হুগলির চুঁচুড়ার পিপুলপাতিতে দলীয় অনুষ্ঠানে এসে রাজ্য রাজনীতিতে চলমান বিতর্ক নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী সদস্য রাহুল সিনহা (Rahul Sinha)। সম্প্রতি বিজেপির কিছু নেতাকে ঘিরে নতুন রাজনৈতিক দলের গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল সিনহা সাফ জানিয়ে দেন—এটা সম্পূর্ণ তৃণমূল কংগ্রেসের চাল, আসল সত্যি হলো বিজেপি ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী।
রাহুলের কথায়, “যে নতুন দলের কথা বলা হচ্ছে, সেটার কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। এটা কুনাল ঘোষের মত তৃণমূলের দালালদের চাল। বিজেপির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে। কিছু মিডিয়া তাদের কথায় প্রভাবিত হয়ে এসব রটাচ্ছে। কদিনের মধ্যেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। বিজেপি ঐক্যবদ্ধ ছিল, আছে, এবং থাকবে।”
কালিয়াগঞ্জ নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ
কালিয়াগঞ্জ উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাহুল বলেন, “কালিয়াগঞ্জ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা। সেখানে আমরা জিতব এমন আশাই করিনি। তবে আমরা তৃণমূলকে টক্কর দিয়ে দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছি। আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গোটা রাজ্যে কালিয়াগঞ্জের মতো সব আসন হবে না। এমন অনেক বিধানসভা আছে, যেখানে বিজেপি নিশ্চিত জিতবে।”
তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল সরকার ঘাটালের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে বাধা সৃষ্টি করছে। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য রাজ্য সরকার জমি দেয়নি। তাহলে কি কেন্দ্র দেবের বাড়ি গিয়ে বাধ দেবে? কালীঘাটে মমতার বাড়িতে গিয়ে বাধ দেবে? উন্নয়নকে বারবার রাজনীতি দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল সরকার। কেন্দ্র কখনও ধর্ম বা জাত দেখে উন্নয়ন করে না। রাজ্য সরকার শুধু টাকা চায়, কাজ করতে জানে না।”
পুরনো নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা প্রসঙ্গে
অনেক বিজেপি পুরনো নেতাকে রাজ্য রাজনীতিতে এখন কম সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাহুল বলেন, “দল চলতে গেলে অনেক রকম পরিকাঠামো তৈরি করতে হয়। দাবা খেলায় যেমন কখনো ঘোড়া সামনে যায়, কখনো মন্ত্রী পিছিয়ে যায়—তা বলে কি মন্ত্রী মূল্যহীন? রাজনীতিও একটা কৌশলের খেলা। কে কোথায় সক্রিয় থাকবেন, সেটা দলের কৌশলের অংশ।”
তিনি স্পষ্ট বলেন, “বিভাজনের কোনও জায়গা নেই। যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তারা বিজেপির শত্রু। তৃণমূল সরকার আজও দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্রে ভরা। সাধারণ মানুষ আগামী দিনে তার জবাব দেবে।”