নিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফোন করে আশ্বাস দিলেও তাতে মন নরম হলো না হবু শিক্ষক আন্দোলনকারীদের। তারা চান সরকারি নিয়োগপত্র। ফলে বিতর্ক আরও বাড়ল। আন্দোলনের সময়সীমা ৪০০ দিন পার করেছে। তবুও সরকারের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে আন্দোলন জারি রেখেছেন হবু শিক্ষকরা। মঙ্গলবার ঈদের দিনে রেড রোডে সরকারি অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) ফোন করে আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দিলেন।
রেড রোডে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠানের অনতিদুরে অন্যান্য দিনের মতো এদিনেও বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। সেখানেই ফোন যায় মুখ্যমন্ত্রীর। নিজেই নিয়োগের বিষয়টি দেখবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন চাকরী প্রার্থীদের।
আন্দোলনকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, এদিন সকালে ডিসি সাউথ আকাশ বাগারিয়ার ফোন মারফত কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী হবু শিক্ষকদের প্রতি আশ্বাস জানিয়েছে। তিনি বলেন, তোমাদের বিষয়টা আমি নিজেই দেখছি। নিয়োগের ব্যবস্থা করছি। এবিষয়ে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে এত সহজে আন্দোলনস্থল ছেড়ে যেতে নারাজ হবু শিক্ষকরা। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আশার আলো দেখছেন। তবে নোটিশ না পাওয়া অবধি আতঙ্কে থাকব। জানিয়েছেন ধর্নামঞ্চ থেকেই নিয়োগের নোটিশ নিয়ে যেতে চান তাঁরা।
হবু শিক্ষকদের বক্তব্য,প্রথম দফায় ডাক পেলেও স্কুল সার্ভিস কমিশন নম্বর ভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করেনি৷ ১:১.৪ অনুপাতে নিয়োগের গেজেটকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। মেধাতালিকায় সামনের দিকে নাম থাকলেও নিয়োগ পাননি বহু প্রার্থী। বরং তালিকায় নাম জুড়েছে মেধা তালিকায় পিছনে থাকা প্রার্থীদের৷ অভিযোগ, অবৈধভাবে নিয়োগ করা হয়েছে।
এই অভিযোগে২০১৯ সালের মার্চ মাসে প্রেস ক্লাবের সামনে ২৯ দিন ধরে অনশন কর্মসুচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন হবু শিক্ষকরা। সেখানে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগ, ২০১৯ এর নির্বাচনের পরেই নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
সেই অভিযোগ তুলে বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের তিন বার বৃহত্তম অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন করতে হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে প্রেসক্লাবের সামনে ২৯ দিনের অনশন, ২০২১সালের জানুয়ারি থেকে সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের সামনে ১৮৭ দিনের অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন। এরপর গত বছরের ৮ ই অক্টোবর থেকে ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্ণা। মোট ৩ দফায় ৪১০ দিনে পড়ল হবু শিক্ষকদের আন্দোলন।