Chinese pneumonia outbreak: করোনার মতো নিউমোনিয়া বিস্ফোরণ, চিনে প্রবল আতঙ্ক

করোনা মহামারির যন্ত্রণায় ভুগছে গোটা বিশ্ব। চিন থেকে উদ্ভূত প্রাণঘাতী রোগটি গোটা বিশ্বে রীতিমতন ধ্বংস ডেকে এনেছিল। এবার নতুন আতঙ্ক সেই চিনে । উত্তর চীনের…

Chinese pneumonia

করোনা মহামারির যন্ত্রণায় ভুগছে গোটা বিশ্ব। চিন থেকে উদ্ভূত প্রাণঘাতী রোগটি গোটা বিশ্বে রীতিমতন ধ্বংস ডেকে এনেছিল। এবার নতুন আতঙ্ক সেই চিনে । উত্তর চীনের লিয়াওনিংয়ে একটি রহস্যময় নিউমোনিয়া (Chinese pneumonia) শনাক্ত হয়েছে, যার কারণে বিপুল সংখ্যক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর উপচে পড়া ভিড়। এই নিউমোনিয়ার সংবেদনশীলতার কথা বিবেচনা করে ProMED আবারও সতর্কতা জারি করেছে, যারা প্রথম করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বিশ্বকে সতর্ক করেছিল।

২০১৯ সালে উহান শহরে প্রথম কোভিড ভাইরাস শনাক্ত হয়। তারপর ধীরে ধীরে ভাইরাসটি পুরো শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, তারপর দেশ ও গোটা বিশ্বে। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। তখন ProMED প্রথম করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বিশ্বকে তথ্য দিয়েছিল। এটি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা সংক্রামক রোগ পর্যবেক্ষণ করে, যার সদর দফতর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে অবস্থিত।

ProMED করোনাভাইরাসকেও প্রাথমিক পর্যায়ে রহস্যময় নিউমোনিয়া হিসেবেও বর্ণনা করেছে। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর চিনের উহানে ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’র প্রাদুর্ভাব নিয়ে সতর্কতা জারি করে সংস্থাটি। পরে ভাইরাসটির নামকরণ করা হয় কোভিড-১৯।এরপর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো ভাইরাসটি নিয়ে কাভারেজ শুরু করে।প্রকাশ করে যে, চিনে এক মুহূর্তে হাজার হাজার মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটিকে মহামারী ঘোষণা করে এবং ততক্ষণে ভাইরাসটি ২১২টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তিন মাসে কমবেশি ৩০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়।

ProMED আবার নিউমোনিয়া সতর্কতা জারি করেছে

উত্তর চিনের লিয়াওনিং প্রদেশে আরেকটি রহস্যময় নিউমোনিয়ার সন্ধান পেয়েছে ProMED। বেইজিং, লিয়াওনিং এবং চিনের অন্যান্য প্রদেশের শিশু হাসপাতালগুলিতে বাড়ছে ভিড়। স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিশুর পরিবারগুলো চরম আতঙ্কে রয়েছে। তারা প্রশাসনকে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেছে নিউমোনিয়ার আড়ালে অন্যকিছু আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে না তো।

জানা গিয়েছে, অজানা রোগে আক্রান্তদের জ্বর হচ্ছে, সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে ফুসফুসে, শ্বাসকষ্টও হচ্ছে। তবে মূলত শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে এই রোগে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এখনও এই রোগটি ছড়ায়নি।

কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করার পরে আবার নতুন উদ্বেগ ছড়িয়েছে

ভাইরাসটি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটির মতে, চিন সম্প্রতি করোনা মহামারির বিধিনিষেধ শিথিল করেছে এবং তার পরেই এ ধরনের ঘটনা সামনে আসছে। এ বছর ইনফ্লুয়েঞ্জা, মাইকোপ্লাজমা এবং ব্রঙ্কোনিউমোনিয়ার মতো সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই ‘অজানা নিউমোনিয়া’ সম্বন্ধে চিনের থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থা। WHO-এর তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন এবং জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ প্রশাসনের সহায়তায় ‘চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ এবং বেজিং চিলড্রেনস হাসপাতালের সঙ্গে টেলি কমিউনিকেশনের মাধ্যমে কথা হয়েছে।

WHO একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘চিনের তরফে জানানো হয়েছে, বেজিং এবং লিয়াওনিংয়ে কোনও অস্বাভাবিক বা অভিনব প্যাথোজেন সনাক্ত করা যায়নি। বরং পরিচিত ভাইরাসেই শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এমনকী শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে মাত্রাতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করা হয়েছে চিনের তরফে।’

লিয়াওনিং চিনের রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ProMED-র মতে, ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে বেইজিং এবং লিয়াওনিংয়ে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে উহান শহরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। ভাইরাসটি আসলে কোথা থেকে এসেছে এবং কীভাবে ছড়িয়েছে তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ নিয়ে কাজ করছে।