বায়ু এবং পাম্প স্টোরেজের উপর নির্ভরতা বাড়িয়েছে। মহারাষ্ট্রে বর্তমানে ৬,৯৫৯.৭৬ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য শক্তি ক্ষমতা রয়েছে, যা মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১৪%। মুখ্যমন্ত্রীর সোলার এগ্রিকালচার ফিডার প্রজেক্ট ২.০ এই সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই প্রকল্প কৃষক এবং শিল্প গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।
মহারাষ্ট্রের (Indian-State) বিদ্যুৎ খরচ এবং মহাবিতরণের ভূমিকা রাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতিফলন। লোকেশ চন্দ্রের নেতৃত্বে মহাবিতরণ নবায়নযোগ্য শক্তি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য বিদ্যুৎ শুল্ক কমিয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো মহারাষ্ট্রের শিল্প ও গার্হস্থ্য গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী এবং টেকসই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করবে। আগামী পাঁচ বছরে শুল্ক আরও হ্রাসের সম্ভাবনা রাজ্যের অর্থনীতি ও জনগণের জন্য ইতিবাচক ভবিষ্যৎ নির্দেশ করে।