CPIM: দলে রাশ শক্ত, ঢোঁক গিলে সূর্যকান্ত দেখলেন সুশান্ত ঘোষের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা

বিধাননসভা ভোটের আগে বিপুল সাড়া জাগিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ঢুকেছিলেন সুশান্ত ঘোষ। ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর চন্দ্রকোনা টাউনে টানা ৯ বছর পর সুশান্ত ঘোষের প্রত্যাবর্তন…

susanta ghosh

বিধাননসভা ভোটের আগে বিপুল সাড়া জাগিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ঢুকেছিলেন সুশান্ত ঘোষ। ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর চন্দ্রকোনা টাউনে টানা ৯ বছর পর সুশান্ত ঘোষের প্রত্যাবর্তন ছিল তীব্র রাজনৈতিক আলোড়ন ফেলে দেওয়া ঘটনা। তাৎপর্যপূর্ণ, সেদিন যারা ছিলেন না তারাই বৃহস্পতিবার দেখলেন, দলে (CPIM) কীভাবে ফের রাশ শক্ত করে নিলেন ‘দাপুটে’ সুশান্ত।

সিপিআইএম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হলেন সুশান্ত ঘোষ। দলীয় রাজনীতিতে তাঁর ‘বিরোধী’ বলে পরিচিত রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের সামনেই জেলায় দল চালানোর ক্ষমতা পেলেন সুশান্ত ঘোষ।

বাম জমানার ৩৪ বছরের মধ্যে ৩২ বছরের মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ তীব্র বিতর্কিত। তৎকালীন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর ‘চক্ষুশূল’ ছিলেন। তবে দলীয় রাজনীতিতে বিশেষত যুব সংগঠনে সুশান্তবাবুর জনপ্রিয়তা কেমন তা ব্রিগেড মিটিংয়ে সামনে থেকেই হজম করতে হয় বুদ্ধবাবুকে।

https://video.incrementxserv.com/vast?vzId=IXV533296VEH1EC0&cb=100&pageurl=https://kolkata24x7.in&width=300&height=400

susanta ghosh

বরাবর জ্যোতি বসুর ‘স্নেহাশিষ’ পাওয়া সুশান্ত ঘোষ তাঁর রাজনৈতিক জীবন নিয়ে বই ‘বামফ্রন্ট জমানার শেষ দশ বছর’-এ বিভিন্ন বিতর্কিত প্রসঙ্গের অবতারণা করে দল থেকে সাসপেন্ড হন। পরে সমর্থকদের চাপে পড়েন সূর্যকান্ত-বিমান বসুরা। সাসপেনশন তোলা হয়। সেই অবাধ্য সুশান্ত এখন পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে সিপিআইএমকে পরিচালনা করবেন।

সুশান্ত ঘোষের নামের সঙ্গে বিতর্ক ও জোশ রাজনীতি জড়িয়ে। বাম জমানার পতন বছরেও গড়বেতা থেকে জয়ী হয়েছিলেন। তবে জড়িয়েছিলেন বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ডে। জেল যাওয়া, তদন্তের মুখোমুখি হওয়া, জেল থেকে বের হওয়া, জেলায় ঢুকতে না পারার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আইনি পথ ধরে সবকিছু আদায় করেন।

নেতাই গণহত্যা কাণ্ডেও অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী। তবে বেনাচাপড়া বা নেতাই এখনও পর্যন্ত কোনও মামলাতেই বুদ্ধবাবুর ‘চক্ষুশূল’, জ্যোতি বসুর ‘স্নেহধন্য’ সুশান্ত ঘোষ দোষী প্রমাণিত হননি।

বিধানসভা ভোটে নেমে সুশান্ত ঘোষ আলোড়ন ফেলেছিলেন। তিনি জেলায় আসছেন খবরে, ধুঁকতে থাকা সিপিআইএম চাঙ্গা হয়েছিল। তৎকালীন কৃষক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বনধের বিস্তর প্রভাব পড়েছিল জঙ্গলমহলের অন্তর্গত ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার অংশে। নির্বাচনে নেমে পড়লেও পরাজিত হন তিনি।

সাম্প্রতিক পুরনিগম ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে বিরোধী দল বিজেপির শক্তি দ্রুত হারে শেষের দিকে। বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে আসছে সিপিআইএম। মনে করা হচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সুশান্ত ঘোষের মতো দাপুটে নেতাকে সাংগঠনিক ভার দিয়ে নিজেদের আরও গুছিয়ে নিতে শুরু করল সিপিআইএম।

চর্চার বিষয় আরও একটি, পদাধিকার বলে আসন্ন সিপিআইএম রাজ্য সম্মেলনে সুশান্ত ঘোষ থাকবেন। দলীয় যে সব দূর্বলতার বিষয়ে বোমা ফাটিয়েছিলেন তার চেয়েও বড় বিস্ফোরণ ঘটাতে চলেছেন তিনি। দলেই ফিসফাস অকার্যকর নরমপন্থী বুদ্ধশিবিরের ঘুম উড়ল!