কলকাতা: ২০১৪ সালে প্রথমবার লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদে পা রেখেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এরপর টানা তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হয়ে ডায়মন্ড হারবারের উন্নয়নে নিজেকে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রেখেছেন। এবছর, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রেকর্ড ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়ে নজর কেড়েছেন সারা রাজ্যের রাজনীতির অঙ্গনে।
আগামী ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই নিজের সংসদীয় এলাকার ১১ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আজ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়া বিধানসভার বিষ্ণুপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর বোরহানপুর স্কুল ফুটবল মাঠে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবেন নিজের লেখা বই ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ (Silent Revolution)।
তৃণমূলের একাধিক নেতার মতে, এই বই শুধুমাত্র ডায়মন্ড হারবারের উন্নয়ন প্রকল্পের খতিয়ানই নয়, বরং ভবিষ্যতের দিশাও নির্দেশ করবে। দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার নেতারা বলছেন, “গত এগারো বছরে ডায়মন্ড হারবারের চেহারা আমূল বদলে গিয়েছে। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থা—প্রতিটি ক্ষেত্রে অভিষেকের উদ্যোগেই উন্নয়ন ঘটেছে। সেই কারণেই এই বইয়ের নাম ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’। কারণ তিনি প্রচার নয়, কাজেই বিশ্বাসী।”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বইয়ের মাধ্যমে তাঁর সাংসদ জীবনের সাফল্য ও কাজের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতে চলেছেন।
তবে এই বই প্রকাশ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। বিজেপি শিবির ইতিমধ্যেই কটাক্ষ করতে শুরু করেছে। তাঁদের অভিযোগ, “এটি নিছকই রাজনৈতিক প্রচারের অংশ। মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা মাত্র।”
এই কটাক্ষের জবাবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ড হারবারের একজন সফল সাংসদ। মানুষ তাঁকে ভালবেসে, আশীর্বাদ করে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস বিজেপির বড় বড় নেতাদেরও নেই। উন্নয়ন যখন চোখে পড়ছে, তখন বিজেপি নেতৃত্ব কটাক্ষ করছে। কিন্তু মানুষ সব জানে।”
তিনি আরও বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের কাজের খতিয়ান তুলে ধরছেন। এতে যদি বিজেপির গা জ্বলে, তা হলে আমরা কিছু করতে পারবো না। উনি ডায়মন্ড হারবারকে যে ভাবে উন্নয়ন করেছেন, তাতে মানুষও খুশি।”
এদিকে, দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগঠনের কর্মীরাও এই বই প্রকাশকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত। তাঁদের মতে, “‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ শুধু একটা বই নয়, এটা এক দশকের উন্নয়ন যাত্রার দলিল।”
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আগামী বিধানসভা ভোটের আগেই এই বই দলের নির্বাচনী প্রচারে বড় ভূমিকা নিতে পারে। কারণ তাতে কেবল সাংসদের কাজের খতিয়ানই নয়, এলাকাবাসীর উন্নয়নের চিত্রও ফুটে উঠবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যের শাসকদলের এই পদক্ষেপ বিজেপি-সহ বিরোধীদের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী দিনে ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ শুধু বই নয়, তৃণমূলের ভোট কৌশলেরও বড় হাতিয়ার হতে চলেছে।