মাত্র ১১ উইকেট, তবুও কোটি কোটি টাকা! তোলপাড় ক্রিকেটবিশ্ব

ক্রিকেট মানেই শুধু খেলা নয়, এখনকার দিনে এটি একটি দারুণ আয়ের মাধ্যমও। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর মধ্যে আইপিএল (IPL) সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে বেশি…

Jofra Archer taken 11 wickets in IPL 2025

ক্রিকেট মানেই শুধু খেলা নয়, এখনকার দিনে এটি একটি দারুণ আয়ের মাধ্যমও। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর মধ্যে আইপিএল (IPL) সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে বেশি অর্থপ্রদানকারী লিগ। ২০২৫ আইপিএলও (IPL 2025) তার ব্যতিক্রম নয়। প্রতিটি দলের তারকা খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক এবং ম্যাচ ফি নিয়ে ভক্তদের কৌতূহলের শেষ নেই। এমনই এক বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে রাজস্থান রয়্যালসের (Rajasthan Royals) হয়ে খেলা ইংল্যান্ডের গতিময় পেসার জোফরা আর্চারকে (Jofra Archer) ঘিরে।

রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলতে নামা আর্চার এবারের আইপিএলে মাঠে নেমেছেন ১২ ম্যাচে। মোট উইকেট সংগ্রহ করেছেন মাত্র ১১টি। সংখ্যাটা শুনে হয়তো অবাক হবেন না, কিন্তু অবাক হবেন যদি জানেন এই ১১টি উইকেটের জন্য তিনি রোজগার করেছেন প্রায় ১২.৪৩ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রতি উইকেট পিছু ১.১৩ কোটি টাকা করে।

   

রাজস্থানের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিদেশি

রাজস্থান রয়্যালস এবার জোফরা আর্চারকে দলে নিতে ব্যয় করেছে ১২.১০ কোটি টাকা। এছাড়া প্রতিটি ম্যাচে অংশগ্রহণের জন্য ম্যাচ ফি-ও রয়েছে। ১২ ম্যাচ খেলে যে অতিরিক্ত ফি তিনি পেয়েছেন, তার হিসেব মেলালে দেখা যায়, মোট রোজগারের অঙ্ক ১২.৪৩ কোটি টাকার কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে—মাত্র ১১টি উইকেটের জন্য এত বিশাল অঙ্কের পারিশ্রমিক, সত্যিই কি এটি সঠিক বিনিয়োগ?

পরিসংখ্যান কি বলছে?

ক্রিকেট বিশ্বে উইকেট নেওয়া মানেই শুধু প্রতিপক্ষকে ব্যাকফুটে পাঠানো নয়, বরং ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার অন্যতম চাবিকাঠি। আর্চারের গতি, লাইন এবং লেংথ নিখুঁত হলে তিনি একাই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারেন। যদিও এবারের মরসুমে রাজস্থান রয়্যালস শেষ পর্যন্ত প্লে-অফে যেতে পারেনি, তবুও আর্চারের পারফরম্যান্স অনেক সময়েই দলের ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছিল।

তবে আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একজন ফাস্ট বোলারকে ধরে রাখার জন্য দলগুলিকে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হয়—এই বাস্তবতাও অস্বীকার করা যায় না। ইনজুরিপ্রবণ হলেও আর্চারের মতো বোলারদের দলে রাখা মানেই বাড়তি নিরাপত্তা।

Advertisements

তুলনায় কে কোথায়?

এই মরসুমে ভারতের বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যানও ব্যাট-পিছু লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার করেছেন। ঋষভ পন্থ, শ্রেয়স আইয়ার, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, নিলামের মধ্যে দিয়ে আয়ও করেছেন মোটা অঙ্ক। বিদেশিদের মধ্যে কুইন্টন ডিক’ক, লিয়াম লিভিংস্টোন, ফ্যাফ ডুপ্লেসি, ফিল সল্টের মতো খেলোয়াড়রাও রানের বিপরীতে কোটি টাকার রোজগার করেছেন। তবে বোলারদের তালিকায় জোফরা আর্চার একাই শীর্ষে।

একটা বিষয় পরিষ্কার, আর্চারের মতো একজন বোলার শুধুমাত্র পারফরম্যান্সের দিক থেকেই নয়, ব্র্যান্ড ভ্যালু ও আন্তর্জাতিক খ্যাতির দিক থেকেও বড় একটি নাম। রাজস্থান রয়্যালস তাঁকে এত টাকা দেওয়ার ঝুঁকি নিয়েছে কারণ তাঁরা জানেন, একবার ছন্দে এলে আর্চার যে কোনও ম্যাচে গেম চেঞ্জার হয়ে উঠতে পারেন।

তবে এও ঠিক, ভবিষ্যতে যদি তাঁর ফর্মে ধারাবাহিকতা না থাকে বা ইনজুরির কারণে ম্যাচ সংখ্যা কমে যায়, তাহলে প্রতি উইকেট বাবদ এই বিশাল খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন ভক্ত ও বিশেষজ্ঞরা।

আইপিএল মানেই চমক। আর এবারের সবচেয়ে আলোচনায় থাকা নাম জোফরা আর্চার। প্রতিটি উইকেটের জন্য ১.১৩ কোটি টাকার পারিশ্রমিক নিয়ে তিনি শুধু অর্থের দিক থেকেই নয়, আলোচনার শীর্ষেও রয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, আগামী মরসুমে তিনি আরও বড় কিছু করে দেখাতে পারেন কিনা, নাকি এই আয়টাই থেকে যাবে তাঁর আইপিএল কেরিয়ারের সবচেয়ে চমকপ্রদ অধ্যায় হিসেবে।