কোচবিহারে জোরদার মিছিলে ২১ জুলাই প্রস্তুতি

অয়ন দে, কোচবিহার: ২১ জুলাই শহীদ দিবস সভাকে (21 July Shahid Diwas) কেন্দ্র করে গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রস্তুতি জোরদার হয়ে উঠেছে। এই প্রস্তুতিরই…

Trinamool Congress Gears Up for 21 July Shahid Diwas with Massive Rally in Cooch Behar

অয়ন দে, কোচবিহার: ২১ জুলাই শহীদ দিবস সভাকে (21 July Shahid Diwas) কেন্দ্র করে গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রস্তুতি জোরদার হয়ে উঠেছে। এই প্রস্তুতিরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মঙ্গলবার কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের পানিশালা অঞ্চলের লটকারপার বুথে একটি জোরদার মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলটি তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকদের উৎসাহের একটি প্রকাশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি দলের শক্তি ও ঐক্যের পরিচয় দিয়েছে।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বুথ সভাপতি জাহানুর আলম এবং অঞ্চলের নেতৃত্বসহ অসংখ্য কর্মী ও সমর্থক। মিছিলটি লটকারপার এলাকার বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে পরিক্রমা করে, যেখানে তৃণমূলের পতাকা, ব্যানার এবং স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। স্থানীয় জনগণের উৎসাহী অংশগ্রহণে মিছিলটি আরও গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই মিছিল শুধু একটি প্রস্তুতির অংশ নয়, বরং তৃণমূলের গ্রামীণ ভিত্তির শক্তি প্রকাশের একটি প্রমাণ।

   

মিছিল শেষে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন বুথ সভাপতি জাহানুর আলম। তিনি বলেন, “২১ জুলাই আমাদের কাছে কেবল আবেগের দিন নয়, এটি একটি লড়াইয়ের ইতিহাস। শহীদ দিবস আমাদের দলীয় ঐক্য, ত্যাগ এবং ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির দিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা কোচবিহার থেকে হাজার হাজার কর্মী নিয়ে কলকাতায় যাব, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং জনতার কণ্ঠস্বর জোরালো করতে।” তিনি আরও যোগ করেন, “যারা ভাবছে তৃণমূল পিছিয়ে যাচ্ছে, তারা ভুল করছে। এই মাঠে নেমে থাকা জনতাই প্রমাণ করে দিচ্ছে—তৃণমূল ছিল, আছে, এবং আগামী দিনেও থাকবে।”

২১ জুলাই শহীদ দিবস তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য একটি বড় ও প্রতীকীয় ঘটনা। ১৯৯৩ সালে কলকাতায় পুলিশের গুলিতে ১৩ যুবকের মৃত্যু ঘটেছিল, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন যুব কংগ্রেসের নেতৃত্বে ছিলেন। এই ঘটনাটি তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একটি মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল এবং পরে তিনি তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতি বছর এই দিনে শহীদদের স্মরণে কলকাতায় একটি বৃহৎ র‍্যালি আয়োজন করা হয়, যা দলের শক্তি ও জনসমর্থনের একটি প্রকাশ।

Advertisements

কোচবিহারে এই মিছিলটি শুধু প্রস্তুতিরই অংশ নয়, বরং উত্তর বঙ্গের জনগণের তৃণমূলের প্রতি ভক্তি ও নিষ্ঠার প্রতিফলন। উত্তর বঙ্গে তৃণমূলের প্রভাব বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে, এবং এই মিছিল সেই প্রভাবের একটি উদাহরণ। জাহানুর আলমের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, দলের কর্মীরা এবারের শহীদ দিবস র‍্যালিতে রেকর্ড ভাঙা উপস্থিতির লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি জানান, কোচবিহার থেকে বড় সংখ্যক কর্মী কলকাতায় যোগ দেবে, যা দলের জনগোষ্ঠীর শক্তি বাড়াবে।

তৃণমূলের এই প্রস্তুতি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দৃষ্টিতে এই র‍্যালি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলটি রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল, বিশেষ করে উত্তর বঙ্গে তার ভিত্তি শক্ত করতে চায়। কোচবিহারে এই মিছিলটি সেই উদ্দেশ্যের একটি অংশ।

মিছিলের সময় স্থানীয় জনগণের উষ্ণ প্রতিক্রিয়া এবং কর্মীদের উদ্যম দেখে মনে হচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস এবারের শহীদ দিবস র‍্যালিতে একটি ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জনের পথে। জাহানুর আলমের কথায়, “এই জনতাই আমাদের শক্তি, এই জনতাই আমাদের ভবিষ্যত।” তাই এই প্রস্তুতি শুধু একটি র‍্যালির জন্য নয়, বরং তৃণমূলের রাজনৈতিক ভবিষ্যত গড়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।