Afghanistan: তালিবান মাথা কাটবে, তা বলে কি পড়া থামবে? গোপনে আফগান মেয়েরা পড়ছেন

সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তান (Afghanistan) মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণায় চমক দিয়েছিল। নারী শিক্ষা ছিল বাধ্যতামূলক। পরবর্তী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সময়ে বিদ্যালয় ছিল খোলা।

Afghanistan

সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তান (Afghanistan) মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণায় চমক দিয়েছিল। নারী শিক্ষা ছিল বাধ্যতামূলক। পরবর্তী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সময়ে বিদ্যালয় ছিল খোলা। তালিবান জঙ্গি শাসনে আফগান মহিলাদের অনেকেই মনে করেন সোভিয়েতের অবলুপ্তি ভয়াবহ বিপদ ডেকে এনেছে।

২০২১ সালে দ্বিতীয় দফায় তালিবান জঙ্গিরা আফগানিস্তানের (Afghanistan) ক্ষমতা দখল করে। তার পর থেকেই গোটা দেশ জুড়ে চলছে তালিবানের সন্ত্রাস। বন্ধ স্কুল, নাচ, গান। জারি বহু নিষেধাজ্ঞা। ছেলেদের শিক্ষা চালু হলেও বন্ধ মেয়েদের স্কুল। এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরোতে গোপনে একটি স্কুলে পড়াশোনা চালাচ্ছেন আফগান বহু তরুণী। আবাসিক এলাকায় গোপন এই স্কুলটি ছোট হলেও সাহসী এবং প্রতিবাদী। আফগান কিশোরীদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না তালিবান। তাই তারা গোপনে শিক্ষা নিচ্ছে।

যখন একজন তরুণীকে প্রশ্ন করা হয় যে এর পরিণতি নিয়ে কি আপনি ভীত? তখন ওই তরুণী উত্তর দেয়, অবশ্যই শুরুর সময় আমরা ঝুঁকির কথা জানতাম এবং এই নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কিন্তু শিক্ষার জন্য এই ঝুঁকি নেওয়া যথার্থ। তখন তাকে ফের প্রশ্ন করা হয় যে, কিন্তু এর জন্য যদি তালিবান আপনাকে আটক করে? তিনি উত্তর দেন, আমরা এটা খুবই গোপনে করছি কিন্তু তারা যদি আমাকে আটক করে, মারধর করে তাহলেও আমরা সেই ঝুঁকি নিতে রাজি। অবশ্যই এই ঝুঁকি যথার্থ।

মার্চ মাস পর্যন্ত ধারণা করা হয়েছিল যে তালিবান মেয়েদের স্কুল খুলবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সেই সিদ্ধান্ত বদলায়। এই মেয়েদের মনে পড়তে না যাওয়ার যন্ত্রনা বাড়ছে। একজন তরুণী জানিয়েছেন, আমরা স্কুলে গেলাম কিন্তু বলা হলো মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। দুমাস হয়ে গেল এখনো কোনও খবর নেই আমরা খুবই হতাশ। আফগান মেয়েদের বলতে চাই সাহসী হও, তাহলে কেউ তোমাদের আটকাতে পারবেনা।

ছোট বাচ্চা মেয়েদের এখন স্কুলে যেতে দেওয়া হচ্ছে। তবে কিশোরীদের বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত। তালিবানের দাবি আগে তাদের একটি সঠিক ইসলামিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তালেবান কর্মকর্তারা স্বীকার করেন যে, নারী শিক্ষা তাদের জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয়। কারণ বেশ কয়েকজন কট্টরপন্থী প্রভাবশালী নেতা এর বিরোধী। তবে ব্যক্তিগতভাবে বেশ কিছু তালিবান মেয়েদের স্কুলে না যাওয়ার বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্ট। তালিবানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন ধর্মীয় নেতা প্রকাশ্যে নারীদের শিক্ষার পক্ষে কথা বলেছেন।

পাকিস্তান ভিত্তিক আফগান নেতা, শেখ রহিমুল্লাহ হক্কানিকে তালিবান সরকার বিশেষ গুরুত্ব দেয সম্মান করে। সম্প্রতি কাবুলে এসে তিনি কয়েকজন সিনিয়র তালিবান নেতার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সরাসরি মেয়েদের স্কুল বন্ধ রাখার সমালোচনা করেননি। কিন্তু একটি ফতোয়া জারি করে বলেন, মেয়েরা শিক্ষা নিতে পারে এবং তাদের শিক্ষিত করা উচিত। নারী শিক্ষা শারিয়া বিরোধী একথা অযৌক্তিক, এমন কথার কোনও যুক্তি নেই। সমস্ত ইসলামিক গ্রন্থে নারী শিক্ষা অনুমোদনের কথা রয়েছে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো ইসলামিক সমাজে একজন নারী যদি অসুস্থ হয়। তাহলে একজন নারী ডাক্তারের কাছেই তার চিকিৎসা নেওয়া ভালো।

আফগানিস্তানে সব বয়সের ছেলেরা ক্লাসে ফিরেছে। কিন্তু মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলের কি হবে তা ঠিক করতে তালিবান একটি কমিটি গঠন করেছে। এই গোটা পরিস্থিতিতে কি নারীরা যারা স্কুলে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছেন না তারা রীতিমতো হতাশায় জীবন যাপন করছেন।