জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পরিকল্পনার প্রতিবাদে শুরু জনমত গঠন

নিজস্ব সংবাদদাতা, জুনপুট: যুদ্ধক্ষমতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্যে কাঁথির জুনপুট সমুদ্র উপকূলকে বেছে নিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও)। এই নিয়ে…

নিজস্ব সংবাদদাতা, জুনপুট: যুদ্ধক্ষমতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্যে কাঁথির জুনপুট সমুদ্র উপকূলকে বেছে নিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও)। এই নিয়ে সমীক্ষার কাজও শেষ হয়েছে ইতিমধ্যে।

ব্লক প্রশাসন ও ভূমি দফতরের পক্ষ থেকে সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে মহকুমা প্রশাসনের কাছে। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য প্রয়োজনীয় লঞ্চিং প্যাড নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তার জন্য ৯ একর জমি দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে।

চলতি মাসের শেষ কিংবা মার্চের শুরুর দিকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের আগে ১ কিলোমিটার রেডিয়াসের মধ্যে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে আসা হবে ৪ ঘন্টার জন্য। গবাদি পশুর ক্ষতির জন্যও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

যুদ্ধক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য জুনপুট থেকে মিসাইল উৎক্ষেপণ করার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক তনবির আফজল। তিনি বলেন, “ওড়িশার বালেশ্বর ও পশ্চিমবঙ্গের জুনপুট উপকূল থেকে দুটি মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হবে। সেগুলি পরস্পরকে আঘাত করে কিভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সেটাই পরীক্ষা করে দেখা হবে৷”

জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে তৈরির পরিকল্পনা অবশ্য বহু পুরোনো। ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক প্রতিনিধি দল জুনপুটে পর্যবেক্ষণে এসেছিলেন। তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপন কেন্দ্র ও তার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে বিশাল এলাকা অধিগ্রহণের পরিকল্পনা। কিন্তু স্থানীয়দের বাধায় সেই সময় তা বন্ধ হয়ে যায়।

এখন আবার নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের তোড়জোড় শুরু হতেই আবারও শঙ্কিত স্থানীয়রা। আবারও প্রচেষ্টার প্রতিবাদে জনমত গঠন শুরু করল ‘ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি’। জুনপুট থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পরিকল্পনার বাতিলের দাবিতে সোসিয়েটির পক্ষ থেকে কাঁথির মহকুমাশাসক সৌভিক ভট্টাচার্যের কাছে ডেপুটেশন পেশ করা হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন সোসাইটির সদস্য তথা কন্টাই সায়েন্স সেন্টারের সদস্য রুম্পা সাউ, অনুপ মাইতি, শশাঙ্ক প্রসাদ তপাদার প্রমুখ।

ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটির জেলা সম্পাদক সুমন্ত সি বলেন, “২০১২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের সাহায্য নিয়ে কাঁথির উপকন্ঠে জুনপুটে মিশাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু কাঁথির শুভবুদ্ধিসম্পন্ন জনসাধারণ ও জুনপুট এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে পড়ে পিছু হটেছিল৷ তবে গোপনে পরিকল্পনা রূপায়ণের চেষ্টা জারি ছিল ৷ কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা খুবই অল্প সময়ের মধ্যে এই মিশাইল উৎক্ষেপন কেন্দ্রের পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করতে চলেছে জুনপুটে ৷ আমরা এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আবারও আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জনসাধারণের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি৷”