TMC: প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় ধর্নায় তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম

এর আগেও নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য করে শিরোনামে উঠে আসেন। এবার প্রশাসনের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসলেন খোদ শাসক দলের বিধায়ক। এই ঘটনার জেরেই ফের…

এর আগেও নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য করে শিরোনামে উঠে আসেন। এবার প্রশাসনের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসলেন খোদ শাসক দলের বিধায়ক। এই ঘটনার জেরেই ফের শিরোনামে ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী।

জানা গিয়েছে, আত্মীয় পাঁচিল তুলে দেওয়ায় বছরের পর বছর বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না রাজবংশী যুবক। পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। এবার তাঁর পাশেই দাঁড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক। ধর্নায় বসে আব্দুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘কোনও প্রতিকার না পেয়ে রাস্তায় বেরতে হয়েছে। হিংসার পথে না গিয়ে, আপনারা আন্দোলনের মাধ্যমে যাবেন।’

তৃণমূলে আব্দুল করিম বেশ কিছুদিন ধরেই বিদ্রোহী নেতা হিসেবে পরিচিত। নানা বিষয়ে তিনি বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এবার প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে, ধর্নায় বসলেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী।

ইসলামপুরের বাসিন্দা, রাজবংশী সম্প্রদায়ের রাজেশ সিং সম্প্রতি অভিযোগ করেন, পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার এক আত্মীয়, দেওয়াল তুলে বাড়িতে ঢোকার রাস্তা আটকে দিয়েছেন। তারপর থেকেই তিনি বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে অন্য জায়গায় ভাড়া থাকছেন।

রাজেশের অভিযোগ, ‘৫ ইঞ্চি ওয়াল করে দিয়েছে আবার ও, মোটামুটি ৫ ফিট। যে ব্যক্তি দেওয়াল করেছে, সে আবার সিভিক ভলেন্টিয়ার। আমার কাকাতো ভাই, বিক্রম সিং। ওঁর পক্ষেই কাজ হচ্ছে, কোনও পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে না। পরশু IC গিয়েছিল ওখানে। IC’র সামনে বলছে, আমরা প্রধানমন্ত্রী এলেও রাস্তা দেব না ওকে, জমি ছাড়ব না।’

এরপর কোনও পথ না পেয়ে এলাকার তৃণমূল বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরীর দ্বারস্থ হন রাজেশ। কিন্তু, তৃণমূল বিধায়কের দাবি, তিনি প্রশাসনের কাছে গিয়ে কোনও সুরাহা পাননি। এরপরই ধর্নায় বসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সোমবার অনুগামীদের নিয়ে ইসলামপুরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে প্রায় ৬ ঘণ্টা ধর্নায় বসেন তিনি।

বিধায়ক জানিয়েছে, ‘আমিও কয়েকবার পুলিশকে বলেছি , শুনছে না। প্রশাসন শুনছে না। কেন প্রশাসন বসে থাকবে? তিন বছর ধরে বাড়ি ছাড়া হয়ে আছে, তার জন্য প্রশাসনের কোনও মাথাব্যথা নেই। আমার সরকার, সবকিছু আমার। কিন্তু সরকারের প্রশাসন বেকার। এরকম প্রশাসন আমার দরকার নেই। DM-কে, SP-কে, IC-কে, OC-কে, সকলকে বলেছি, জেলা প্রশাসনের তরফেও বলেছি। কোনওকিছু নেই।’

ধর্নার বিষয়ে কটাক্ষ করে উত্তর দিনাজপুরের বিজেপির সহ সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘প্রশাসনিক ব্যবস্থা যে ভেঙে পড়েছে, তার প্রমাণ হচ্ছে শাসকদলের সিনিয়র বিধায়ককে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসতে হল। বিধায়ক যেখানে ন্যায় পাচ্ছেন না, সেখানে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা, সেটা ভাবতে হবে। আমি বলব, এখানে না বসে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বসুন।’

এই বিষয়ে উত্তর দিনাজপুর তৃণমূলের সহ সভাপতি অরিন্দম সরকার বলেন, ‘ঘটনাটা যতদূর জানি, একটা পারিবারিক ঘটনা, এখানে শুধু সেন্টিমেন্টাল হলে তো চলে না। আইনের দিক থেকে দেখতে গেলে উভয় পক্ষের বিষয়টি দেখে আইনের পথে মীমাংসা করার দরকার আছে।’