ইউক্রেনের বিরুদ্ধে প্রথম পর্যায়ের সামরিক অভিযান (Ukraine War) প্রায় শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যেই পূরণ হয়েছে অধিকাংশ লক্ষ্য। একমাস যুদ্ধ করার পর দাবি করল রাশিয়া। মস্কোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার তারা ডনবাস অঞ্চলকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করার লক্ষ্যে লড়াই শুরু করবে।
ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে এদিন সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রেজনিকভ ওলেস্কি এবং বিদেশমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবার সঙ্গে বৈঠকে করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশর হোটেল ম্যারিয়টে এই বৈঠক হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার এক মাস পর এই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের কোনও শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসলেন। বাইডেন ছাড়াও আমেরিকার তরফে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেদেশের বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং প্রতিরক্ষা সচিব লিওড অস্টিন।
আন্তর্জাতিক মহলে এই বৈঠক বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা এই বৈঠকের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, তাঁরা দেশের চলতি রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রেজনিকভ বলেছেন, এই বৈঠকে দেশের চলতি পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা বাইডেনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। বাইডেন তাঁদের সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আমেরিকার পক্ষ থেকে এই বৈঠক নিয়ে কোনও কথা জানানো হয়নি।
এক মাস যুদ্ধ চালানোর পরেও রাজধানী কিয়েভ এখনও অধরা। মারিউপোল, খারকিভের মত একাধিক শহরে মুহুর্মুহু হামলা চালিয়েও রুশ সেনা সম্পূর্ণ দখল করে উঠতে পারেনি।
রুশ সেনা কমান্ডার সের্গেই রুডস্কোই এদিন জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রায় ভেঙে গিয়েছে। ফলে এবার তাঁরা সহজেই ডনবাসকে স্বাধীন করার লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন। একইসঙ্গে হুমকি দিয়েছেন, ন্যাটো যদি ইউক্রেনের আকাশ পথ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সেক্ষেত্রে তারা সে দেশের একাধিক শহরে আরও জোরদার হামলা চালাবে।
রাশিয়া আজ স্বীকার করেছে চলতি যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত সাত শীর্ষ সেনাকর্তা-সহ ১৩০০ সেনার মৃত্যু হয়েছে। যদিও পশ্চিমি দুনিয়া মনে করছে, রুশ সোনার প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। এমনকী, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর যে সমস্ত শাখাকে মোতায়েন করা হয়েছিল তার মধ্যে অনেকগুলিই আর যুদ্ধ করার মতো অবস্থায় নেই। মানসিক ও শারীরিকভাবে তারা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।
অন্যদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আমেরিকার কাছে প্রতিদিন ৫০০ জ্যাভলিন ও স্টিংগার মিসাইল পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলির কাছেও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক আদালত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেনকে এই যুদ্ধ বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে। যদিও তাতে আখেরে কোনও লাভ হয়নি। পুতিনের বাহিনী ইউক্রেনের উপর নির্বিচারে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ৪০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়ে শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।