Darjeeling-Kalimpong: পাহাড়ি এলাকায় ‘বি এড কিনতে’ কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা লাগত, অভিযোগ নেপথ্যে তৃণমূল

শিক্ষকতার সরকারি চাকরির জন্য দরকারি বি এড ডিগ্রি। অভিযোগ সেই ডিগ্রি পেতে দার্জিলিং ও কালিম্পং (Darjeeling-Kalimpong) জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বেআইনি লেনদেনের পিছনে…

শিক্ষকতার সরকারি চাকরির জন্য দরকারি বি এড ডিগ্রি। অভিযোগ সেই ডিগ্রি পেতে দার্জিলিং ও কালিম্পং (Darjeeling-Kalimpong) জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বেআইনি লেনদেনের পিছনে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা জড়িত।

জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) এলাকায় কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে৷ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দুই পার্বত্য জেলায়। অভিযোগ, শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগ ময়, টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে স্কুলের ভলেন্টিয়ার পদ৷ কেনা হয়েছে বিএড ও ডিএলএডের সার্টিফিকেট৷ টাকার ভাগ কাদের কাছে গেছে? শোনা যাচ্ছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর পাহাড়ের একাধিক নেতাদের নাম জড়াতে চলেছে৷

উত্তরবঙ্গে পার্থ-জাল! অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী কি কিছুই জানতেন না? পড়ুন:

SSC Scam: পার্থ-অর্পিতা সব উগরে দিচ্ছে, ‘উত্তরবঙ্গের নেতাদের’ তালিকা বানাচ্ছে ইডি

২০১৯ সাল থেকে জিটিএর অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন স্কুলে দফায় দফায় শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে নথি প্রকাশ্যে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিকে ১২১, উচ্চপ্রাথমিকে ৫৯ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে ৩১৩ জনের নিয়োগ হয়েছে। ২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ১২১ জন শিক্ষককে নিয়োগপত্র দিয়েছে বলে খবর। ওই বছরের ৮ মার্চ রাজ্য শিক্ষা দফতর থেকে জিটিএ চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠিয়ে উচ্চপ্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের কথা জানানো হয়।

Mamata Banerjeeশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ওই নিয়োগ হয়নি। দফতরের বিশেষ অনুমোদনে শিলিগুড়ি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতরের তত্ত্বাবধানে জিটিএ নিয়োগের কাজ করেছিল। ভলেন্টিয়ার হিসেবে যাঁরা স্কুলগুলিতে আগে থেকেই পড়াতেন তাঁদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয় বলেই জানিয়েছিলেন তৎকালীন জিটিএর আধিকারিকরা।

অভিযোগ, এই ভলেন্টিয়ারদের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। যাদের ভলেন্টিয়ার দেখিয়ে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে তাদের একটা বড় অংশই স্কুলগুলিতে স্বেচ্ছাশ্রম দেননি। তারপরও তাঁরা নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন মোটা টাকার বিনিময়ে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন জিটিএর কর্তারা। বর্তমান জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা ওই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তিনি ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রধান ও তৃণমূল কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাচে কানাচে ভয় কেন ? পড়ুন: 

NBU: মমতা সরকারের আমলে শিক্ষা দফতরে বিপুল দুর্নীতি, গোয়েন্দা নজরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

মাধ্যমিক বা উচ্চপ্রাথমিকে শিক্ষকতার জন্য বিএড এবং প্রাথমিকে শিক্ষকতার জন্য ডিএলএড প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। অভিযোগ, মমতা সরকারের আমলে ২০১৯ সালে যাঁরা জিটিএ এলাকায় নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তাদেপ বেশিরভাগের প্রশিক্ষণ ছিল না। রাতারাতি তাঁরা প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট জোগাড় করলেন কীভাবে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ।

অভিযোগ, তৃ়ণমূল ঘনিষ্ঠ একটি চক্র সেই সময় লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি প্রার্থীদের সার্টিফিকেট জোগাড় করে দিয়েছিল। এই সার্টিফিকেট বিক্রির কারবারে দার্জিলিংয়ের এক প্রভাবশালী নেতার ছেলের নাম সরাসরি জড়িয়েছে। পাহাড়ের শিক্ষা সংক্রান্ত প্রায় সব কাজেই ওই নেতা ও তাঁর ছেলের প্রভাবের কথা সামনে এসেছে। ওই নেতার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ে যথেষ্ট সখ্যতা রয়েছে বলেও খবর৷

শিলিগুড়ি হয়ে কোনপথে টাকা আসত কলকাতায়? সূত্র খু়ঁজছে ইডি। পড়ুন: 

চাকরি দুর্নীতিতে উত্তাল পাহাড়, ‘এজেন্ট মারফত টাকা আসত কলকাতায়’

অভিযোগ, পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন দুই লক্ষ টাকায় ডিএলএড এবং তিন লক্ষ টাকায় বিএড সার্টিফিকেট বিক্রি হয়েছে। ভলান্টিয়ার টিচারের তালিকায় নাম ওঠাতে দর উঠেছিল দশ লক্ষ টাকা।

কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ইতিমধ্যে পাহাড়ের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, অর্থের বিনিময়ে বেআইনিভাবে যে পাহাড়ে নিয়োগ হয়েছে সেটা এখন জলের মতো স্পষ্ট। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ে আমলেই নিয়োগগুলি হয়েছিল। প্রতিটি নিয়োগ নিয়ে তদন্ত হোক। যেসব সার্টিফিকেট জমা দিয়ে প্রার্থীরা চাকরি পেয়েছেন সেগুলি নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে যাচাই করে দেখা হোক।