২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবসে নন্দীগ্রামে মোদীর জনসভার সম্ভাবনা

আগামী ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) বঙ্গ সফরের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সূত্রের খবর, এই দিনে নন্দীগ্রামে একটি জনসভার আয়োজন…

Narendra Modi in Nandigram Rally

আগামী ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) বঙ্গ সফরের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সূত্রের খবর, এই দিনে নন্দীগ্রামে একটি জনসভার আয়োজন করতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এই কর্মসূচির পরিকল্পনায় রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ ই সফরের মাধ্যমে বিজেপি রাজ্যে তাদের রাজনৈতিক উপস্থিতি আরও জোরদার করার লক্ষ্য নিয়েছে৷ বিশেষ করে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে।

পশ্চিমবঙ্গ দিবস, যা ১৯৪৭ সালে বঙ্গভাগের সিদ্ধান্তকে স্মরণ করে, গত কয়েক বছর ধরে বিজেপির কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার এই দিনটিকে রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালনের নির্দেশ দিয়েছিল, যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এর বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি এই দিনটিকে বাঙালির জন্য “লজ্জার দিন” বলে অভিহিত করেছিলেন, কারণ এটি বাংলার বিভাজনের স্মৃতি বহন করে। তবে, বিজেপি এই দিনটিকে হিন্দুত্ববাদী আখ্যানের সঙ্গে যুক্ত করে প্রচার চালিয়েছে, এবং এবার নন্দীগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা এই প্রচারকে আরও তীব্র করতে পারে।

   

নন্দীগ্রাম বিজেপির জন্য রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। ২ ০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারী এখান থেকে মমতা ব্যানার্জীকে পরাজিত করেছিলেন, যা বিজেপির জন্য একটি বড় বিজয় ছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সম্ভাব্য সফরের মাধ্যমে দলটি নন্দীগ্রামকে কেন্দ্র করে রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলে তাদের সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে এক্স-এ, এই সফর নিয়ে উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “মোদীজির নন্দীগ্রাম সফর বাংলায় বিজেপির শক্তি বাড়াবে। এটা তৃণমূলের জন্য বড় ধাক্কা হবে।”

প্রধানমন্ত্রী মোদী, যিনি ২০১৪ সাল থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তৃতীয় মেয়াদে ২০২৪ সালের ৯ জুন শপথ নিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচির উপর জোর দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে তাঁর সফরগুলো সবসময়ই রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৫ সালের মে মাসে তিনি রাজ্যে এসেছিলেন, যা বিজেপির রাজ্য ইউনিটের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক ছিল। এবারের সম্ভাব্য সফরে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি বা উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধাগুলো তুলে ধরতে পারেন।

Advertisements

তবে, এই কর্মসূচি নিয়ে বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসের তীব্র প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মমতা ব্যানার্জী ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের বিরোধিতা করেছেন, এবং নন্দীগ্রামে মোদীর জনসভা তৃণমূলের জন্য রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর বিজেপির হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা এবং তৃণমূলের বাঙালি পরিচয়ের আখ্যানের মধ্যে একটি নতুন সংঘাতের সূচনা করতে পারে।

এই জনসভা এখনও পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে, এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায়। তবে, এটি যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মঞ্চে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হবে। বিজেপি এই সফরের মাধ্যমে রাজ্যে তাদের সমর্থন বাড়ানোর পাশাপাশি ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য প্রচার শুরু করতে পারে। আপনি কি মনে করেন? মোদীর এই সম্ভাব্য সফর কি বাংলার রাজনীতিতে নতুন মোড় আনবে?