Hooghly: পঞ্চায়েত অফিস থেকে কুকুরের ফোন! তারপর অবাক করা কান্ড

শুধু মানুষই যে বুদ্ধিমত্তায় শ্রেষ্ঠ প্রাণী তা বোধহয় নয়। কুকুরও জানে কীভাবে নিজেকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে হবে। কীভাবে? বন্ধ পঞ্চায়েত অফিসে আটকে পড়ে গিয়ে…

শুধু মানুষই যে বুদ্ধিমত্তায় শ্রেষ্ঠ প্রাণী তা বোধহয় নয়। কুকুরও জানে কীভাবে নিজেকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে হবে। কীভাবে? বন্ধ পঞ্চায়েত অফিসে আটকে পড়ে গিয়ে হার না মেনে কুকুরটি ফোন ডায়েল করে ফেলল তা নিয়ে কৌতুহল তীব্র। এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির গুপ্তিপাড়ায়।

অসময়ে বন্ধ পঞ্চায়েত থেকে হঠাৎ ফোন! খানিকটা অবাক হলেন পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান। কিন্তু ফোনে কারুর গলা পেলেন না। তবে কিছুক্ষণ পর সেই ফোনে পাওয়া গেল কুকুরের শব্দ। ঘটনাটি গুপ্তিপাড়ায় ১ নম্বর পঞ্চায়েতের।

   

জানা গিয়েছে শনিবার পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করে সকলে বাড়ি চলে যান। এরপর সন্ধ্যা ৬:৩৭ নাগাদ হঠাৎ করে গুপ্তিপাড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগের ফোনে কল আসে। তিনি দেখেন ফোনটি এসেছে পঞ্চায়েত অফিস থেকে। ফোন রিসিভ করলেও অপর প্রান্ত থেকে কোন আওয়াজ শুনতে পান না তিনি। প্রায় ৩০ সেকেন্ড পরে হঠাৎ করে তিনি কুকুরের কান্নার আওয়াজ পান।

ফোনে কুকুরের আর্তনাদ শুনেই বিশ্বজিৎ বাবু বুঝতে পারেন ঘটনাটি কী ঘটেছে। তৎক্ষণাৎ বিশ্বজিৎ বাবু লোকজন ডেকে পঞ্চায়েত অফিসের কর্মীর কাছ থেকে অফিসের চাবি নিয়ে চলে আসেন অফিসে। দরজা খুলে দেখেন সত্যি সত্যি একটি কুকুর পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে আটকে পড়েছে। কুকুরটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

ঘটনা সম্পর্কে গুপ্তিপাড়ায় ১ নম্বর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, “গতকাল সন্ধ্যা ৬:৩৭ নাগাদ আমার কাছে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে ফোন আসে। এবার সেই ফোনটাই আমি বেশ কিছুক্ষণ হ্যালো-হ্যালো করি। বেশ কিছুক্ষণ হ্যালো করার পর দেখি কেউ আওয়াজ করছেনা। আমি বুঝতে পারি পঞ্চায়েত অফিসে কেউ একটা ঢুকেছে। হঠাৎ করে আমি যখন আবার একবার হ্যালো বললাম, দেখি কুকুরটা কাঁদছে, আওয়াজ আসছে। বুঝতে পারলাম যে আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে একটা কুকুর আটকে পড়েছে।“

বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, “আমাদের পঞ্চায়েত অফিসে ১১ টা কুকুর আছে এবং তারা প্রত্যেকদিন ঘরের মধ্যে থাকে, ও কোনওভাবে আটকে যায়।“কুকুরের ফোন সম্পর্কে বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, “আমাদের যে ল্যান্ডলাইন ফোন আছে, ওই ল্যান্ডলাইনে হটলাইন নম্বর করা আছে। এবং সেখানে ও হয়তো ওটা কোনও কারণে পায়ের চাপে ও টিপে দিয়েছে। কলটা আমার কাছে চলে এসছে। কল আসার পর আমরা মিনিট ১০-১৫ বাদ গিয়ে ওকে রেস্কিউ করি। কিন্তু আশ্চর্য হয়ে গেলাম যে ও ফোনটা করল কীকরে। “

বিশ্বজিৎ নাগ আরও বলেন, “ও আমাদেরকে প্রতিদিন ফলো করে তো, এতগুলো কুকুর থাকে। হয়তো আমাদেরকে ফলো করে ও ভেবেছে এবং এরকম একটা কিছু কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছে।“ পঞ্চায়েত সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১১ টি কুকুর থাকে। সেই কুকুরগুলোর মধ্যেই এই কুকুরটি হয়তো খেয়াল করেছিল মানুষের ব্যবহৃত জিনিসপত্র।

বিশ্বজিৎ বাবু জানান যে ফোনটি অক্ষত অবস্তাতেই ছিল কুকুরটিকে উদ্ধার করার পর। ঠিক যেভাবে একজন মানুষ ফোনের কথা বলার পর রিসিভারটা রেখে দেন, ঠিক সেইভাবেই ছিল বলে দাবি করেন বিশ্বজিৎ নাগ। কুকুরটিকে উদ্ধার করে বেশ স্বস্তি পেয়েছেন উদ্ধারকারী সকলেই। তবে কুকুরের এহেন বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেখে অবাক হয়ে যান উপস্থিত সকলেই। পঞ্চায়েত অফিস থেকে কীভাবে ফোন করল উপপ্রধানকে এবং কীভাবে ফোন চলে গেল, সবটাই অবাক করার বিষয়।