Nipah Virus: রাতে বাদুড়ের হানায় খেজুর রসে মিশছে নিপা ভাইরাস, বাংলাদেশে জারি সতর্কতা

ঢাকা: শীতকাল মানেই খেজুরের রস। এই রস দিয়ে পিঠে, পায়েসও তৈরি করা হয়। তবে কাঁচা খেজুরের রস পান নিরাপদ নয়। কারণ রসের মাধ্যমেই আপনি নিপা…

ঢাকা: শীতকাল মানেই খেজুরের রস। এই রস দিয়ে পিঠে, পায়েসও তৈরি করা হয়। তবে কাঁচা খেজুরের রস পান নিরাপদ নয়। কারণ রসের মাধ্যমেই আপনি নিপা ভাইরাসে (Nipah Virus) আক্রান্ত হতে পারেন। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা শহরের নিপা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। মূলত খেজুরের খোলা রসে বাদুরের লালার সংস্পর্শ থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

বাংলাদেশের নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুস্থ থাকতে গত সপ্তাহে জরুরী সর্তকতা জারি করেছে স্বাস্থ্য দপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। এমন কি কেউ কাঁচা রস খেতে চাইলে তা বিক্রি না করতে অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিশেষজ্ঞরা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে সমস্ত প্রাণঘাতী সংক্রামক ব্যাধিকে অগ্রাধিকার দেয় তাদের অন্যতম নিপা ভাইরাস। এই ভাইরাস পরবর্তী মানবজাতির জন্য মহামারীর আকারও নিতে পারে। জানা যায়, নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার ৪০ থেকে ৭১ শতাংশ। অন্যদিকে কোভিড আক্রান্তদের মৃত্যুর হার নিপা ভাইরাসের থেকে অনেকটাই কম। মাত্র দুই থেকে তিন শতাংশ।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের দুই দশকের নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের ৭১% এর মৃত্যু হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৩৯ জন নিপা ভাইরাসের আক্রান্ত রোগীর সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৪০ জন মারা গিয়েছে। সাধারণত বাংলাদেশে শীতের মরশুমে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এই সময়ে বিশেষ সতর্ক থাকা উচিত।

শীতের শুরু থেকেই মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। আর এই খেজুরের রস মানুষের পাশাপাশি বাদুরের অন্যতম প্রিয় খাবার। বাদুড় গাছের যে অংশ থেকে রস বার হয় সেখান থেকে সরাসরি খায়। কখনো আবার সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে। মূলত এই বাদুড়ের মুখ দেওয়া খেজুরের রস পান করলেই মানুষের মধ্যে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। খেজুরের রস ছাড়াও শাকসবজি ফলমূলেও বাদুর মলমূত্র ত্যাগ করে এবং বাদুড়ের আংশিক খাওয়া ফলমূল শাকসবজি মানুষ যদি ভালোভাবে না ধুয়ে খেয়ে থাকেন কিংবা রান্না না করে কাঁচা খান তাহলে সেখানে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। আংশিক খাওয়া ফল মানুষ খেলেও নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, নিপা ভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল এই খেজুরের রস একদমই না খাওয়া। যদিও বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রসকে প্রচারের উদ্দেশ্যে নানা উৎসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খাওয়ার আয়োজন করছে। বিশেষজ্ঞরা জানান দূষিত খেজুরের রসের মাধ্যমে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর ১৪ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে নিপা ভাইরাসের রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে লক্ষণ প্রকাশ না হলেও ৪৫ দিন পর্যন্ত রোগীর শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে।

প্রাথমিকভাবে প্রচন্ড জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, মাথা যন্ত্রণা, মাংসপেশীতে ব্যথার মতো উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া মাথা ঘোরা, ঘন ঘন তৃষ্ণা পাওয়া, ঘুম ঘুম ভাব এবং মস্তিষ্কের স্নায়ু ঘটিত নানাবিধ উপসর্গ দেখা দিতে পারে। শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।