Bangladesh: এপার বাংলার মন্ত্রী ‘বন্ধু’, প্রভাবশালী মদতে আধারকার্ড হয় ওপারের পি কে’র

বাংলাদেশে (Bangladesh) সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা পলাতক আসামী পি কে হালদার ভারতে ধৃত। তাকে জেরা করে মিলছে ‘বিস্ফোরক তথ্য’। পশ্চিমবঙ্গের এক মন্ত্রী…

Bangladesh p k haldar scam investigation in kolkata

বাংলাদেশে (Bangladesh) সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা পলাতক আসামী পি কে হালদার ভারতে ধৃত। তাকে জেরা করে মিলছে ‘বিস্ফোরক তথ্য’। পশ্চিমবঙ্গের এক মন্ত্রী তার বন্ধু। সেই সূত্রে নিজেকে বেআইনিভাবে ভারতীয় বানিয়ে নেয় পি কে।

বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের প্রাক্তন এম ডি পি কে হালদার জালিয়াতি করে ভারতীয় পরিচয় নেয়। আর্থিক জালিয়াতির মামলায় জড়িয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঘাপটি মারা পি কে হালদারের ভারতীয় নাম শিবশংকর হালদার!

জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার)। বরিশালের পিরোজপুরের বাসিন্দা। পিতার নাম প্রণবেন্দু হালদার। এই ব্যক্তিই আবার ভারতীয় পরিচয়ে শিবশংকর হালদার হয়েছেন! তিনি থাকেন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগরে।

কেমন করে এমন সম্ভব। ইডি তদন্তে উঠে এসেছে, বাংলাদেশ থেকে পালানোর পর পি কে হালদার বিপুল অর্থ খরচ করেন। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীর সঙ্গে তার বন্ধুত্বের সম্পর্ক।

বাংলাদেশি পি কে হালদার কে ভারতীয় হতে সাহায্য করা কে এই রাঘববোয়াল? এই নাম দুদক ও ইডি এখনও স্পষ্ট করেনি। তবে ভারতের ইডি অফিসাররা ইঙ্গিত দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ আছেন যিনি বাংলাদেশি পি কে হালদারের ‘বন্ধু’। তিনিই গোপনে পি কে হালদারের বাংলাদেশি পরিচয় পাল্টে ভারতীয় হতে সবরকম সাহায্য করেছিলেন। এর জন্য বিপুল পরিমান টাকা নেন সেই বন্ধু।

বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র বলছে, ভারতে ইডি জেরায় এমন কয়েকজনের নাম বলেছেন পি কে হালদার যা শুনে তদন্তকারীদের চোখ কপালে!

দুদক পি কে হালদারের বিষয়ে তথ্য দিয়েছিল ভারতের আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্ত সংস্থাকে। সেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) জালে পড়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ লেনদেনের কথা উগরে দিচ্ছেন ইন্টারপোল রেড কর্নার নোটিশের আওতায় থাকা পি কে হালদার।

ই ডি জানিয়েছে বাংলাদেশি পি কে হালদারকে ভারতে আত্মগোপন করতে সাহায্য এবং মুদ্রা পাচারে প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সহযোগিতার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নাম উঠে এসেছে।

পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর থেকে ধরা পড়ার পর রবিবার পি কে হালদারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে কলকাতার নগর দায়রা আদালত। এর ফলে তাকে রিমান্ড হেফাজতে পেয়েছে ইডি। তাকে জেরা করতে চলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।

গত শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের অন্তত নয়টি স্থানে একযোগে অভিযান চালায় ইডি। অভিজাত বাড়ি সহ পি কের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। বাড়িগুলো থেকে জমির দলিলসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে পি কে হালদারের ২০ থেকে ২২টি বাড়ি আছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।

পি কে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধা। তাকে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন গ্রেফতার করেছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন একসাথে থাকত পি কে হালদার ও সুকুমার। অশোকনগর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সুকুমার মৃধার বিশাল বাড়ির সন্ধান পেয়েছে ইডি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সুকুমারকে তারা মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে চিনতেন। পি কে হালদার ও সুকুমার মৃধা অশোকনগরে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী। ইডি ধারণা করছে, দীর্ঘদিন ধরে এই দুজনের যোগসাজশে বাংলাদেশ থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করে ভারতে পাচার করেছে।