বাংলার উত্তর থেকে দক্ষিণ, ‘দলবদলু’ প্রার্থীদেরই রমরমা। ভোটাররা আস্থা রাখল ‘দলবদলু’ কৃষ্ণ কল্যাণী থেকে মকুটমণি অধিকারীর উপরই। রায়গঞ্জ ও রানাঘাট দক্ষিণ- এই দুই কেন্দ্রেই জিতেছেন ‘দলবদলু’ দুই তৃণমূল প্রার্থী। বাগদা জিতেছেন মধুপর্ণা ঠাকুর। ঠাকুরবাড়ির এই মেয়েকে ভোটের ময়দানে পথ দেখিয়েছেন বাগদার আরেক ‘দলবদলু’ প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে রায়গঞ্জ বিধানসভা থেকেই বিজেপির হয়ে জিতেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। সেবার প্রায় তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল প্রায় ২১ হাজার ভোট। মাঝপথে দল বদলে পদ্ম ছেড়ে ঘাস-ফুলে যান কৃষ্ণ। গত লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জ কেন্দ্র এই কৃষ্ণ কল্যাণীকেই প্রার্থী করে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু হেরে যান তিনি। কৃষ্ণ লোকসভার প্রার্থী হওয়ার আগে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। ফলে ওই বিধানসভায় ফের উপনির্বাচনের প্রয়োজন হয়।
এবারও কৃষ্ণের উপরই ভরসা রাখেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতেই ম্যাজিক। উপনির্বাচনে কৃষ্ণের জয়ের মার্জিন ডবলেরও বেশি। গত লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জ আসনে ৪৭ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। উপনির্বাচনে কৃষ্ণ কল্যাণী জিতলেন ৪৯,৫৩৬ ভোটে।
রানাঘাট দক্ষিণ আসনে ৩৮,৬১৬ ভোটে জয় পেলেন তৃণমূলের প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী। একুশের ভোটে বিজেপির হয়ে জিতেছিলেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে মুকুটমণিও তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। কৃষ্ণের মত মুকুটমণিতেই ভরসা রাখেন নেত্রী। মতুয়া অধ্যুষিত রানাঘাট লোকসভায় তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল। লোকসভার নিরিখে রামাঘাট দক্ষিণে ৩৬ হাজারেরও বেশি পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। কিন্তু, রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভায় ফের তাঁকে প্রার্থী করে রাজ্যের শাসক শিবির। আর তাতেই বাজিমাত মুকুটমণির।
লোকসভা ভোটের মাঝপথে কেঁদেছিলেন, মানিকতলা জিতিয়ে ‘চাণক্য’ সেই কুণালই
বাগদায় বিশ্বজিৎ দাস জিতেছিলেন তৃণমূলের হয়ে। একুশের বিধানসভায় সেই বিশ্বজিৎই ওই কেন্দ্র থেকে জেতেন পদ্ম প্রতীকে। পরে, ফের তিনি তৃণমূলে ফেরেন। লোকসভা ভোটে বনগাঁ কেন্দ্রে মতুয়া নেতা বিশ্বজিৎ দাসকে পার্থী করে তৃণমূল। তিনিও পরাজিত। লোকসভার নিরিখে এই বিধানসভা কেন্দ্রে ২০ হাজারেরও বেশি ভোটে হারে তৃণমূল।
উপনির্বাচনে প্রার্তী বদলায় শাসক দল। মতুয়া ভোটকে পাখির চোখ করে ঠাকুর পরিবারের মেয়ে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা টাকুরের কন্যা মধুপর্ণাকে ময়দানে নামায় তৃণমূল। তাঁকে জেতানোর জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বজিৎকেই। এই জুটিতে আস্থা দেখিয়েছেন বাগদার ভোটাররা। গেরুয়া সরিয়ে আকাশে উড়ল সবুজ আবির।
বাংলার চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনেই জিতল তৃণমূল। ধরাশায়ী বিজেপি। বাম-কংগ্রেস জোট সেই শূন্যেই।