Spa Centers Are Replacing: কাম, যৌনতা—শারীরিক চাহিদার এই দুই শব্দ এখন আর শুধু চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সমাজে একদিকে বিয়ের মতো প্রতিষ্ঠান যৌনতার বৈধতা দেয়, অন্যদিকে যৌনতাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে চোরাগোপ্তা বাজার। একসময়ের নামকরা যৌনপল্লি ‘সোনাগাছি’ এখন যেন ছড়িয়ে পড়েছে অলিতে-গলিতে, পাড়ায় পাড়ায়। এক নতুন মোড় নিয়েছে এই কারবার—‘স্পা সেন্টার’ কিংবা ‘ম্যাসাজ পার্লার’-এর নামে।
নাম আধুনিক, চেহারা কর্পোরেট। বহিরঙ্গে ঝকঝকে কাচের দরজা, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, সুন্দর চেয়ার, রঙিন আলো—সবকিছুতেই আভিজাত্যের ছোঁয়া। কর্মীরাও কর্পোরেট পোশাকে সজ্জিত, সদা প্রস্তুত ‘কাস্টমার সার্ভিস’-এ। কিন্তু এই আড়ালের আসল গল্পটা অনেকটাই আলাদা। এইসব ‘স্পা সেন্টার’-এর প্রায় ৯৭ শতাংশেই চলে অবৈধ যৌনতা বাণিজ্য। টাকার বিনিময়ে শরীর বিক্রির এই চক্র এখন অত্যন্ত সংগঠিত, সুচারু ও লাভজনক।
এখন শহরের কেন্দ্র থেকে শহরতলি—প্রায় সর্বত্র গজিয়ে উঠেছে এই স্পা সেন্টার। অতি সাধারণ একটি এলাকা, যেখানে সামান্য জমজমাট বাজার আছে, সেখানেই একাধিক সেন্টার তৈরি হয়েছে। ক্লায়েন্টের সংখ্যা বেশি না হলেও, ব্যবসা বন্ধ হয় না। কারণ, প্রতিটি ‘সেলুন’-এর আয়ের উৎস শুধুমাত্র চুল-দাড়ি কাটাই নয়—এর অনেক গভীরে চলতে থাকে যৌনতা কেনাবেচা।
যে প্রশ্নটা প্রায়শই ওঠে—এই সেলুনে মহিলা কর্মীরা কী করেন? উত্তরটা খুব ‘রাজনৈতিকভাবে সঠিক’। বলা হয়, মহিলারাও এখন চুল-দাড়ি কাটাতে পারেন। নারী-পুরুষ সমান। কেউ ছোট নয়। এই নারীবাদী বক্তব্যের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় যৌন ব্যবসার আসল রূপ। বলা হয়, এটি ‘বিউটি সার্ভিস’। তবে বাস্তবে সেবা নিতে আসা মহিলা খদ্দেরের দেখা মেলে না বললেই চলে।
এইসব স্পা সেন্টারের টার্গেট মূলত পুরুষ গ্রাহকরা। নানা বয়সের, নানা পেশার, সমাজের সব স্তরের পুরুষেরা এখানে যান। ছাত্র, কর্মচারী, ব্যবসায়ী—কেউ বাদ যায় না। আধার কার্ড যাচাই হয় না, বয়স দেখার কোনও বাধ্যবাধকতাও নেই। ম্যাসাজের অজুহাতে শরীরের দরজায় এসে পৌঁছে যায় যৌনতা।
তবে প্রশ্ন উঠে, এই অবৈধ ব্যবসা কীভাবে এত অবাধে চলছে? উত্তর একটাই—প্রশাসনের মদত। রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশের একাংশের মাসোহারা নিয়ে নির্বিঘ্নেই চলছে এই ‘কর্পোরেট যৌনপল্লি’র কারবার। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে এই ব্যবস্থা এমন এক ইকো সিস্টেম তৈরি করেছে, যেখানে সব পক্ষই উপকৃত। ব্যবসায়ী মুনাফা পান, কর্মীদের আয় বাড়ে, আর প্রশাসনের একাংশ পায় নিরবচ্ছিন্ন পকেটমানি।
এক সময় সংবাদপত্রে রোজ উঠে আসত মধুচক্রের পর্দাফাশ। হাতেনাতে ধরা পড়তেন কর্মী ও খদ্দেররা। এখন সে ছবি অতীত। মিডিয়ার চোখ এড়িয়ে চলছে ব্যবসা। কেউ বাধা দেয় না, কেউ প্রতিবাদও করে না। কারণ, সবাই খুশি।
তবে সবকিছু এতটা সরলও নয়। এই ব্যবসার পিছনে রয়েছে নানা স্তরের সমন্বয়, ক্লায়েন্ট হ্যান্ডলিং থেকে শুরু করে নিরাপত্তা, প্রশাসনের সঙ্গ পাওয়া—সবটাই একটা শক্ত কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে। সহজে যৌনতা বেচা যায় না, এর পেছনে থাকে কঠিন লড়াই। সেই লড়াই, সেই ভিতরের দুনিয়া কেমন? কীভাবে চলে কর্পোরেট যৌনপল্লির ভিতরের খেলা?
এইসব নিয়ে আরও বিস্তারে আসছি পরবর্তী পর্বে।