Rampurhat Files: গামছায় মুখ ঢেকে আনারুল বলল ‘সব ষড়যন্ত্র সিবিআইকে বলব’

চিটচিটে গরম পড়তে শুরু করেছে। বীরভূমের মাটিতে গরম আরও বেশি। পুলিশ ভ্যানের মধ্যে এতজন বসে আরও ভ্যাপসানি পরিস্থিতি। এর মাঝে ভ্যানের ঘুলঘুলি দিয়ে দেখা গেল…

চিটচিটে গরম পড়তে শুরু করেছে। বীরভূমের মাটিতে গরম আরও বেশি। পুলিশ ভ্যানের মধ্যে এতজন বসে আরও ভ্যাপসানি পরিস্থিতি। এর মাঝে ভ্যানের ঘুলঘুলি দিয়ে দেখা গেল বগটুই গ্রাম গণহত্যার অন্যতম অভিযুক্ত (Rampurhat Files) স্থানীয় টিএমসি নেতা আনারুল হোসেনকে।
কী বলবেন?

সব ষড়যন্ত্র, সব ষড়যন্ত্র। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। সিবিআইকে সব বলব। গামছায় মুখ ঢেকে রাখা আনারুল হোসেন এরপর চুপ। পাশে বসে থাকা পুলিশের রক্ষীদের শুকনো মুখ। এ ওর দিকে চাইছে।

   

রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে গত সোমবার গণহত্যা সংঘটিত হয়। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করার পর গ্রামে পরপর কয়েকটি বাড়িতে হামলা হয়। ফরেন্সিক তদন্তে উঠে এসেছে, কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করে তারপর মৃতদেহগুলিতে পেট্রোল ঢেলে পোড়ানো হয়।

বগটুই গ্রামে শিশু মহিলা সহ দশ জন সংখ্যালঘু খুন হয়েছেন (সরকারি হিসেবে ৮ জন)। পশ্চিমবঙ্গে গত পাঁচ দশকে এত বড় সংখ্যালঘু গণহত্যা হয়নি। মৃতরা টিএমসি সমর্থক। হামলাকারীরা তৃণমূলেরই। প্রাথমিক তদন্তে স্পষ্ট বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে এই গণহত্যা হয়েছে।

নিহতদের আত্মীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ও ঘটনাস্থল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরপরই পুলিশ তৎপরতা দেখিয়ে আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করে তারাপীঠের হোটেল থেকে। অভিযোগ, তার নেতৃত্বে হামলা হয়েছিল বগটুই গ্রামে।তবে আনারুলের দাবি, তৃণমূল দলনেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর আত্মসমর্পণ করেছি। এখানেও প্রশ্ন, ঘটনার পর থেকে বারবার সংবাদ মাধ্যমে আনারুল তার বক্তব্যে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। তখন পুলিশ তাকে ধরেনি। অথচ গ্রামবাসীরা বলেছিল আনারুলের নির্দেশে খুন ও আগুন ধরানোর সময় পুলিশকে ছিল নিষ্ক্রিয়।

রাজ্য সরকার বলেছে বগটুই গ্রামের গণহত্যায় ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত স্থানীয় টিএমসি নেতা (প্রাক্তন ব্লক সভাপতি) আনারুল হোসেন এবার দাবি করল, সব ষড়যন্ত্র। ঘটনার সময় এবং ঘটনার পরে বাড়িতেই ছিলাম। পুলিশ ডাকতে আমার কাছে কোনও ফোন আসেনি। সহযোগিতা করব সিবিআই তদন্তে।

সিবিআই জেরার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আনারুল হোসেনকে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করেন। এর মাঝে আনারুল সিবিআইকে সহযোগিতার বার্তা দেয়।

সূত্রের খবর, বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে আনারুল হোসেনের দূরত্ব বাড়ছিল। তেমনই দূরত্ব তৈরি হয়েছিল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখের সঙ্গে। ভাদু খুন হওয়ার পিছনে আনারুলের তার কোনও হাত আছে নাকি তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রামপুরহাট থেকে বালি ও পাথর চোরাচালানে স্থানীয় টিএমসি নেতা কর্মীর জড়িত তা স্পষ্ট হয়েছে। অভিযোগ, বগটুই গ্রামের ভাদু শেখের সঙ্গে চোরাচালানের বখরা নিয়ে গোষ্ঠী দেখা দিয়েছিল অন্যান্য নেতাদের। যার যেরে খুন হয় ভাদু। সেই জের ধরে গণহত্যা। গোটা ঘটনায় জেলা টিএমসি সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বগটুই গ্রামের গণহত্যাকে শর্টশার্কিট বলে প্রচার করেছিলেন তিনি।