ভারতীয় সেনাবাহিনী (indian-army) আজ স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত ১০ মে স্থাপিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির কোনো মেয়াদ শেষ হচ্ছে না। এছাড়াও, কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবর যে আজ সামরিক অপারেশনের ডিজিএমও পর্যায়ে আলোচনা হবে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে নাকচ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী।
কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই (indian-army)
গত ১২ মে ভারত ও পাকিস্তানের ডিজিএমও-(indian-army)দের মধ্যে হটলাইনে আলোচনার মাধ্যমে যে চুক্তি হয়েছিল, তা এখনও বলবৎ রয়েছে এবং এর কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আজ কোনো ডিজিএমও আলোচনার পরিকল্পনা নেই।
১২ মে ডিজিএমও-(indian-army)দের আলোচনায় যে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার কোনো মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয় নেই।” এই বিবৃতি এমন সময়ে এলো যখন সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টা চলছে এবং দুই দেশই শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির পটভূমি
গত ১০ মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে চার দিনের তীব্র সীমান্ত সংঘর্ষের অবসান ঘটে। এই সংঘর্ষে দুই পক্ষই ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করে একে অপরের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেছিল।
এই ঘটনা বৃহত্তর সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছিল। তবে, পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি ১০ মে সন্ধ্যায় ঘোষণা করেন যে, ভারত ও পাকিস্তান স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে সমস্ত গোলাগুলি এবং সামরিক কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করার বিষয়ে একমত হয়েছে।
ডিজিএমও আলোচনা: শান্তির প্রতিশ্রুতি
১২ মে ভারতের ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই (indian-army)এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ হটলাইনে প্রায় ৪৫ মিনিটের একটি আলোচনা করেন। এই আলোচনায় দুই পক্ষ সীমান্তে আরও সামরিক উত্তেজনা রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে একমত হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিবৃতি অনুসারে, দুই পক্ষই “আক্রমণাত্মক ও শত্রুভাবাপন্ন” কার্যকলাপ এড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এমনকি একটি গুলি চালানো থেকেও বিরত থাকার বিষয়ে সম্মত হয়েছে তারা। এছাড়াও, সীমান্ত ও অগ্রবর্তী এলাকায় সৈন্য সংখ্যা কমানোর জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে, যা উত্তেজনা হ্রাসের একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ।
অপারেশন সিঁদুর : সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান
এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে একটি জঙ্গি হামলার পর। এই হামলার জবাবে ভারত ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর (indian-army)পরিচালনা করে পাকিস্তানের জন্য ঘাঁটিগুলির উপর উপর নির্ভুল হামলা চালায়। এরপর পাকিস্তান ৮, ৯ এবং ১০ মে ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণের চেষ্টা করে।
ভারত এই আক্রমণের জোরালো জবাব দেয় এবং পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনা, যার মধ্যে বিমানঘাঁটি, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং রাডার সাইটগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
ছুটির দিনে সস্তা হল সবজির দাম! হাসি ফুটল ক্রেতা থেকে বিক্রেতার
যুদ্ধবিরতির গুরুত্ব
এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে এই চুক্তি শান্তি ও স্থিতিশীলতার একটি সুযোগ তৈরি করেছে। বিশেষ করে, সীমান্তে সৈন্য কমানো এবং আক্রমণাত্মক কার্যকলাপ বন্ধের প্রতিশ্রুতি উভয় দেশের জন্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ।
গুজব ও বিভ্রান্তি
কিছু সংবাদমাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার খবর প্রচারিত হয়েছিল, যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্পষ্টীকরণ এই গুজবের অবসান ঘটিয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ১২ মে-র চুক্তি এখনও কার্যকর এবং এটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি কতদিন স্থায়ী হবে, তা নির্ভর করবে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা ও প্রতিশ্রুতি পালনের উপর। উভয় দেশের ডিজিএমও-(indian-army)দের আলোচনা এবং সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার প্রচেষ্টা একটি আশাব্যঞ্জক শুরু। তবে, দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য আরও কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।
এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং সেনাবাহিনীর স্পষ্টীকরণ ভারত ও পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। সীমান্তে শান্তি বজায় থাকলে উভয় দেশই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে মনোযোগ দিতে পারবে।